২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

একুশে গ্রন্থ মেলা : তার বর্ণাঢ্য রূপ

-

পৃথিবীব্যাপী অনেক ধরনের মেলা লক্ষ করা যায়। যেমন তথ্যপ্রযুক্তিমেলা। গৃহায়ন ও আবাসন মেলা। বস্ত্র ও কুঠির শিল্পমেলা। বাণিজ্যমেলা। গরু, ছাগল, উট, ভেড়া, হাতি, ঘোড়ার মেলা। পৌষমেলা, বৈশাখী মেলা প্রভৃতি। তবে গ্রন্থমেলা সব মেলার সেরা মেলা অভিধা পেতে পারে। এ জন্য পারে যে, গ্রন্থমেলা মানে বুদ্ধির মেলা, দর্শনের মেলা, জ্ঞানের মেলা, অভিজ্ঞতার মেলা; ধ্বনি, বর্ণ ও শব্দের মেলা। এ মেলায় ধ্বনি, বর্ণ, শব্দ, বুদ্ধি, দর্শন, জ্ঞান ও অভিজ্ঞতার আধার বইগুলো থরে থরে সাজানো থাকে তাকে তাকে; শোভা পায় পাঠকের হাতে হাতে। সে জন্যেই গ্রন্থমেলা শ্রেষ্ঠ মেলা।
গ্রন্থমেলা শুধু জ্ঞানের মেলা নয়, আনন্দেরও মেলা। মেলা মানেই আনন্দ সমাবেশ। মেলার অভিধানগত শব্দের অর্থ একত্রিত, একসাথে বা মিলিত হওয়া। যখন কোনো কিছুকে উপলক্ষ করে কোথাও একসাথে, একত্রিত বা মিলিত হওয়ার ব্যাপার ঘটে সেখানে যৎসামান্য হলেও আনন্দ সঞ্চারিত হয়, উৎসবের আমেজ সৃষ্টি হয়। অনেক দিন পর দেশে-বিদেশে থেকে ফিরে আসা পরিবার-পরিজন, আত্মীয়স্বজন একসাথে এক জায়গায় মিলিত হলে কোলাহল তৈরি হয়। সেই কোলাহলে ভিড় ঠেলে আনন্দও এসে উপস্থিত হয়ে যায়। দীর্ঘ দিন পর লেখক-প্রকাশকরাও একত্রিত হলে সেখানেও আনন্দ তার উষ্ণতা ছড়াতে থাকে। কাজ শেষে সন্ধ্যাবেলায় বন্ধু-বান্ধবরা চায়ের টেবিলে একত্রিত হতে পারলে সেখানেও গরম চায়ের কাপে আনন্দের ধোঁয়া ওড়ে। সে জন্য মেলা বা এ ধরনের কোনো জনসমাগমের সাথে আনন্দ বা উৎসবও জড়িয়ে যায়। একুশে গ্রন্থমেলাতেও আনন্দের ফোয়ারা ছোটে। এই আনন্দ ভিন্ন মাত্রার আনন্দ। মেলাকে কেন্দ্র করে এই আনন্দ নানাভাবে সংঘটিত হতে থাকে। লেখক তার মূল্যবান বইটি মেলাতে প্রকাশ করাতে পেরে পুলকিত হতে থাকে। প্রকাশকও তাদের অর্থলগ্নির ফল বই মেলাতে প্রকাশ করে পাঠকের হাতে তুলে দিতে পেরে আপ্লুত হতে পারে, আবার পাঠকও নতুন বইয়ের মোড়কে জ্ঞানের তৃষ্ণা মেটানোর আশায় বিগলিত হতে থাকে। এভাবেই গ্রন্থমেলা প্রাণের মেলা জ্ঞানের মেলা আনন্দের মেলা হয়ে ওঠে।
আজকাল বিভিন্ন ইস্যুতে পৃথিবীর মানুষ ব্যস্ত হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশের মানুষ আরো ব্যস্ত হয়ে উঠেছে নিজেকে ঘিরে। এই ব্যস্ততার মধ্যে যারা মেলাতে যেতে পারেন না তারা খবরের কাগজে ও টেলিভিশনের পর্দায় চোখ রেখে গ্রন্থ প্রকাশ ও গ্রন্থের বিক্রি; লেখক, প্রকাশক ও পাঠকের আনন্দঘন সমাগম দেখে দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে আশা সঞ্চারিত হতে থাকে। আশান্বিত হওয়াও আনন্দের। এভাবেই মানুষ তার নিজ নিজ অবস্থান থেকে মেলাকে কেন্দ্র করে নিজের মধ্যে একধরনের আনন্দে ভাসতে পারেন। মেলাও তখন রূপ পায় সার্বজনীনতায়। মেলা যখন সার্বজনীনতা খুঁজে পায় তখন বাংলা ভাষা-ভাষী সমগ্র মানুষ মেলার সৌন্দর্যে হতে থাকেন উজ্জীবিত। একুশে গ্রন্থমেলা এরকমই মানুষকে উজ্জীবিত করার মেলা।
