২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

কবিতা, পাঠক এবং কবি

-

মানুষ ভাষার অধীন। ভাষার নানা বর্ণিলতার ভেতর মানুষের জগৎ ও জীবনপ্রবাহ। ভাষা বিভ্রমাত্মক কিন্তু স্থবির নয়, গতিময়তা তার মৌলিক। ভাষার গতিময়তা স্পষ্ট হয়ে ওঠে ব্যক্তির প্রকাশ ভঙ্গিমায়। সাহিত্য তার উদাহরণ। শিল্প-সাহিত্যের প্রকৃতিতে কবিতা একটি বিশেষ বিষয় যেখানে ভাষার ব্যবহার কবির সামর্থ্যানুযায়ী সর্বোচ্চ তবে অসীম নয়। কবিতায় ব্যবহৃত ভাষা সাধারণ সুর-তাল-লয়ের সমন্বিত রূপ মনে হলেও এর অন্তরে রয়ে যায় বিশেষ কোনো অর্থ যা তাল-লয়-ছন্দে দোলায়িত হয় মনোজগতে। প্রচলিত ছন্দহীন নিরেট গদ্যও ধারণ করে উচ্চারণের ছন্দ। সে কারণে পাঠে পাঠকের নিবিষ্টতা প্রয়োজন। যতিগুলোতেও মনোযোগ দরকার। মনোযোগী পাঠক সাধারণ অর্থ থেকে যতক্ষণ পর্যন্ত বিশেষ অর্থ অনুসন্ধানে নিজ অনুভূতিকে দূর তলে প্রবেশ ঘটাতে না পারেন, ততক্ষণ বাস্তবে একটি কবিতা তার দ্যোতকতা নিয়ে বিশেষ হয়ে ওঠে না। সঙ্গত কারণে কবিতা দাবি করে পাঠকের গভীর মনোনিবেশ। কারণ কবিতা একটি বিষয়ের ইমেজ বা অনুকরণ। পাঠকের আবেগ কবিতার সাথে যুক্ত হয় এবং পাঠান্তে নতুন একটি কবিতায় রূপলাভ করে। সে ক্ষেত্রে পাঠকও একটি নীরব কবিতার রূপকার এবং কবিতার অর্থকে তার দূরকে এবং কবির না বলা অনুপ্ত কথাকে উপ্ত করে মুক্তি দেয়।
কবিতায় মনকে বিষয়রূপী করেন কবি, আবার বিষয়কে মনোরূপী মনলাগোয়া করে উপস্থাপনও করেন কবি। স্বাভাবিক পর্যায়ে একজন পাঠক যতক্ষণ না বিষয়ে বিস্তৃত হয়ে বিচরণ করতে অপারগ থাকেন কিংবা দলবাজি বা সুবিধাবাজির মোহে মোহাক্রান্ত হয়ে গণ্ডিবদ্ধ পাঠে নিজকে পাঠলগ্ন করেন, তখন তার কাছে কবিতার মূল অনুনমোচিত থাকে। কারণ কবিতায় যে ভাষা ব্যবহৃত হয় তা বাহুল্যবর্জিত এবং প্রচলিত অর্থকে দর্শন অভিজ্ঞতার নিকটবর্তী করে। তাই কবিতার দৃশ্যমানতায় যে স্থিতি একজন সাধারণ পাঠকের কাছে, একজন অনুসন্ধানী পাঠক আবিষ্কার করেন ভিন্ন কিছু যা তার ভেতর থেকে দেখা। আর তখনই কবিতা হয়ে ওঠে বর্ণিল নানা রঙা পেখম মেলা ময়ূরের মতো। যদিও একটি কবিতাকে ভেতর থেকে দেখা এবং বাইর থেকে দেখায় এই পার্থক্য তা কিন্তু ভাষার বিভ্রমাত্মকতার কারণেই। কারণ ‘ভালোবাসা’ একটি শব্দ বহুল চর্চিত, ব্যবহৃত এবং দয়িত-দয়িতার প্রগাঢ় উচ্চারণ, কিন্তু এখানে শব্দটি অন্য কোনোভাবে কবিতায় ব্যবহৃত হয়ে এই দুইয়ের ব্যবহার সীমাকে অতিক্রম করে বিশ্বময়তার রূপ উপস্থাপন করে একজন পাঠকের কাছে। যখন কোনো কবি বলেন, ‘আমরা একত্রে আছি বইয়ের পাতায়’ তখন কেবল একজন পাঠক এবং একটি বইয়ের সীমায় উপস্থিত থাকে না পঙ্ক্তিটি বরং পরস্পরতাকে পাঠ অর্থাৎ বোঝা উপলব্ধি করা, স্মরণ করা, স্মৃতিকে আরো স্মৃতিময় করে চিরময়তার দিকেই