১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

১০ হাজার টাকায় মিলে ১লাখ টাকা

১০ হাজার টাকায় মিলে ১লাখ টাকা - সংগৃহীত

মাত্র ১০ হাজার টাকা দিলেই একটি চক্র আপনাকে দিয়ে দিবে ১ লাখ টাকা! কিন্তু সব টাকাই জাল। ঈদকে সামনে রেখে জাল টাকার কারবারীদের এই চটকদার প্রস্তাব। ঈদকে সামনে রেখে মোট ৫ কোটি টাকা বাজারে ছাড়ার পরিকল্পনা নিয়ে তার কাজ শুরু করেছে।

গত ৬ জুন রাতে রাজধানীর কদমতলীর পূর্ব জুরাইনের বৌ বাজার এলাকা থেকে প্রায় এক কোটি জাল টাকা ও জাল টাকার সরঞ্জামসহ এমনই একটি চক্রের দশ জনকে গ্রেপ্তার করে ডিবি।

শুক্রবার বিকেলে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য দেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা ও অপরাধতথ্য বিভাগের (ডিবি) প্রধান দেবদাস ভট্টাচার্য।

গ্রেপ্তাররা হলেন- রফিক, জাকির, হানিফ, রাজন, খোকন, শাওন, রিপন মনির, সোহরাব, জসিম ও লাবনী। সেসময় তাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ জাল টাকা তৈরির সরঞ্জামসহ ল্যাপটপ, একাধিক প্রিন্টার জব্দ করা হয়।


উদ্ধার করা প্রিন্টারের কালি
দেবদাস ভট্টাচার্য বলেন: প্রতারক চক্রটির এক লাখ টাকা তৈরি করতে খরচ হয় মাত্র দশ হাজার টাকা। পরে পাইকারী বিক্রেতার কাছে লাখ টাকা ১৪ থেকে ১৫ হাজার টাকায় বিক্রি করা হয়। পাইকারী বিক্রেতারা ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা টাকায় খুচরা বিক্রেতাদের কাছে এবং প্রথম খুচরা বিক্রেতারা দ্বিতীয় খুচরা বিক্রেতাদের কাছে ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকায় বিক্রি করত।

তিনি বলেন: প্রতিদিন বাজারে খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে তিন থেকে পাঁচটি ‘এক হাজার টাকা’র জাল নোট বাজারে চালাত। তারা মূলত ফল ব্যবসায়ী ও ছোট ব্যবসায়ে যারা জড়িত তাদের সঙ্গে প্রতারণা করত।আসন্ন ঈদ উপলক্ষে প্রায় ৫ কোটি টাকা বাজারে ছাড়তে চেয়েছিল প্রতারক চক্রটি। তাদের গ্রেপ্তারের সময় জাল ১ কোটি টাকা, প্রক্রিয়াধীন আরো জাল ১ কোটি টাকা ও আরো প্রায় তিন কোটি জাল টাকার সরঞ্জামসহ গ্রেপ্তার করেছি।



ডিবি প্রধান বলেন: এই চক্রটির মূল হোতা রফিক অনেক আগেই নোয়াখালীর ছগির মাস্টারের সহযোগী হিসেবে জাল টাকা তৈরি করত। পরে সে নিজেই সরঞ্জাম কিনে এ ব্যবসায় জড়ায়, আরেক আসামি জাকির এই জাল টাকার প্রকৌশলী, সব সরঞ্জামের ব্যবস্থা সে করে দেয়। বৌ বাজারে রাজন ও তার স্ত্রী লাবনী কাপড় ব্যবসায়ী পরিচয়ে বাসা ভাড়া নিয়েছিল। হানিফ বাজারে জাল টাকা পাইকারী বিক্রেতা। বাকি যারা রয়েছে তারা প্রত্যেকে বাজারে জাল টাকা খুচরা ব্যবসা করত। এ প্রতারক চক্রের অধিকাংশই প্রথম জীবনে রিকশা চালক, ভ্যান চালক কিংবা হোটেল বয় হিসেবে কাজ করত।

তিনি বলেন: জাল টাকাগুলো অনেকটাই নতুন টাকার মতো। নিরাপত্তা সুতা, জলছাপ সহ সবই প্রায় রয়েছে। তবে আসল টাকা যতোটা খসখসে জাল টাকা ততোটাই মসৃণ। প্রতারক চক্রের সবারই জাল টাকা প্রতারণার মামলা রয়েছে। কেউবা দীর্ঘদিন জেলও খেটেছে, কেউবা একাধিক বার গ্রেপ্তার হয়েছে। জেল থেকে বের হয়ে আবারও তারা এ ব্যবসায় জড়ায়।

এক প্রশ্নের জবাবে দেবদাস ভট্টাচার্য বলেন: সিকিউরিটি থ্রেড (নিরাপত্তা সুতা) প্রতারক চক্রটির কাছে কিভাবে পৌছায়, টাকার কালি, জলছাপের হলোগ্রাম এই সব বিষয়েই তাদের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। আমরা শুধু দশজনকে ধরেছি। এ প্রক্রিয়ার সঙ্গে আরো অনেকই জড়িত।


আরো সংবাদ



premium cement