গ্রন্থমেলা কবে কোথায় প্রথম শুরু হয়েছিল সেটা নিয়ে অভিন্ন মত লক্ষ করা যায় না। তবে গ্রন্থমেলা খুব একটা প্রাচীন নয়। প্রাচীনকালে গ্রন্থ ছিল না। মানুষ যা কিছু লিখত তার সবই সংরক্ষিত হতো জন্তু-জানোয়ারের চামড়া ও হাড়-হাড্ডিতে, মৃত্তিকা ফলকে, গাছের ছাল-বাকলে, পাহাড়-পর্বতের পাথরে, পাথরের তৈরি গুহার দেয়ালে কিংবা ধাতুর পাতে খোদাই করে। ছাপাখানাও ছিল না কাগজও ছিল না। সে জন্য গ্রন্থও ছিল না; গ্রন্থমেলাও ছিল না। জানা যাচ্ছে প্রাচীন মিসরে মৃৎফলকে লিখে সেগুলো সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হতো। এই মৃৎফলকগুলো যেখানে যেভাবে সংরক্ষিত হতো সেটিই ছিল আধুনিক লাইব্রেরির প্রাচীন রূপ। মৃৎফলকের এই গ্রন্থগুলো নিয়ে সেখানে গ্রন্থমেলা হয়েছিল কি না সেটা জানা খুব কষ্টকর। সে তথ্য না জানা পর্যন্তু এটিই বলতে হয় যে, প্রথম গ্রন্থমেলা শুরু হয়েছিল খ্রিষ্টীয় পনেরো শতকে। সবেমাত্র জোহানস গুটেনবার্গ মুদ্রণযন্ত্র বা ছাপাখানা আবিষ্কার করেছেন। সেই সময়ই নাকি বিশ্বের প্রথম বইমেলা শুরু হয় জার্মানিতে। কেউ বলেন জার্মানির লিপজিগ শহরে কেউ বলেন ফ্রাঙ্কফুর্ট শহরে বইমেলার প্রথম আয়োজন করা হয়েছিল। অন্য একটি সূত্র থেকে জানা যাচ্ছে ১৮০২ খ্রিষ্টাব্দে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক শহরে প্রথম বইমেলার আসর বসে। এই মেলার আয়োজক ছিলেন ম্যাথু কেরি। এরপর ১৮৭৫ খ্রিষ্টাব্দে একশ জন প্রকাশক মিলে নিউ ইয়র্কের ক্লিনটন শহরে আয়োজন করলেন বইমেলার। এই মেলায় নাকি ত্রিশ হাজার বই প্রদর্শিত হয়েছিল। তবে ১৯৪৯ খ্রিষ্টাব্দে ফ্রাঙ্কফুর্টের বইমেলাটি ছিল সর্ববৃহৎ। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে দেশে দেশে বইমেলা জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।
বাংলাদেশে বইমেলা আরো পরে শুরু হয়েছে। যদিও বাংলা ভাষা চর্চা প্রাচীনকাল থেকে হয়ে আসছে। উল্লেখযোগ্যহারে সুলতানি আমলে বাংলা সাহিত্যের পৃষ্ঠপোষকতায় সরকারি অনুদান বেড়ে যায়। সেটা আবার ভাটা পড়ে ইংরেজদের আমলে। ইংরেজরাও বাংলা চর্চা করেছিল কোম্পানির অগ্রগতির উদ্দেশ্যে। কিন্তু এ সময়টাতেই বাংলা গদ্যের উৎকর্ষ সাধিত হয় এবং বৈশ্বিক চিন্তার নতুন নতুন জ্ঞানের অনুপ্রবেশ ঘটে বাংলা সাহিত্যে। মানুষও বাংলা সাহিত্যের প্রতি ধীরে ধীরে অনুরক্ত হতে থাকে। ইংরেজরা চলে গেলে বাংলা ভাষাভাষীরা নিজেদের ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতিকে টিকে রাখার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করতে থাকে; ফলে বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন সংঘটিত হয়। মাতৃভাষার প্রতি অনুরাগ থেকেই বাংলা ভাষার বইমেলা শুরু হয় ১৯৭৭ খ্রিষ্টাব্দে । ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে পূর্ব পাকিস্তান অঞ্চলের বাংলা ভাষাভাষী মানুষ একুশে ফেব্রুয়ারির দিন মাতৃভাষার জন্য আত্মত্যাগের যে নজির সৃষ্টি করেছিল তা পৃথিবীতে বিরল। ভাষার দাবিতে পূর্বপাকিস্তানের মানুষের মধ্যে জাতীয়তাবাদী চেতনারও প্রকাশ ঘটে। ১৯৭১ সালে সে চেতনা মুক্তিযুদ্ধে রূপ নেয়। বাংলা ভাষা ১৯৫২ সালে যে চেতনা তৈরি করেছিল সেই চেতনাই একাত্তর-পরবর্তী সময়ে এসে ধীরে ধীরে বইমেলাকে আরো সমৃদ্ধ করে তোলে। জাতীয়তাবাদী চেতনায় বইমেলার প্রকাশ ঘটেছে একমাত্র বাংলা একাডেমিকে কেন্দ্র করে। বাংলা ভাষা সাহিত্য-সংস্কৃতি গবেষণাবিষয়ক একটি প্রতিষ্ঠানের দাবি ওঠে ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারির পর থেকেই। সেই দাবির মূল্যায়নে ১৯৫৫ সালের ৩ ডিসেম্বর বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে গবেষণার জন্য একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হয় ঢাকার ‘বর্ধমান হাউস’-এ অর্থাৎ এখন যেখানে বাংলা একাডেমি ভবন রয়েছে। সেখান থেকে বাংলা ভাষায় বইপুুস্তক প্রকাশিত হতে থাকে। ১৯৭৪ সালে বাংলা একাডেমি স্বয়ং সাহিত্য সম্মেলন উদযাপন করার সিদ্ধান্ত নেয়। সেই সম্মেলনকে উপলক্ষ করে একাডেমি প্রাঙ্গণে হ্রাসকৃত মূল্যে একাডেমি বই বিক্রি করতে শুরু করে। ১৯৭৫ সালে বাংলা একাডেমির অনুমতিসাপেক্ষে বাংলা একাডেমির ফটকে খোলা আকাশের নিচে সৃজনশীল প্রকাশনা সংস্থা ‘মুক্তধারা’র উদ্যোগে বই প্রদর্শন ও বিক্রির ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। এতে একধরনের উৎসাহ-উদ্দীপনার সৃষ্টি হলে ১৯৭৭ সালে নওরোজ কিতাবিস্তান ও চলন্তিকা বইঘর নামে প্রকাশনা সংস্থা দু’টি ছোট্ট পরিসরে বইমেলার আয়োজন করে। ১৯৭৮ সালে বাংলা একাডেমি একুশে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে একাডেমি প্রাঙ্গণে আনুষ্ঠানিকতার সাথে বইমেলার আয়োজন করে। তবে পূর্ণাঙ্গভাবে বইমেলা যাত্রা শুরু করে ১৯৭৯ সালে। ১৯৮৫ সালে বইমেলার নামকরণ হয়েছে ‘অমর একুশে গ্রন্থমেলা’ হিসেবে। অমর একুশে গ্রন্থমেলা বাঙালি জাতির জ্ঞানের মেলা, প্রাণের মেলা। এই মেলা লেখক প্রকাশক ও পাঠকের মেলা। বইমেলা বাংলা ভাষাভাষীর ঐতিহ্য; বাংলা ভাষার সমৃদ্ধি; বাংলা ভাষার শ্রীবৃদ্ধি। এই মেলা বাংলা ভাষায় জ্ঞানচর্চার দুয়ারকে উন্মুক্ত করে দেয় নিঃসন্দেহে।
একুশে গ্রন্থমেলা ঐতিহ্য অনুযায়ী ১ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়ার কথা থাকলেও ঢাকা সিটি নির্বাচনের কারণে এবার শুরু হতে পারল না। গত কয়েকটি নির্বাচন লক্ষ করলে মনে হতে পারে যে নির্বাচনের চেয়ে ঐতিহ্য অনুযায়ী মেলা শুরুটাই হয়তো বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিল। রানা দাশদের মন যোগাতে গিয়েই কি সব কিছুর তারিখ পরিবর্তন করতে হলো কিনা কে জানে। বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ ও সোহরাওয়ার্দী মাঠ মিলে গতবারের সাড়ে পাঁচ লাখ বর্গফুটের মেলার চেয়ে এবার আরো ২৫ হাজার বর্গফুট আয়তন বেড়েছে; এটি প্রশংসনীয় কিন্তু আয়তন আরো প্রসারিত হওয়ার দরকার আছে। তবে একাডেমী প্রাঙ্গণ ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মধ্যে অবাধ যাতায়াতে বিড়ম্বনা সৃষ্টি করবে মেট্রোরেল প্রকল্পের উন্নয়ন কাজ। একাডেমির প্রাঙ্গণ থেকে সোহরাওয়ার্দী মাঠে চলাচল করার জন্য মেট্রোরেল প্রকল্পের ওপর দিয়ে যদি দু’টি দৃষ্টিনন্দন টেম্পোরারি ওভার পাস তৈরি করা যেত অথবা বাংলা একাডেমির চত্বর অবধি সীমানাটুকু মেট্্েরারেলের কাজ বন্ধ করে আপাতত খোলা রাখার ব্যবস্থা করা যেত তা হলে মেলার দুই অংশেই যাতায়াতকে সহজ করা যেত এবং মেলাকে সৌন্দর্যহানি থেকেও রক্ষা করা যেত। তবে মেট্রোরেল সম্পন্ন হলে তখন বাংলা একাডেমির সাথে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান নিয়ে মেলার নকশা কেমন দাঁড়াবে তার পরিকল্পনা আগেভাগেই করা যেতে পারে।
গতবারের তুলনায় এবার মেলাতে অবস্থানের সময় বাড়ানো না গেলে ঢাকার বাইরে থেকে আগত দর্শনার্থীরাই সবচেয়ে বেশি বঞ্চিত হবেন। কারণ একুশের গ্রন্থমেলা শুধু ঢাকাবাসীর মেলা নয়; এ মেলা সমগ্র দেশবাসীর। প্রতিদিন দেশের প্রান্ত থেকে শত শত লোক ঢাকাতে কাজে আসেন। কাজের ফাঁকে হাতে সময় থাকলে মেলাতেও তারা দু-এক ঘণ্টা সময় কাটাতে পারেন এবং আত্মীয় প্রিয়জনদের জন্য দু-একটা বই কিনে ফিরতে পারেন। সকাল ৯টা থেকে মেলা শুরু না হলে দূর-দূরান্ত থেকে আসা মানুষদের জন্য মেলা অবারিত হতে পারে না।
লেখক মঞ্চের পরিধি ও সৌন্দর্য বাড়ানো দরকার। শিশুচত্বরকে পরিচালনার জন্য লোক নিয়োগ করতে পারলে সেখানকার পরিবেশটা গোছালো সুশৃঙ্খল হতো। বিদেশী লেখকদের সাথে পাঠকদের পরিচিতি ঘটানোর কোনো রকম ব্যবস্থা থাকলে পাঠকরা নিজেদের অভিজ্ঞতাকে মিলিয়ে নিতে পারতেন। ই-বুক স্টল বেশি প্রভাব বিস্তার করলে তা মুদ্রণশিল্পের প্রতিবন্ধক হয়ে উঠতে পারে কি না এসব বিষয় নিয়ে গভীরভাবে বাংলা একাডেমিকেই ভাবতে হতে পারে।
