ফণী মোকাবেলায় প্রস্তুত উপকূলবাসী : মানুষের মাঝে আতঙ্ক
- গোলাম কিবরিয়া, বরগুনা
- ০৩ মে ২০১৯, ১৮:১১
ঘূর্ণিঝড় ফণী মোকাবেলায় প্রস্তুত বরগুনা জেলার উপকূলীয় এলাকার ১১ লক্ষাধিক মানুষ। প্রস্তুত রাখা হয়েছে জেলার ৩’শ ৪৫ টি সাইক্লোন শেল্টার। উপকূলীয় মানুষ ও জেলেদের নিরাপদ স্থানে যাওয়ার জন্য কাজ করছে দুই হাজার ৫’শ ২০ জন স্বেচ্ছাসেবী। ইতোমধ্যে বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মৎস্যজীবীরা নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন। সাগর উত্তাল রয়েছে। মানুষের মাঝে ছড়িয়ে পড়েছে আতঙ্ক।
জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড় ফণী’র কারণে পায়রা সমুদ্র বন্দরে ৭ নং বিপদ সংকেত জারি করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাবে বরগুনা উপকূলীয় এলাকায় গুমোট আবহাওয়া বিরাজ করছে। সাগর উত্তাল রয়েছে। স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৪ থেকে ৫ ফুট পানি বৃদ্ধি পেতে পারে এমনটাই জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাবে উপকূলের মানুষের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। ফণী মোকাবেলায় ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচী অফিস, জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে জেলার ৬ টি উপজেলায় মানুষকে সচেতন করতে জন্য মাইকিং ও সতর্কীকরণ সংকেত পতাকা উত্তোলন এবং সাগর ও তৎসংলগ্ন নদ-নদীতে চলাচলরত সকল প্রকার মাছ ধরার ট্রলার ও নৌযানকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে বলা হয়েছে।
মানুষকে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেয়ার জন্য আমতলীতে এক হাজার ৬’শ ৫০ ও তালতলীতে ৮’শ ৭০ জন ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচীর স্বেচ্ছাসেবীরা কাজ করছেন। বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের বাহির ও চরাঞ্চল এলাকার মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরে যেতে বলা হয়েছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে দুই উপজেলায় ১’শ ৪৫ টি আশ্রয় কেন্দ্র।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বরগুনার নিশানবাড়ী, বড়ইতলা ও বাশবুনিয়া, তালতলী উপজেলার বঙ্গোপসাগর সংলগ্ন আশারচর, খোট্টারচর, নিদ্রাসকিনা, ফকিরহাট, বালিয়াতলী, জয়ালভাংঙ্গা, তেতুঁলবাড়িয়া, নিউপাড়া, চরপাড়া, গাবতলী, ছোটবগী, পচাঁকোড়ালিয়া, আমতলী উপজেলার পশুরবুনিয়া, লোচা, ফেরীঘাট, আমুয়ারচর, বৈঠাকাটা, আঙ্গুলকাটা, গুলিশাখালীর নাইয়াপাড়া ও হরিদ্রাবাড়িয়া এলাকার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের বাহিরে বসবাসরত লোকজনকে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেয়ার জন্য বলা হয়েছে। অনেক মানুষ নিরাপদ স্থানে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছে। উপকূলীয় এলাকার সকল মাছ ধরার ট্রলার ও নৌকা তীরে ফিরে এসেছে।
তালতলীর তেতুঁলবাড়ীয়া এলাকার জেলে বাবুল হাওলাদার, সেলিম মিয়া, আসাদুল, হিরণ হাওলাদার ও রুবেল জানান, বইন্যার খবর পাইয়্যা মোরা নাও জাল লইয়্যা বাড়তে আইছি। সিডরের নাহান ভুল আর হরমু না।
তালতলী ট্রলার মালিক সমিতির সদস্য মোঃ আলমগীর হোসেন হাওলাদার বলেন, বন্যার খবর শুনে বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন নদ-নদীর সকল মাছ ধরার ট্রলার ও নৌকা তীরে অবস্থান করছে।
তালতলীর ফকিরহাট মৎস্য আড়ৎ ব্যবসায়ী সমিতির সহ-সভাপতি মোঃ আবদুস ছালাম বলেন, ঘূর্ণিঝড় ফণীর খবর পেয়ে বঙ্গোপসাগরের সকল মাছ ধরার নৌকা এবং চরের জেলেরা নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিয়েছে।
আমতলী ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচী (রেড ক্রিসেন্ট) কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান আছাদ বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় মাইকিং, প্রচার-প্রচারণা করে মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়ার সকল প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। এ জন্য মাঠে কাজ করছে দুই হাজার ৫’শ ২০ জন স্বেচ্ছাসেবক।
তিনি আরো বলেন, উপকূলীয় মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়ার জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে ১’শ ৪৫ টি সাইক্লোন শেল্টার।
বরগুনা জেলা প্রশাসক মোঃ কবীর মাহমুদ বলেন, ঘূর্ণিঝড় ফণী মোকাবেলায় সকল প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে কাজ করছে স্বেচ্ছাসেবীরা। তিনি আরো বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা