১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

জরুরি তহবিল না হলে রোহিঙ্গারা ঝুঁকিতে পড়বে

-

জরুরি ভিত্তিতে আন্তর্জাতিক তহবিল পাওয়া না গেলে রোহিঙ্গাদের জীবন ঝুঁকিতে পড়বে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে জাতিসঙ্ঘ।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিওএইচও), আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) এবং জাতিসঙ্ঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা (ইউএনএইচসিআর) গতকাল জেনেভায় এক ব্রিফিংয়ে এ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে।
চলতি বছরের মার্চ থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ৯ লাখ রোহিঙ্গা এবং তিন লাখ ৩০ হাজার স্থানীয় বাংলাদেশী জনগোষ্ঠীকে সহায়তা দিতে গত ১৬ মার্চ জেনেভায় আয়োজিত এক সম্মেলনে জাতিসঙ্ঘ সংস্থাগুলো ৯৫ কোটি ডলার সহায়তা চেয়েছিল। কিন্তু এ পর্যন্ত পাওয়া গেছে তার মাত্র ৩০ শতাংশ। 
পরিকল্পনা অনুযায়ী তহবিলের জন্য এ আবেদনেরলক্ষ্য ছিল ২০১৮ সালের শেষ পর্যন্ত উদ্বাস্তুদের জীবন রক্ষাকারী ও জরুরি মানবিক চাহিদা মেটানো, পরিবেশের টেকসই সুরক্ষা ও স্থানীয় ক্ষতিগ্রস্ত জনগোষ্ঠীর আস্থা অর্জনে সহায়তা দেয়া। এ অর্থের ৫৪ শতাংশ খাদ্য, পানি, পয়ঃনিষ্কাশন, আশ্রয় ও অন্যান্য মৌলিক চাহিদা পূরণে ব্যয় হবে। শুধু খাদ্য বাবদ ২৫ শতাংশ অর্থের প্রয়োজন হবে।
ডাব্লিওএইচও’র উপ-মহাপরিচালক ড. পিটার সালামা বলেছেন, বাংলাদেশ সরকার, ডাব্লিওএইচও এবং অন্যান্য অংশীদারের যৌথ প্রচেষ্টায় এ পর্যন্ত হাজারো উদ্বাস্তুর জীবন বাঁচানো সম্ভব হয়েছে। মহামারীর ঝুঁকি সত্ত্বেও কক্সবাজারের উদ্বাস্তু শিবিরগুলোতে পলিও, কলেরা, রুবেলার মতো প্রাণঘাতী রোগের প্রাদুর্ভাব ঠেকানো গেছে। এসব রোগের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ৪০ লাখ টিকা দেয়ার অভিযান সফল হয়েছে। তিনি বলেন, ছোঁয়াচে রোগের ব্যাপারে পূর্ব সতর্কতা পেতে সব সময় সজাগ থাকতে হবে। পারিপার্শ্বিক পরিবেশ, দুর্বল পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা ও গাদাগাদি করে থাকার কারণে উদ্বাস্তুদের জীবনে এখনো বড় ধরনের ঝুঁকি রয়েছে। এ অবস্থার নিরসনে আন্তর্জাতিক সহায়তা বাড়ানো প্রয়োজন।
আইওএমের মুখপাত্র জয়েল মিলম্যান বলেছেন, কক্সবাজারে উদ্বাস্তু সঙ্কট হচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুত মানবিক বিপর্যয়। এর চ্যালেঞ্জ ব্যাপক। জরুরি ভিত্তিতে তহবিল পাওয়া না গেলে আমরা ভয়াবহ ঝুঁকির মুখে পড়ব। রোহিঙ্গাদের জীবন আরো একবার বিপদে পড়বে।
রাষ্ট্রহীন রোহিঙ্গাদের জন্য আন্তর্জাতিক সহায়তা বাড়ানোর আহ্বানে যোগ দিয়েছে ইউএনএইচসিআরো। 
মানবিক সহায়তা সংক্রান্ত জাতিসঙ্ঘের সমন্বয় কার্যালয় ওসিএইচএ’র মতে, রাখাইনে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের জন্য জরুরি এবং ক্ষেত্রেবিশেষ প্রাণরক্ষাকারী সহায়তা প্রয়োজন।
১০ হাজার আশ্রয় শিবির নির্মাণ করবে ওমান : ওমান মানবিক সাহায্য সংস্থা (ওসিও) বাংলাদেশে ভূমিধসের ঝুঁকিতে থাকা রোহিঙ্গা শরণার্থী পরিবারগুলোর জন্য ১০ হাজারের বেশি আশ্রয় শিবির নির্মাণের প্রকল্প হাতে নিয়েছে। এ প্রকল্পে থাকবে মহিলা ও পুরুষের জন্য পৃথক শৌচাগার, খাবার পানির জন্য গভীর ও অগভীর নলকূপ, সড়ক বাতি, রান্নার জন্য গ্যাসের চুলা, স্বাস্থ্য সেবা, মসজিদ এবং কুরআন শিক্ষার ব্যবস্থা। 
ঢাকায় ওমানের নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূত তাই’ব সালিম আল আলাভি সম্প্রতি প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ের কাজ উদ্বোধন করেছেন। এতে সরকারি ও বেসরকারি কর্মকর্তা এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। 
এর আগে ওমান মিশন প্রধান বাংলাদেশ সরকারের শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবর্সন কমিশনার আবুল কালাম ও ইউএনএইচসিআরের হেড অব ইমারজেন্সি অপারেশন্স কেভিন এলেনের সাথে বৈঠক করেন। 
তাইব সালিম আল আলাভি বলেন, প্রাণভয়ে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশ মহৎ দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তায় ওমান সমর্থন দিয়ে যাবে।
উদ্বোধন অনুষ্ঠান শেষে সালিম আল আলাভি ওমান সরকারের সহায়তায় প্রথম পর্যায়ে দুই হাজার ২০০ রোহিঙ্গা পরিবারের জন্য নির্মিত নিরাপদ আশ্রয় শিবির পরিদর্শন করেন। তিনি সেখানে বসবাসরত উদ্বাস্তুদের সাথে কথা বলেন এবং তাদের জন্য ওমান সরকারের পক্ষ হতে ঈদুল আজহা উপলক্ষে কোরবানির গোশত বিতরণের ঘোষণা দেন। পরে স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তায় ঈদের দিন এ গোশত রোহিঙ্গা পরিবারগুলোর মধ্যে বিতরণ করা হয়।


আরো সংবাদ



premium cement

সকল