একাডেমি মঞ্চে প্রাত্যহিক গবেষণা প্রবন্ধ পাঠের ব্যবস্থা মেলার গুরুত্বকে বাড়িয়ে দিতে পারে। গবেষণা প্রবন্ধগুলো হতে হবে মুক্ত। রাজনৈতিক মতাদর্শে না মিললে তার প্রবন্ধ পাঠযোগ্য হবে না এমন সীমাবদ্ধতা থেকে বের হয়ে একাডেমি উদার হতে না পারলে জাতি যেকোনো সঙ্কটে ঐকমত্য হতে পারবে না। জাতিকে ঐকমত্যে নিয়ে আসার সুযোগ একাডেমিরই রয়েছে। জ্ঞানী বিচক্ষণব্যক্তি তা সে যে মতবাদেরই হোক না কেন, তাকে আলোচনার জন্য আমন্ত্রণ করে মঞ্চে বসার সুযোগ সৃষ্টি করতে পারলে কী এমন দোষের হতে পারে। যদিও রাজনীতির মধ্য দিয়েই একুশের চেতনা ঘনীভূত হয়েছে; সেটা ছিল একটা প্রেক্ষাপট। এখন বাংলা ভাষাকে দেশের রাজনীতি থেকে মুক্ত রাখতে হবে। বাংলা ভাষা আগ্রাসনের যে শিকার হয়েছে সেটা অনুধাবন করতে হবে। একুশে গ্রন্থমেলাকে সমগ্র দেশব্যাপী ছড়িয়ে দেয়ার দরকার রয়েছে।
দেশের প্রত্যেকটি জেলা সদরে একুশে ফেব্রুয়ারিকে মাঝখানে রেখে আগে- পেছনে তিন দিন করে মোট এক সপ্তাহের জন্য একাডেমির উদ্যোগে ‘একুশে গ্রন্থমেলা’র আয়োজন করা যেতে পারে।
এই মেলা বইপড়া আন্দোলনের অংশ হতে পারে। জ্ঞানের কদর বাড়াতে চাইলে বইমেলা ও লেখক প্রকাশকে প্রণোদনার অন্তর্ভুক্ত করার মানসিকতা সৃষ্টি করতে পারলে লেখক-পাঠক- প্রকাশকে এক সুতাতে গাঁথা সহজ হতে পারে। বাংলাদেশ টেলিভিশন মেলাকে দীর্ঘ সময় দিতে পারে। ক্লান্ত দর্শনার্থীরা যাতে বিশ্রাম নিতে পারে সেজন্য মেলার অভ্যন্তরে চেয়ার-বেঞ্চের যথেষ্ট ব্যবস্থা থাকলে দর্শনার্থী নিজেকে জিরিয়ে নিতে পারেন। সেখানে চা-কফির ব্যবস্থা থাকলে মন্দ হয় না, তবে খেয়াল রাখতে হবে সেগুলোতে বাণিজ্যমেলার মতো যেন গলাকাটা দাম রাখা না হয়। বিশুদ্ধ সুপেয় পানির ব্যবস্থা করলে মেলার আভিজাত্য অক্ষুণœ থাকতে পারে। মেলার পরিবেশকে ঠিক রাখতে নিরাপত্তার ব্যাপারে কোনো আপস নেই।
সার্বক্ষণিক পুলিশি মনিটরিংয়ের ভেতর মেলাকে রাখতে হবে এবং মেলাকে সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় নিয়ে তা সবসময় পর্যবেক্ষণের জন্য লোক নিয়োগ করতে পারলে নিরাপত্তার বিষয়ে মানুষ আশ্বস্ত হতে পারে। আশা করা যায়, এবারের মেলাতে সর্বাধিক নতুন বই প্রকাশিত হবে এবং পর্যাপ্ত পাঠক সমাবেশের মধ্য দিয়ে মেলা সাড়ম্বরে এগিয়ে যাবে।


আরো সংবাদ



premium cement
ফিলিপাইনে ব্রহ্মস পাঠাল ভারত, ৩৭৫ মিলিয়ন ডলারের চুক্তি চীনের মোকাবেলায় নতুন ডিভিশন ভারতীয় সেনাবাহিনীতে! আবারো চেন্নাইয়ের হার, ম্লান মোস্তাফিজ 'কেএনএফ' সন্ত্রাস : সার্বভৌম নিরাপত্তা সতর্কতা অর্থনীতিতে চুরি : ব্যাংকে ডাকাতি পাকিস্তানে আফগান তালেবান আলেম নিহত যুক্তরাষ্ট্রের সাহায্য না করলে এ বছরই রাশিয়ার কাছে হারতে পারে ইউক্রেন : সিআইএ প্রধান রাশিয়ার সামরিক শিল্পক্ষেত্রে প্রধান যোগানদার চীন : ব্লিংকন ইরাকে সামরিক ঘাঁটিতে 'বিকট বিস্ফোরণ' শেখ হাসিনা সব প্রতিবন্ধকতা উপড়ে ফেলে দেশকে এগিয়ে নিয়ে চলেছেন: পররাষ্ট্রমন্ত্রী গাজায় ইসরাইলি গণহত্যা বন্ধে বিশ্ববাসীকে সোচ্চার

সকল