‘বাংলাদেশকে সবচেয়ে ঘনিষ্ট প্রতিবেশী মনে করে ভারত’
- সিলেট ব্যুরো
- ১৭ অক্টোবর ২০১৮, ১৯:০২
সিলেটে নিযুক্ত ভারতীয় সহকারী হাই কমিশনার এল. কৃষ্ণমূর্তি বলেছেন, প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে বাংলাদেশকে সবচেয়ে ঘনিষ্ট ও গুরুত্বপূর্ণ দেশ হিসেবে বিবেচনা করে ভারত। ব্যবসা-বাণিজ্য ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ভারত বাংলাদেশ তথা সিলেটের সাথে একসাথে কাজ করতে বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে।
এই লক্ষ্যে ভিসা ব্যবস্থা সহজীকরণ করা হয়েছে। ব্যবসা-বাণিজ্য ও চিকিৎসার জন্য এ অঞ্চলের ব্যবসায়ীসহ সাধারণ মানুষ যাতে স্বল্প সময়ে ও সহজে ভিসা পেতে পারেন সে বিষয়টি বিবেচনা করে সিলেটে ভারতীয় সহকারী হাই কমিশনের অফিস স্থাপন করা হয়েছে।
বুধবার সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি’র নেতৃবৃন্দের সাথে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।
সিলেট অঞ্চল ঐতিহ্যগতভাবে সমৃদ্ধশালী উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর সাথে সিলেটিদের ঘনিষ্ট সম্পর্ক রয়েছে। ব্যবসা-বাণিজ্যে আমদানী-রপ্তানীর প্রসারও ঘটছে এসব অঞ্চলে। তামাবিল সীমান্তসহ বিভিন্ন স্থলবন্দর দিয়ে পন্য রপ্তানীতে সিলেটের ব্যবসায়ীরা যাতে কোন ধরণের হয়রানি এবং দুর্ভোগের শিকার না হন সে বিষয়টি তিনি গুরুত্ব সহকারে দেখবেন বলে জানান। সহকারী হাই কমিশনার সিলেটে দায়িত্ব পালনকালে ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা কামনা করেন এবং ব্যবসায়ীরা যাতে সর্বোচ্চ সুবিধা পেতে পারেন সে বিষয়টি তিনি গুরুত্বের সাথে তত্ত্বাবধানের আশ্বাস দেন।
সিলেট চেম্বারের বোর্ড রুমে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতির বক্তব্যে চেম্বার সভাপতি খন্দকার সিপার আহমদ সিলেটে ভারতীয় সহকারী হাই কমিশন স্থাপন করায় ভারত সরকারকে ধন্যবাদ জানান।
তিনি বলেন, সিলেট শহরের উন্নয়নে ভারত সরকার ২২ কোটি টাকা আর্থিক সহযোগিতা দিচ্ছে, যা অত্যন্ত প্রশংসনীয় উদ্যোগ। তিনি উল্লেখ করেন, সিলেটের তামাবিল স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে বাংলাদেশের মোট কয়লার চাহিদার ৮০ ভাগই আমদানী হয়ে থাকে। এজন্য সিলেটের আমদানীকারকদের প্রায়ই ভারতে যাতায়াত করতে হয়। তিনি এসব আমদানীকারকদের জন্য ৫ বছর মেয়াদী মাল্টিপল ভিসা ইস্যুর অনুরোধ জানান।
তিনি বলেন, কয়লা আমদানীতে আমদানীকারক বিভিন্ন রকম প্যারা ট্যারিফ, নন-ট্যারিফ বাধার সম্মুখীন হচ্ছেন। তিনি এসব বাধা দূরীকরণের সহকারী হাই কমিশনারের সহযোগিতা কামনা করেন। তিনি সুতারকান্দি এলসি স্টেশনে কালি দিয়ে হাতের ছাপ গ্রহণের বদলে বায়োমেট্রিক পদ্ধতি চালুর প্রস্তাব করেন। এছাড়াও তিনি সিলেটে নির্মাণাধীন স্পেশাল ইকোনমকি জোন ও হাই-টেক পার্কে বিনিয়োগে ভারতীয় বিনিয়োগকারীদের এগিয়ে আসার আহবান জানান।
সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ও উপস্থিত ছিলেন ভারতীয় হাই কমিশনের সেকেন্ড সেক্রেটারী গিরিশ পুজারী, সিলেট চেম্বারের সহ সভাপতি মোঃ এমদাদ হোসেন, পরিচালক জিয়াউল হক, পিন্টু চক্রবর্তী, মোঃ ওয়াহিদুজ্জামান (ভূট্টো), মুশফিক জায়গীরদার, আমিরুজ্জামান চৌধুরী, ফালাহ উদ্দিন আলী আহমদ, হুমায়ুন আহমেদ, আলহাজ্ব মোঃ আতিক হোসেন, মুজিবুর রহমান মিন্টু প্রমুখ।