তার অর্থকে প্রসারিত করে এবং প্রস্তর অন্তর বিগলিত করার এক অনুভূতির আবেশ ছড়িয়ে দেয় জীবন পাঠে এবং অন্তরঘন প্রেমের আস্বাদ এনে দেয় পাঠকের মনে। অথচ ভাষার সাধারণ আচরণে এই পঙ্ক্তিতে ব্যবহৃত শব্দগুলো আমাদের প্রতিদিনের এবং কোনো শব্দই গুরুগম্ভীর নয়, অর্থ নিষ্কাশনে অভিধানেও যেতে হয় না, আবার প্রত্যেকেরই রয়েছে চলমান অর্থ, কিন্তু তার কোনোটাই আর সামগ্রিকতায় ছিন্ন হয়ে নেই; হয়ে উঠেছে এমন এক অনুভূতি যাকে পাঠক অনুভব করতে পারেন নিজের মধ্যে যৌক্তিক পাঠাবেগে। সে কারণে কবিতার পাঠককে কবিতা উপলব্ধির প্রশিক্ষিত অভ্যাস গড়ে নিতে হয়, যেমন দর্শনকে বুঝতে হলে দর্শন পাঠ ও পাঠপ্রশিক্ষণ আবশ্যক। এ হলো কবিতা নিয়ে বিশেষ বলা, তাই বলে কি সাধারণ পাঠে কবিতা নিষিদ্ধ হবে? উত্তর সরাসরি না, প্রত্যেক মানুষের কতগুলো কমন বোধজ্ঞান রয়েছে, যা সে লাভ করেছে সামাজিক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে, যেমন তার জন্মের পর মা-বাবা, প্রতিবেশী, রাষ্ট্র ও সমাজ তাকে যে জ্ঞান পাঠে সামর্থ্য দিয়েছে, তা সবার ক্ষেত্রেই ঘটে কমবেশি পাঠগ্রহণের সামর্থ্যরে মধ্যে, কিন্তু বিশেষ কিছু ব্যক্তির মেধা ও মননে, আবেগে থাকে। থাকে রসায়নের ভিন্নতাও। সে ক্ষেত্রে অধিক মননশীল পাঠক একটি কবিতা যেমনভাবে বিস্তৃত করে পাঠে নেবেন কিংবা অন্য যেকোনো বিষয়ে, অন্য পাঠক নেবেন বিবৃতির বিস্তৃতির আবেগ থেকে, গভীর থেকে হয়তো নয়। এখানেই কবির সাথে দুই ধারার পাঠকের পরিচয় ঘটে তার অজ্ঞাতে এবং দুই রকম অর্থদ্যোতকতায় কবিতাটি টিকে বা বিলীন হয়ে যায়।
দার্শনিক হাইডেগারের মতে, ‘ধারণাগত বিশ্লেষণ বাস্তব অস্তিত্ব সম্বন্ধে যথার্থ ধারণা দেয় না, তিনি মনে করতেনÑ অস্তিত্বের মধ্য দিয়ে আমরা সত্তার কাছাকাছি যেতে পারি।’ কবিতায় আনন্দ তার বাস্তব সত্তা অনুসন্ধানে। প্রাত্যহিক জীবনের কথাবার্তায় কবিতার শরীর গঠিত হলেও এতে থাকে এমন কতগুলো অর্থদ্যোতক পঙ্ক্তিমালা যা জীবনের বাস্তবতাকেই অনুসন্ধিৎসু মনেবৃত্তিকে আকর্ষিত করে, যদিও তা সব পাঠকের ক্ষেত্রে ঘটে না। কারো কারো ক্ষেত্রে বিরাজমান থাকে, আর তখনই কবিতাটি একটা সার্থকতাকে স্পর্শ করতে পারে। হাইডেগার বলেন, ‘কবিতা নতুন ভাষার সৃষ্টি করে, কারণ কবিতায় দার্শনিকতা রয়েছে। তিনি মনে করতেন, দর্শনকে যুক্তি ও যুক্তিবিদ্যার বিপরীতে একটি নতুন চিন্তা-পদ্ধতি গড়ে তুলতে হয়। তবে এ কাজে দার্শনিকের নিকটতম বন্ধু হলো কবি।’
হাইডেগার দর্শন ও কাব্যকে অনেক কাছাকাছি বলে মনে করতেন। কবিতার শুরু হয় ভাষাহীন অবস্থা থেকে যেমন একটি শিশুর জীবন শুরু হয় আগামীর বাস্তবতার শূন্যতা থেকে এবং তার পর নানা সময়ের বাস্তবতা তার আয়ত্বাধীন হয়, কবিতাও শুরু হয় ভাষাহীনতা থেকে এবং শেষাবধি তাকে ভাষার মধ্য দিয়ে ভাষাকে গড়ে নিতে হয়; যাকে বলে নির্বাচিত শব্দাবলি যা ঘষামাজা, পেলবপূর্ণ অর্থদ্যোতক ‘টেন্টড ল্যাঙ্গুয়েজ’। যা বোধ উপযোগী নতুন অর্থের দ্যোতকতা নিয়ে ভাষার ভুবনে চলমান এবং ছুঁঁয়ে দেয় পাঠকের মন। তাই কবিতা ভাষাহীন অবস্থা থেকে ভাষায় উত্তরণের একটি ক্রিয়া যা সামগ্রিকতায় আমাদের দৈনন্দিনতাকে ছাপিয়ে চিন্তার অগ্রগামীতাকে স্পর্শ করে এবং নতুন চিন্তার অনুষঙ্গ তৈরি করে। তাই কবি ও পাঠক একটি কবিতার মধ্যে অনেক দূরের এবং আবার অনেক কাছের হয়ে উঠতে পারে।
বিষয়ের রূপ নির্মাণে কবির যে অস্থিরতা তা মাতৃ প্রসবের এক অস্থির আকুতির মতো। বিষয় যেমন রূপকে নির্মাণ করে, তেমনি রূপ দিতে দিতে বিষয়ও রূপকে নিয়ন্ত্রণ করে। সাধারণ থেকে বহুবিধ বিষয়ের পরিধিকে স্পর্শ করতে পারে কবিতা এবং এভাবেই বিষয়ীগত আনন্দকে রূপময়তার মধ্য দিয়ে নতুন চিন্তাকে উসকে দিতে পারে এবং কবিতা পরিপাশির্^কতাকে পরিবেশ-পরিস্থিতিকে সাথে নিয়ে যুক্ত হয় আকাক্সক্ষা নির্মাণ জগতে। অবশ্য খুব কম কবিতাই নতুন স্বপ্ন নির্মাণে পারঙ্গম থাকে। কবির সঙ্কীর্ণতা, বোধহীনতা, সমাজ উদাসীনতা, প্রাপ্তির লোলুভতা, মেরুদণ্ডহীনতা, দালালি মনোবৃত্তির কারণে এবং পুরনো চিন্তা ক্লৈব্যতার কারণে। এ কারণে বেশির ভাগ কবিতা নিছক কতগুলো শব্দের দলিত মাখানো পিণ্ড, তার বাড়তি-কমতি নেই, বহুস্বরের সম্মিলন নেই শুধু সঙ্কীর্ণ এক মনোবৃত্তি দিয়ে বিষয়ের রূপ নির্মাণ। অতীতের মানুষ যেমন মানুষ আর বর্তমানের মানুষও মানব প্রজাতিরই ধারাবাহিকতার। কিন্তু এর মধ্যে যে বিরাট পরিবর্তন তা আকার-আকৃতিতে নয়, বরং চিন্তার ক্ষেত্রে বদলানো জীবনযাত্রার ক্ষেত্রে, অভ্যাস ও রুচির ক্ষেত্রে, জ্ঞান-বিজ্ঞান, ইতিহাস চেতনার ক্ষেত্রে। আমাদের কবিতা সামন্তীয় মনোবৃত্তির এবং ঔপনিবেশিক ও উত্তর ঔপনিবেশিক। স্বাভাবিক যে কবিতাও সময়ের বিবর্তনে গঠনে অতীতের নানন্দিক বিষয়াবলির মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। দয়িত-দয়িতার পারস্পরিক কামনা-বাসনাতে সীমিতও নয়। আজকের কবিতা সত্যকে অনুসন্ধানের এবং উপলব্ধির ভাষায় উপস্থিত হচ্ছে এবং চেতনায়িত করছে অস্তিত্ব সঙ্কট। আজকের আনন্দ কেবল অতীতের সামন্তীয় সমাজের যৌনতা, দৈহিক চাহিদাকে সম্বল করে বিষয়গত হওয়ার সীমায় দাঁড়িয়ে থাকতে পারছে না। বরং আকাক্সক্ষার উচ্চতম রূপ বিকাশে মননবদ্ধ। আজকের কবিতার বিষয় যৌথ হয়ে যায় সমাজ রাজনীতিকে সাঙ্গীকরণের মাধ্যমে, নতুন মানুষের নতুন চাহিদা তৈরি এবং পরিপূর্ণ করার তাগিদে। স্বাভাবিকভাবে তা ভাষার বিদ্রোহাত্মক রূপকেই অবলম্বন করে। তাই কবিতা বিপ্লবের, বিদ্রোহের, মন-বিকাশের, সমাজ রাষ্ট্র পরিবর্তনের হাতিয়ার হয়ে মানুষের চাহিদাকে শিল্পের মোড়কে উপস্থাপন করছে। নিছক ছন্দ দোলা আর পরাজীবনের বিবৃতি নয়, বরং অস্তিত্বকে পুনঃস্থাপনের হাতিয়ার হয়ে অন্তর্গত এক বিদ্রোহের রূপায়ন। তাই কবিতায় থাকে নতুন জীবনের অনুসন্ধান, জীবনযাত্রার সাদৃশ্য-বৈশাদৃশ্য, থাকে চিন্তার বিস্তৃতময় প্রাঙ্গণ, উল্ফন, আকস্মিকতা, ব্যঙ্গ-বিদ্রƒপ, থাকে হঠকারিতা, সংহতির ছেদ এবং বিজ্ঞান ও ইতিহাস মনষ্কতা।
