২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

রাখাইনে যথেষ্ট যৌন নির্যাতন হয়েছে

মিয়ানমারের নেত্রী সু চি - ছবি : সংগৃহীত

আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, রোহিঙ্গারা যখন মায়ানমারের রাখাইন রাজ্যে ছিল তখন সেখানে যথেষ্ট যৌন নির্যাতন হয়েছে, যা অনেকেই জানেন ও দেখেছেন।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে জাতিসঙ্ঘ মহাসচিবের সেক্সুয়াল ভায়োলেন্স ইন কনফ্লিক্ট সংক্রান্ত বিশেষ প্রতিনিধি পারমিলা প্যাটেন-এর সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন আইনমন্ত্রী।

আইনমন্ত্রী আরও বলেন, সেক্সুয়াল ভায়োলেন্স ইন কনফ্লিক্ট -এর ব্যাপারে আমাদের এই মুহূর্তে কোন সমস্যা নেই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ব্যক্তিগত উদ্যোগে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আশ্রয় দিয়েছেন, তাঁদের খাদ্যের ব্যবস্থা করেছেন। বাফক সব ইস্যুও আমরা অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি এবং মায়ানমারের সাথে আমরা এ ব্যাপারে সকল পর্যায়ে আলাপ-আলোচনাও করে যাচ্ছি।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের ট্রমা কিভাবে কমানো যায়, তারা এখানে কিভাবে একটু স্বস্তিতে থাকতে পারেন সে ব্যবস্থাও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে হচ্ছে।

মন্ত্রী বলেন, আজকের আলোচনা থেকে যেটা বেরিয়ে এসেছে সেটা হচ্ছে সারা বিশ্বে বাংলাদেশের বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রোহিঙ্গাদের প্রতি যে সহানুভূতি সেটা অত্যন্ত প্রশংসিত হয়েছে।
তিনি বলেন, পাচারের ব্যাপারে কিছু ছোটখাটো ঘটনা ঘটেছিল সেগুলোও আমরা শক্ত হাতে মোকাবেলা করেছি এবং এগুলো এখন খুব একটা ঘটছে না। আমি এখন এটুকু বলতে পারি আমাদের আলোচনা অত্যন্ত ফলপ্রসূ হয়েছে।

মিয়ানমারের ওপর শক্তভাবে চাপ প্রয়োগ করতে হবে

দক্ষিণ এশিয়ার স্থিতিশীলতার স্বার্থে মিয়ানমারের ওপর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের শক্তভাবে চাপ প্রয়োগ করতে হবে। নিজস্ব সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও বাংলাদেশ নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে বিশ্বে মানবতার দৃষ্টান্ত করেছে। রাজধানীতে আজ ইনিস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশ (আইডিইবি) আয়োজিত ‘রোহিঙ্গা সমস্যা-বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক এক গোলটেবিল আলোচনায় এ অভিমত ব্যক্ত করা হয়।

পল্লী কর্ম সংস্থান ফাউন্ডেশনের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মো. জসিম উদ্দিনের সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক অনুবিভাগের মহাপরিচালক মো. দেলোয়ার হোসেন।

আলোচনায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন, অস্ট্রেলিয়ার সুইনবার্ন ইউনিভার্সিটির আইন বিভাগের অধ্যাপক ক্রিস্টিন জব ও ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস প্রোগ্রামের পরিচালক ড. মহসীন হাবিব। এতে আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পিচ এন্ড কনফ্লিক্ট বিভাগের চেয়ারম্যান সহযোগী অধ্যাপক মো. তৌহিদুল ইসলাম, ট্যাকনিক্যাল টিচার্স ট্রেনিং কলেজের অধ্যক্ষ প্রকৌশলী মো. রমজান আলী, ঢাকা পলিট্যাকনিক ইনিস্টিটিউটের অধ্যক্ষ কাজি জাকির হোসেন প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, রাষ্ট্রের আর্থসামাজিক ক্ষতি এড়ানোর পাশাপাশি ভবিষ্যতে দেশীয় ও আঞ্চলিক ঝুঁকি মোকাবেলায় দ্রুততম সময়ের মধ্যে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন জরুরি। এই সমস্যাটি শুধু আমাদের দেশের জন্য নয়, এটি একটি বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ। সরকার একই সঙ্গে সমস্যা সমাধান প্রক্রিয়া যেনো দীর্ষস্থায়ী না হয় তা নিশ্চিতের পাশাপাশি আশ্রয়রতদেরও নিরাপত্তা নিশ্চিতে লক্ষ্য রাখছে।

তৌহিদুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আশ্রয়রত রোহিঙ্গাদের প্রায় ৮০ শতাংশই চায় এই মুহূর্তেই তাদের বাসস্থানে ফিরে যেতে। আর ২০ শতাংশ চায় নিরাপত্তা নিশ্চিতের পর তাদের প্রত্যাবাসন করা হোক।
আলোচনায় বক্তারা বলেন, রোহিঙ্গাদের উপর মিয়ানমার সেনাবাহিনী যে বর্বোরচিত ও ন্যাক্কারজনক হামলা করেছে, তা চরম মানবাধিকার লঙ্ঘন।
সূত্র : বাসস

 


আরো সংবাদ



premium cement