২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

চাল আদার দাম বেড়েছে কমেছে পেঁয়াজ-মুরগির

চাল আদার দাম বেড়েছে কমেছে পেঁয়াজ-মুরগির - ছবি : সংগৃহীত

ঈদের ছুটিতে সরবরাহ ঘাটতির অজুহাতে ঢাকায় চালের দাম কিছুটা বেড়ে গেছে। তবে উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে আদার দাম। চালের দাম কেজিতে এক থেকে দুই টাকা বাড়লেও আদা বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা বাড়তি দরে। ডিমের দামও আবার বাড়ছে বলে জানান বিক্রেতারা। এ সময় দাম কমেছে পেঁয়াজ, কাঁচামরিচ এবং ব্রয়লার মুরগির। গতকাল রাজধানী ঢাকার কয়েকটি পাইকারি ও খুচরা বাজার ঘুরে এ চিত্র পাওয়া গেছে।
বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, নতুন অর্থবছরের বাজেটে আমদানি শুল্ক ২৮ শতাংশ পুনর্বহাল করায় বাজারে চালের দাম আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে যায়। সেসময় এক লাফে কেজিতে বেড়ে যায় ৫ থেকে ৮ টাকা। এরপর মাসখানেক থাকে ওই দাম। ব্যবসায়ীরা জানান, প্রজ্ঞাপন জারির পূর্বেই প্রচুর পরিমাণে চাল আমদানি হওয়ায় এবং দেশীয় চালের পর্যাপ্ত মজুদ থাকায় গত কয়েক সপ্তাহ ধরে চালের দাম অপরিবর্তিত ছিল। গত সপ্তাহে পুনরায় নড়েচড়ে ওঠে চালের দাম। খুচরা পর্যায়ে এক থেকে দুই টাকা বেড়ে যায় সবধরনের চালের দাম।

খুচরা বাজারে গতকাল প্রতি কেজি নাজিরশাইল ৫৮ থেকে ৬২ টাকা, মিনিকেট ৬৫ থেকে ৬৮ টাকা, পাইজাম ৪৮ থেকে ৫২ টাকা এবং মোটা চাল ৪০ থেকে ৪৪ টাকায় বিক্রি হয়। ঈদের আগে ও পরের দিনগুলোয় এ দাম এক থেকে দুই টাকা কম ছিল বলে জানান ক্রেতা-বিক্রেতারা। ব্যবসায়ীদের দাবি, ঈদের আগে ও পরে ট্রাকযোগে চাল পরিবহনে নিষেধাজ্ঞা থাকায় সরবরাহ ব্যবস্থায় কিছুটা ঘাটতির সৃষ্টি হয়েছে। এটিই দাম বৃদ্ধির বড় কারণ। সরবরাহ স্বাভাবিক হলে দাম পুনরায় কমে আসবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তারা।

এ দিকে এক সপ্তাহের ব্যবধানে খুচরা বাজারে প্রতি কেজি আদার দাম বেড়েছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা। ঈদের আগে বাড়তি চাহিদার সময়ও যে আদা ১০০ থেকে ১১০ টাকা কেজিদরে বিক্রি হয়েছিল গতকাল সে আদা বিক্রি হয় ১৪০ থেকে ১৫০ টাকায়। বিক্রেতারা জানান, বাজারে এখন বেশি বিক্রি হচ্ছে চীনা ও মিয়ানমারের আদা। চীনা আদার চেয়ে মিয়ানমারের আদার দাম কিছুটা কম। ভালো মানের মিয়ানমারের আদার খুচরা দর প্রতি কেজি ১২০ থেকে ১৩০ টাকা। তবে সাধারণ মানের চীনা আদা ১৩০ টাকা ও মিয়ানমারের আদা ১১০ টাকা কেজিতেও মিলছে।

ব্যবসায়ীরা জানান, ঈদের পরে চাহিদা কিছুটা কম থাকায় পেঁয়াজের দাম কিছুটা কমেছে। ৫৫ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হওয়া দেশী পেঁয়াজ এখন পাওয়া যাচ্ছে ৫০ থেকে ৫৫ টাকায়। আর আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজ ৪০ টাকা থেকে কমে বিক্রি হচ্ছে ৩৫ টাকায়। চাহিদা কম থাকা এবং ভারতে পেঁয়াজের দাম কিছুটা কম থাকায় দেশীয় পেঁয়াজের দাম কমছে বলে জানান বিক্রেতারা।
এ দিকে ব্রয়লার মুরগির দাম কমার পেছনে কারণ হিসেবে ঈদ কাজ করছে বলে জানান বিক্রেতারা। মালিবাগ সুপার মার্কেটের মুরগি বিক্রেতা শফিক জানান, কোরবানির ঈদের পরে প্রতি বছরই মুরগির দাম কমে। কারণ এ সময় চাহিদা কম থাকে কিন্তু ফার্মগুলোয় মুরগি বড় হয় অন্যান্য সময়ের মতোই। বাজারে গতকাল প্রতি কেজি লেয়ার মুরগি ১৩০ থেকে ১৪০ টাকায় বিক্রি হয় বলে জানান তিনি। এ ছাড়া প্রতি হালি পাকিস্তানি জাতের মুরগি বিক্রি হয় ৬০০ থেকে ৯০০ টাকা দরে।

বাজার ঘুরে দেখা যায়, বেশির ভাগ বাজারেই সবজির সরবরাহ স্বাভাবিক রয়েছে। পটোল, ঝিঙা, ধুন্দল, চিচিংগা, বেগুন, কাঁকরোল, ঢেঁড়স, মিষ্টি কুমড়া, পেঁপে, করলাসহ প্রায় সব সবজিই বাজারে যথেষ্ট পরিমাণে আছে। দাম রাখা হচ্ছে ৪০ থেকে ৬০ টাকার মধ্যে। খুচরা বাজারে গতকাল প্রতি কেজি দেশী টমেটো ৮০ থেকে ১০০ টাকা এবং ভারত থেকে আমদানিকৃত টমেটো ৬০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হয়। কোল্ড স্টোরেজে রাখা দেশী গাজর ৬০ থেকে ৭০ টাকায় পাওয়া গেলেও চীন থেকে আমদানিকৃত দৃষ্টিনন্দন গাজর বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকা দরে। খুচরা দোকানে গতকাল জালি কুমড়া ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, কচুমুখী ৪০ থেকে ৬০ টাকা, কচুর লতি ৪০ থেকে ৬০ টাকা, বরবটি ৫০ থেকে ৭০ টাকা, পেঁপে ২০ থেকে ৩০ টাকা, আলু ২৫ টাকা, পটোল ৪০ থেকে ৪৫ টাকা এবং ঢেঁড়শ ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়।


আরো সংবাদ



premium cement