চেতনার বিদ্রোহ নানাভাবে বিস্তৃত থাকে আজকের কবিতায়, অভ্যাস ও রুচির বিরুদ্ধে থাকে বিদ্রোহ বদলের হাওয়া। এভাবেই একটি কবিতা ভাষাহীন অবস্থা থেকে সচল একটি ভাষাকে উপজীব্য করে চিন্তার বৃত্তকে ছেদ করে। এসব বয়ানে টেক্সটগুলো কখনো কখনো এলোমেলো হয়ে উঠতে পারে। কিন্তু কবির বুননে তার একটি সংহতি থাকে কবিতা কাঠামোর মধ্যেই, আর সেটাই হয় কবিতাটিতে প্রবেশের দরজা। কখনো কখনো দেখা যায় ভাষ্যগুলো আসছে পরম্পরাহীন, কিন্তু সামগ্রিক কাঠামোতে তা ফুটে আছে পঙ্ক্তি হয়ে অর্থকে দ্যোতিত করছে গঠনের মাত্রায়। গঠন ক্রিয়ায় এ জন্য কবিকে মনোযোগী হতে হয় এবং পাঠককেও সূত্রগুলোর একীভূতকরণ ক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। কখনো কখনো একটি কাব্য শরীর বহু চিন্তার সমন্বিত রূপ হয়ে একই কাঠামোর অন্তর্ভুক্ত হতে পারে একটি কবিতা হয়ে। নিছক ফ্যান্টাসিও যে ফ্যান্টাসি নয়, বরং কবির অন্তর্গত বিদ্রোহ তাকে নিজ অনুভূতি দিয়ে অনুভব করে নিতে পারলে কবিতাটির আনন্দকে একজন মনোযোগী পাঠক উপভোগ্য করে নিতে পারেন।
ভাষাকে নিয়ে যে কবিতার বিস্তৃতি; ভাষার নানাবিধ উৎকর্ষতা নির্মাণ ছাড়াও ঘটে ভাষার নতুনত্ব আবিষ্কারের কাজ। নির্জ্ঞানে যে ভাষার কাঠামো তার রূপায়ন ঘটে প্রতীকায়িত শব্দে এবং ঝঙ্কার তোলে চেতনার উপরিস্তরে। এভাবে ভাষা নিজেও নিজেকে আবিষ্কার করে, প্রমাণ করে তার ভাবশক্তির ব্যাপকতা। কবিতা কবির কাছে অর্থময়, কিন্তু কখনো কখনো পাঠকের কাছে নাগালহীন, সেটা ঘটে কবিতায় গভীর অনুসন্ধানী মনোযোগ না দেয়ার কারণে কিংবা প্রশিক্ষিত না হয়ে ওঠার জন্য। মার্কস কবিতা এবং পাঠক প্রসঙ্গে এক মন্তব্যে উল্লেখ করেছিলেনÑ ‘কবিতা বোঝার জন্য উপযুক্ত প্রশিক্ষিত পাঠক প্রয়োজন।’ তবে এ কথাও সত্য, কোনো একজন পাঠযোগ্য লোকের কাছে কবিতা আগ্রহের বিষয় নাও হতে পারে ব্যক্তি আবেগের তারতম্যের কারণে। আসলে কবিতার জন্য দরকার পরিপূর্ণভাবে একজন কবিতাপ্রিয় পাঠকের আর সেটা গড়ে ওঠে সমাজক্রিয়ার সামর্থ্যরে মধ্যে। সঙ্গতকারণে ভাষাহীন অবস্থান থেকে কবিতা ভাষাসূত্রকে অবলম্বন করে শরীর বুনন করে এবং ভাষার মধ্য দিয়ে নতুন দিগন্তে উপনীত হয়। তাই কবিতা যেমন কবির সৃষ্টি তেমনি পাঠকেরও। কারণ পাঠোদ্ধারের মধ্য দিয়ে পাঠক কবিতায় নতুন করে নতুনভাবে রচনা করেন তার আকাক্সক্ষাকে আরেকটি কবিতায়।


আরো সংবাদ



premium cement