২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

কেউ ভোলে না কেউ ভোলে

-

[পূর্ব প্রকাশের পর]

রংপুর বেতারে থাকাকালীন ঘটনা। তোজাকর আলী সাহেব রংপুর শহরে বাস করেন। চাকরি করেন নীলফামারীতে। সহকারী আনসার এডজুটেন্ট। গান লিখেন। আমার সাথে পরিচয় হলো। বাড়িতে নানান ধরনের গোলাপের চাষ করেন। খুব শৌখিন মানুষ। পরোপকারী। মিশুক। তাঁর বাড়িতে দু-একবার চা-চক্রে গিয়েছি। সেই সূত্র ধরে আমাকে একদিন অনুরোধ করেন, তাঁর বাসায় কুষ্টিয়ার মেহেরপুর থেকে একটি স্কুল-পড়–য়া মেয়ে বেড়াতে এসেছে। তাঁর বাবা মেহেরপুর হাসপাতালের কম্পাউন্ডার। মেয়েটি বেশ ভালো গান গায়, আমাকে একদিন শুনতে যেতে হবে। বেতারের চাকরিতে একটা অলিখিত নিয়ম ছিল যে কারো বাসায় গিয়ে গান বা বাজনা শোনা যাবে না। গান শোনার পরই অডিশনের অনুরোধ আসবে। সুতরাং এ ধরনের জটিলতা পরিহার করে চলাই শ্রেয়। আমি বেতারের অলিখিত নিয়ম প্রতিপালনের কথা জানিয়ে আমার অপারগতার কথা বললাম। তিনি ব্যথিত হলেন বুঝলাম। ওদিকে আমার দিক থেকে একটা নৈতিক দায়বদ্ধতা ছিল তাঁর কাছে। আমি তখন রংপুরে একাকী থাকি। একবার দারুণ অসুখে পড়েছিলাম। তখন তিনি, তাঁর স্ত্রী এবং তাঁর প্রবেশিকা পরীক্ষার্থিনী কন্যার সেবা-শুশ্রƒষায় আরোগ্য লাভ করেছিলাম। ফলে তাঁদের কাছে আমি কৃতজ্ঞতাপাশে আবদ্ধ ছিলাম। অবশেষে অনেক ভেবেচিন্তে বেতারের অলিখিত নিয়ম ভঙ্গ করে তাঁর বাসায় আগত স্কুলপড়–য়া মেয়েটির গান শুনতে গেলাম। সালোয়ার কামিজ পরিহিত ছোটখাট মেয়েটি হারমোনিয়াম বাজিয়ে এক এক করে অনেকগুলো গান শোনালো। আমি মেয়েটির গলার সুর শুনে অবাক হয়ে গিয়েছিলাম। কী চমৎকার গলা! আমি আরেক নিয়ম ভঙ্গ করলাম। পরের দিন তাকে বেতারে নিয়ে গানের অডিশন নেয়ালাম। অডিশন পাশ করল। কিছুদিন পর রংপুর জেলার পুরাতন জেলা প্রশাসকের বিদায় ও নতুন জেলা প্রশাসকের আগমন উপলক্ষে এক সঙ্গীতানুষ্ঠানের আয়োজন করা হলো। সেই অনুষ্ঠানে বেতারের পক্ষ থেকে সেই মেয়েটিকে গান পরিবেশনের জন্যে চুক্তিপত্রের মাধ্যমে আনা হয়েছিল। সেটাই ছিল মেয়েটির বেতারে প্রথম অনুষ্ঠান। বেতাঁর মুখপত্র ‘এলান পাক্ষিক পত্রিকায় মেয়েটির ছবিও ছাপা হয়েছিল। সেদিনকার স্কুলপড়–য়া মেয়েটির নাম আজকের লালন গানের প্রথিতযশা জনপ্রিয় শিল্পী ফরিদা পারভিন।
একই ধরনের ঘটনা ঘটেছিল চট্টগ্রামে। আঞ্চলিক পরিচালকের দায়িত্ব নিয়ে। চট্টগ্রাম বেতারে যোগদান করেছি ১৯৭৯ সালে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেন ড. আবু হেনা মোস্তফা কামাল। ফজলুল হক মুসলিম হলে শিক্ষাজীবনে একসাথে বসবাস করেছি। আমার সহপাঠী। তা ছাড়া পরে আমি যখন বেতারে চাকরি করি তখন তিনি বেতারে আধুনিক গান গাইতেন। তাছাড়া, গীতিকার হিসেবে বেতারের তালিকাভুক্ত ছিলেন। প্রচুর জনপ্রিয় গানের রচয়িতা। চট্টগ্রাম বেতারে তখন তাঁর ছোট ভাই আবুল হায়াত মোহাম্মদ কামাল সহকারী আঞ্চলিক পরিচালক হিসেবে কর্মরত। একদিন সন্ধ্যায় আবুল হায়াতকে নিয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ড. আবু হেনা মোস্তফা কামালের সঙ্গে দেখা করতে গেলাম। দীর্ঘদিনের পরিচয়। বন্ধু হিসেবে বেশ ঘনিষ্ঠতা। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রফেসার্স কোয়ার্টারে থাকেন। টেলিফোনে যোগাযোগ করে দেখা করতে গেলাম। আন্তরিক অভ্যর্থনা ও আপ্যায়ন এবং গল্পগুজব হলো দীর্ঘক্ষণ। বিদায় নেয়ার আগে আবু হেনা মোস্তফা কামালের অনুরোধ, তাঁর বড় ছেলের গান শুনে যেতে হবে এবং কেমন গান গায় সে ব্যাপারে মতামত দিতে হবে। মহা সমস্যায় পড়লাম। রংপুরের মতোই অবস্থা।
বাকি অংশ আগামী সংখ্যায়

 


আরো সংবাদ



premium cement
আবাহনী-মোহামেডান ম্যাচে মারামারি, মাঠ ছেড়ে উঠে গেল সাদা-কালোরা কৃষক যাতে ন্যায্যমূল্য পান, সেভাবেই ধানের দাম নির্ধারণ করা হবে : কৃষিমন্ত্রী চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে সিএনজি ও বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ২, আহত ৪ ভান্ডারিয়ায় ঐতিহ্যবাহী ঘোড়া দৌড় প্রতিযোগিতা দেখতে দর্শনার্থীদের ঢল তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে ৭ দিন স্কুল বন্ধের দাবি চাটমোহরে ঐতিহ্যবাহী ঘোড়া দৌড় প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত বিএনপি সাম্প্রদায়িক শক্তি, এদের রুখতে হবে : ওবায়দুল কাদের সাদিক এগ্রোর ব্রাহামা জাতের গরু দেখলেন প্রধানমন্ত্রী ভারতে লোকসভা নির্বাচনে প্রথম ধাপে ভোট পড়েছে ৬০ শতাংশ সারা বিশ্ব আজ জুলুমবাজদের নির্যাতনের শিকার : ডা. শফিকুর রহমান মিয়ানমারের ২৮৫ জন সেনা ফেরত যাবে, ফিরবে ১৫০ জন বাংলাদেশী : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

সকল