১৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৪ বৈশাখ ১৪৩১, ০৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`
হয়রানির অভিযোগ পাক হাইকমিশনের

পাকিস্তানীদের ভিসা বন্ধের অভিযোগ ঢাকার অস্বীকার

পাকিস্তানীদের ভিসা বন্ধের অভিযোগ ঢাকার অস্বীকার - সংগৃহীত

পাকিস্তানীদের ভিসা দেয়া বন্ধের অভিযোগ অস্বীকার করেছে বাংলাদেশ। ঢাকার মতে, পাকিস্তানই বাংলাদেশীদের ভিসা দিচ্ছে না। অন্যদিকে ঢাকায় পাকিস্তান হাইকমিশন বাংলাদেশের ভিসা পাওয়া নিয়ে নিদারুণ হয়রানির অভিযোগ করেছে।

মঙ্গলবার গণমাধ্যমের সাথে আলাপকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. আব্দুল মোমেন বলেছেন, পাকিস্তানীদের ভিসা দেয়া বাংলাদেশ বন্ধ করেনি। উল্টো পাকিস্তান আমাদের লোকদের ভিসা দিচ্ছে না। তিনি বলেন, সন্ত্রাসবাদ বা অন্য কোনো কারণে ব্যক্তি বিশেষকে বাংলাদেশ ভিসা নাও দিতে পারে। তবে ভিসা দেয়ার প্রক্রিয়া বন্ধ হয়নি। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে এ সংক্রান্ত ভুল তথ্য ছাপা হয়েছে।

এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটি ঠিক, আমাদের কিছু কর্মকর্তাকে পাকিস্তান ভিসা দিচ্ছে না। বিশেষ করে ভিসা ইস্যুর দায়িত্বে থাকা কনস্যুলার সেকশনের কর্মকর্তাদের ভিসা দেয়া হচ্ছে না। তাহলে কাজটা করবে কে? তারা আমাদের জোর করে ঝামেলায় ফেলতে চাচ্ছে।

পাকিস্তান কেন ভিসা দিচ্ছে না - জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওদেরকে জিজ্ঞাস করুন। আমরা আশা করি, যে কেসগুলো পেন্ডিং আছে সেগুলো দ্রুত মিটে যাবে। আমরা ওদের সঙ্গে যোগাযোগ করছি।

বাংলাদেশে পাকিস্তানের কোনো কোনো হাইকমিশনার না থাকার ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তারা হাইকমিশনার হিসেবে একজনের নাম পাঠিয়েছিল। সেটি আমাদের কাছে গ্রহণযোগ্য ছিল না। এরপর তারা আর কারো নাম পাঠায়নি। তিনি বলেন, স্বাগতিক দেশের কাছে কেউ গ্রহণযোগ্য না হলে অন্য কারো নাম পাঠানো হয় - এটাই সাধারণ নিয়ম। পাকিস্তানের হাইকমিশনার পদে নতুন কারো নাম এলে আমরা বিবেচনা করব।

ভিসা ইস্যুতে পাকিস্তানের সাথে টানাপড়েন সৃষ্টি হয়েছি কিনা, জানতে চাইলে ড. মোমেন বলেন, ‘অবশ্যই না। পাকিস্তানের সাথে সব জায়গায় আমরা একসঙ্গে কাজ করছি। ’

ঢাকায় পাকিস্তান হাইকমিশনের কাউন্সিলর (প্রেস) আওরঙ্গজেব হেলাল এ ব্যাপারে নয়া দিগন্তের সাথে আলাপকালে বলেন, ২০১৬ সাল থেকেই বাংলাদেশের ভিসা পেতে পাকিস্তানের নাগরিকদের কঠিন জটিলতার মুখে পড়তে হচ্ছে। এমনকি পাকিস্তানের কূটনীতিকদেরও ভিসা পেতে ছয় থেকে আট মাস অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে। ঢাকায় পাকিস্তান হাইকমিশনের কাউন্সিলর (প্রেস) হিসাবে পোস্টিং পাওয়ার পর বাংলাদেশের ভিসার জন্য আমাকে আট মাস অপেক্ষা করতে হয়েছিল। তিনি বলেন, ভিসার জন্য আমি ২০১৬ সালের ১৭ আগস্ট ইসলামাবাদে বাংলাদেশ হাইকমিশনে কাগজ-পত্র জমা দিয়েছিলাম। আর ভিসা পেয়েছি ১৯ এপ্রিল ২০১৭ সালে। আমার সহকারী ব্যক্তিগত কর্মকর্তা বাংলাদেশের ভিসার জন্য আবেদন করেছিল ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে। ভিসা পেতে অস্বাভাবিক বিলম্বের কারণে তাকে শেষ পর্যন্ত বেইজিংয়ে পোস্টিং দেয়া হয়েছে। এ ধরনের ঘটনা এখন রুটিন বিষয়ে পরিণত হয়েছে।

আওরঙ্গজেব বলেন, ঢাকায় হাইকমিশনার হিসাবে সাকলাইন সাইয়াদাকে নিয়োগ দেয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করে পাকিস্তান গত বছর মার্চে বাংলাদেশের কাছে এগ্রিমো পাঠিয়েছিল। বাংলাদেশ এ ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত না দিয়ে ১৪ মাস ধরে বিষয়টিকে ঝুলিয়ে রেখেছে। শেষ পর্যন্ত সাকলাইন সাইয়াদাকে কেনিয়ার পোস্টিং দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশে পাকিস্তানের হাইকমিশনার হিসাবে নতুন কারো নাম ঘোষণা করা হয়নি।

ইসলামাবাদে বাংলাদেশ হাইকমিশনের কাউন্সিলর (প্রেস) মুহম্মদ ইকবাল হোসেনের ভিসা নবায়ন না করা এবং তার পরিবারকে পাকিস্তানের ভিসা না দিয়ে হয়রানির অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটা সাম্প্রতিক ঘটনা। আমরা বহু আগে থেকেই হয়রানির শিকার।


আরো সংবাদ



premium cement