আরো পড়ুন : বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি যা ভাবছে চীন
কূটনৈতিক প্রতিবেদক ১৭ অক্টোবর ২০১৮, ১২:১৬
আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের পুরো প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকবে বলে আশা করছে চীন।
গতকাল বার্তা সংস্থা ইউএনবিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ঢাকায় চীনের রাষ্ট্রদূত ঝেং জাও বলেন, আমি আশা করি বাংলাদেশে আগামী জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হবে। নির্বাচনের সময় রাজনৈতিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকবে। তিনি বলেন, নির্বাচনে বাংলাদেশের জনগণের দেয়া সিদ্ধান্তকে শ্রদ্ধা জানাবে চীন।
রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশ ও চীনের সম্পর্কের ক্ষেত্রে অনেক নতুন নতুন সুযোগ এসেছে। যৌথ প্রচেষ্টার মাধ্যমে তা কাজে লাগানো যেতে পারে। আমি আশা করি বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে সম্পর্ক চিরদিন অটুট থাকবে।
তিনি বলেন, পরস্পরের জন্য লাভজনক বৃহত্তর অংশীদারিত্বের মাধ্যমে চীন ও বাংলাদেশের সহযোগিতার সম্পর্ক পরবর্তী ধাপে অগ্রসর হচ্ছে। অর্থনীতি ও বাণিজ্য, বিনিয়োগ, সংস্কৃতি ও জনগণের মধ্যে সম্পৃক্ততার মতো ক্ষেত্রগুলোতে এ সহযোগিতা গভীরতর হচ্ছে।
২০১৬ সালের অক্টোবরে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের বাংলাদেশ সফরের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ওই সফরকালে দুই দেশের নেতৃবৃন্দ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে কৌশলগত অংশীদারিত্বে উন্নীত করেছেন। এটি সহযোগিতার নতুন ক্ষেত্র সম্প্রসারিত করেছে। দুই দেশের সম্পর্কে নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে।
রাষ্ট্রদূত বলেন, প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ২০১৩ সালে বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (বিআরআই) হাতে নেন। এটি বিশ্বজুড়ে বেশ ইতিবাচক সাড়া ফেলেছে। বিআরআইয়ের লক্ষ্য এশিয়া, ইউরোপ ও অফ্রিকা মহাদেশের রাষ্ট্রগুলোকে সড়ক ও সমুদ্রপথে সংযুক্ত করা এবং এ সব অঞ্চলের দেশগুলোতে ভারসাম্যপূর্ণ ও টেকসই উন্নয়ন সাধন করা।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে উন্নয়ন সহযোগিতা ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে চীনের অবস্থান বেশ ভালো। গত বছর দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের পরিমাণ ১৬ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে, যা আগের বছরের চেয়ে পাঁচ দশমিক আট শতাংশ বেশি। চীন বর্তমানে বাংলাদেশের প্রধান বাণিজ্যিক অংশীদার। অবকাঠামো খাতে চীনের কোম্পানিগুলো বাংলাদেশের সাথে ১০ দশমিক চার বিলিয়ন ডলারের চুক্তি করেছে। চীনের বিনিয়োগের ক্ষেত্রে দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের অবস্থান দ্বিতীয়।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা