২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

বঙ্গবন্ধুর সাহিত্য ও সংস্কৃতি মানস

-

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান (১৭ মার্চ ১৯২০-১৫ আগস্ট ১৯৭৫) নিজেকে বিন্যস্ত করেছেন ইতিহাসের খাতায় থাকা কিংবদন্তিদের মতো । তিনি ছিলেন বাংলাদেশের স্বাধীনতা নামক মহাকাব্যের ‘মহাকবি’ এবং বিশ্ব মিডিয়ার দৃষ্টিতে ‘পোয়েট অব পলিটিকস’। তিনি ছিলেন একজন ‘রাজনীতির কবি’। তাঁর জীবনকে একটি অমীমাংসিত কবিতাও বলা যায়। শুধু কবিতা কেন, তাঁর জীবনটা একটা উপন্যাস বা মহাকাব্যও বটে। তাঁর রাজনৈতিক জীবনের মধ্যেই লুকায়িত আছে গৌরবদীপ্ত সাহিত্য ও সংস্কৃতিজীবন। ১৯৭১ সালের ৫ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্রের বিবশষু ঘবংিবিবশ-এ বলা হয়, ‘রাজনীতির প্রকৌশলী নন মুজিব, মুজিব হলেন রাজনীতির কবি, বাঙালির স্বাভাবিক প্রবণতা প্রায়োগিক নয়, শৈল্পিক। তাই মনে হয়, বাংলাদেশের সব মানুষ, শ্রেণী ও মতাদর্শকে একসূত্রে গাঁথা হয়তো মুজিবের মতো রাজনৈতিক কবির পক্ষেই সম্ভব।’
বঙ্গবন্ধু জীবদ্দশায় প্রচুর শিল্প-সাহিত্যের বই পড়তেন। এর প্রমাণ পাওয়া যায় তাঁর লেখা ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ (২০১২) এবং ‘কারাগারের রোজনামচা’ (২০১৭) দুটি গ্রন্থ থেকে। এ ছাড়া ‘নয়াচীন’ শিরোনামের অপ্রকাশিত ভ্রমণ কাহিনী এবং আগরতলা মামলার বিবরণসমৃদ্ধ রচনাগুলো পড়লে। আরো প্রমাণ পাওয়া যায় তাঁর বিভিন্ন ভাষণ, বক্তৃতা ও চিঠিপত্র থেকে।
বঙ্গবন্ধুর লেখা দু’টি গ্রন্থ ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ ও ‘কারাগারের রোজনামচা’ ছাত্রনেতা শেখ মুজিবুর রহমান যে সাহিত্য ও সংস্কৃতি ক্ষেত্রের বাস্তব কর্মকাণ্ডে নিয়োজিত হয়েছিলেন, তারও প্রমাণ আছে। তিনি যখন সোহরাওয়ার্দী ও আবুল হাশিম সাহেবের সাথে মুসলিম লীগের প্রগতিশীল গ্রুপের সাথে কাজ করছিলেন, তখন তাঁদের নতুন, গণমুখী রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড প্রচার ও প্রকাশের লক্ষ্যে একটি সাপ্তাহিক পত্রিকা প্রকাশ করেন। এ সম্পর্কে তাঁর রচনায় পাওয়া যায়Ñ
‘হাশিম সাহেব নিজেই সম্পাদক হলেন এবং কাগজ বের হলো। আমরা অনেক কর্মীই রাস্তায় হকারি করে কাগজ বিক্রি করতে শুরু করলাম। কাজী মোহাম্মদ ইদ্রিস সাহেবই কাগজের লেখা পড়ার ভার নিলেন। সাংবাদিক হিসেবে তাঁর যথেষ্ট নাম ছিল। ব্যবহারও অমায়িক ছিল। সমস্ত বাংলাদেশেই আমাদের প্রতিনিধি ছিলেন। তাঁরা কাগজ চালাতে শুরু করলেন। বুদ্ধিজীবী সম্প্রদায়ের কাছে কাগজটা খুব জনপ্রিয়তা অর্জন করতে লাগল। হিন্দুদের মধ্যেও অনেকে কাগজটা পড়তেন। এর নাম ছিল মিল্লাত’ (অসমাপ্ত আত্মজীবনী, পৃষ্ঠা-৪০)।
বঙ্গবন্ধুর মানস নির্মাণে ইতিহাসের দিকে খেয়াল করলে দেখা যায়, তরুণ রাজনৈতিক কর্মী শেখ মুজিব ১৯৩৮ সালে গোপালগঞ্জ সফরে আসা তৎকালীন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী এ কে ফজলুল হক ও শ্রমমন্ত্রী হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর সংস্পর্শে আসেন। সেই সূত্রে কলকাতায় তাঁর ছাত্রজীবনে সোহরাওয়ার্দী ও আবুল হাশিমের নেতৃত্বে কাজ করার যে সুযোগ অঙ্গীকারদীপ্ত ও প্রতিভাবান শেখ মুজিবের ঘটে, তার বহুমুখী গুরুত্ব ও তাৎপর্য আছে। এই সুবাদে তৎকালীন উপনিবেশবিরোধী অসহযোগ আন্দোলনের শীর্ষ নেতা মহাত্মা গান্ধীর সাথে যেমন তাঁর সাক্ষাতের সুযোগ হয়, তেমনি সংস্কৃতি ক্ষেত্রের শীর্ষ পুরুষ কবি কাজী নজরুল ইসলাম, হুমায়ুন কবির, অধ্যক্ষ ইব্রাহীম খাঁ প্রমুখের সাথেও পরিচয় ঘটে। সাহিত্য ও সংস্কৃতি ক্ষেত্রে এ সব বিশিষ্টজনের সাথে শ্রদ্ধা, ভালোবাসা ও সখ্যের সুবাদে তাঁর রাজনৈতিক চিন্তার সাথে সমন্বয় ঘটে সাহিত্য-সংস্কৃতিরও। উদাহরণস্বরূপ তাঁর লেখা থেকে একটা অংশ উদ্ধৃত করা যায়Ñ
‘একটা ঘটনার দিন-তারিখ আমার মনে নাই, ১৯৪১ সালের মধ্যেই হবে, ফরিদপুর ছাত্রলীগের জেলা কনফারেন্স, শিক্ষাবিদদের আমন্ত্রণ জানান হয়েছে। তাঁরা হলেনÑ কবি কাজী নজরুল ইসলাম, হুমায়ুন কবির, ইব্রাহীম খাঁ সাহেব। সে সভা আমাদের করতে দিল না, ১৪৪ ধারা জারি করল। কনফারেন্স করলাম হুমায়ুন কবির সাহেবের বাড়িতে। কাজী নজরুল ইসলাম সাহেব গান শোনালেন। আমরা বললাম, এই কনফারেন্সে রাজনীতি-আলোচনা হবে না। শিক্ষা ও ছাত্রদের কর্তব্য সম্বন্ধে বক্তৃতা হবে’ (অসমাপ্ত আত্মজীবনী, পৃষ্ঠা-১৫, ১৬)।
উপর্যুক্ত দুটি ঘটনা থেকে বোঝা যায়, তরুণ বয়সেই শেখ মুজিবুর রহমানের মধ্যে একটি সংস্কৃতিসচেতন মন ও সাহিত্যিক সত্তা গড়ে ওঠে।
বঙ্গবন্ধুর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ (২০১২) এবং ‘কারাগারের রোজনামচা’ (২০১৭) দুটি বই-ই বিপুল জনপ্রিয়তা অর্জন করে। বাংলাদেশে আর কোনো রচনা এত অল্প সময়ে এমন জনপ্রিয়তা অর্জন করেনি। বইগুলোতে আছে বঙ্গবন্ধুর ব্যক্তিজীবন, রাজনৈতিক জীবনের নানা ঘটনা ও অনুষঙ্গ। লক্ষ করার বিষয় হলো, দুটি বইয়েই তাঁর ভাষার গাঁথুনি বেশ প্রাঞ্জলÑ
‘আমার জন্ম হয় এই টুঙ্গিপাড়া শেখ বংশে। শেখ বোরহানউদ্দিন নামে এক ধার্মিক পুরুষ এই বংশের গোড়াপত্তন করেছেন বহুদিন পূর্বে। শেখ বংশে যে একদিন সুদিন ছিল, তার প্রমাণস্বরূপ মোগল আমলের ছোট ছোট ইটের দ্বারা তৈরি চকমিলান দালানগুলো আজও আমাদের বাড়ির শ্রীবৃদ্ধি করে আছে। বাড়ির চার ভিটায় চারটা দালান। বাড়ির ভিতরে প্রবেশের একটা মাত্র দরজা, যা আমরাও ছোট সময় দেখেছি বিরাট একটা কাঠের কপাট দিয়ে বন্ধ করা যেত। একটা দালানে আমার এক দাদা থাকতেন। এক দালানে আমার এক মামা আজও কোনোমতে দিন কাটাচ্ছেন। আর একটা দালান ভেঙে পড়েছে, যেখানে বিষাক্ত সর্পকুল দয়া করে আশ্রয় নিয়েছে। এই সকল দালান চুনকাম করার ক্ষমতা আজ তাদের অনেকেরই নাই। এই বংশের অনেকেই এখন এ বাড়ির চারপাশে টিনের ঘরে বাস করেন। আমি এই টিনের ঘরের এক ঘরেই জন্মগ্রহণ করি’ (অসমাপ্ত আত্মজীবনী, পৃষ্ঠা-৩)।
বাংলা ভাষা, বাংলা সাহিত্য এবং বাঙালি সংস্কৃতি ছিল বঙ্গবন্ধুর ধ্যান-জ্ঞান। তাঁর অন্তরে গাঁথা ছিল বাংলা অক্ষর, এক একটি বাঙালির জীবন। বাঙালির জীবনে স্বাধীনতার আলোর জন্য তিনি নিপতিত হয়েছিলেন পাকিস্তানি কারা-অন্ধকারে। কারাকক্ষেও তিনি খুঁজে ফিরেছেন বাংলা বই ও পত্রিকা। এর বিবরণ লিপিবদ্ধ আছে কারাগারের রোজনামচায়Ñ
‘প্রাণটা আমার হাঁপাইয়া উঠছিল, সহ্য করা কষ্টকর হয়ে পড়েছিল। বাংলা বই পাওয়ার উপায় নাই। অফিসার মেসের যে ছোট লাইব্রেরি আছে, তাতে কোনো বাংলা বই নাই, সমস্তই প্রায় ইংরেজি ও উর্দুতে। হেডকোয়ার্টার লাইব্রেরি থেকে মেজর গোলাম হোসেন চৌধুরী আমাকে
দু-একখানা এনে দিতেন। ভদ্রলোকও খুব লেখাপড়া করতেন। কোনো বাংলা বই বোধ হয় সেখানে নাই। খবরের কাগজ পড়া নিষেধ, তাই বাংলা কাগজ পড়ার প্রশ্ন আসে না।’
এভাবেই বাংলা ভাষাকে ভালোবেসেছেন বঙ্গবন্ধু, এর মধ্যে পেয়েছেন চিরকালের মুক্তিপ্রত্যাশী মানুষের দেখা। এরপর তিনি সেই ভাষা ও মুক্তিপ্রত্যাশী মানুষের স্বাধীনতার অধরা স্বপ্নকে রূপ দিয়েছেন বাস্তবে।
এ ছাড়া রবীন্দ্রনাথ ও নজরুলের এমন অনেক কবিতা যে বঙ্গবন্ধুর কণ্ঠে ও হৃদয়ে ছিল, তা তাঁর উত্তরকালের নানা রাজনৈতিক ভাষণ-বক্তৃতায়ও স্পষ্ট হয়। শরৎচন্দ্রের ‘আঁধারের রূপ’ প্রবন্ধটির কথা এসেছে কারাগারের রোজনামচায়। শহীদুল্লাহ কায়সারের ‘সংশপ্তক’ উপন্যাসটি প্রকাশিত হয় ১৯৬৫ সালে, এক বছর পর ৪ জুন ১৯৬৬ সালে কারাগারে বসে বঙ্গবন্ধু লিখছেনÑ ‘বন্ধু শহীদুল্লাহ কায়সারের সংশপ্তক বইটি পড়তে শুরু করেছি। লাগছে ভালই...।’
১ জুন ১৯৬৯-এ রাওয়ালপিন্ডিতে তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া এবং এর দুদিন পর ৩ জুন মুহম্মদ আবদুল হাই ঢাকায় এক রেল দুর্ঘটনায় প্রয়াত হন। তাঁদের মৃত্যু বঙ্গবন্ধুকে বেদনাহত করেছিল। মানিক মিয়ার ‘রাজনৈতিক মঞ্চ’ লেখার প্রতি তাঁর অনুরাগের কথা ব্যক্ত হয়েছে কারাগারের রোজনামচায়। আর অসমাপ্ত আত্মজীবনীতে বলছেনÑ ‘মানিক ভাই ইংরেজি লিখতে ভালোবাসতেন, বাংলা লিখতে চাইতেন না। সেই মানিক ভাই বাংলায় অন্যতম শ্রেষ্ঠ কলামিস্টে পরিণত হলেন। চমৎকার লিখতে শুরু করলেন।’
বঙ্গবন্ধু পল্লী গানেরও ভক্ত ছিলেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে এক ভ্রমণে গিয়ে নৌপথে আব্বাসউদ্দীনের কণ্ঠে ভাটিয়ালি গান শোনার অনুপম অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেছেন এভাবেÑ
“নদীতে বসে আব্বাসউদ্দীন সাহেবের ভাটিয়ালি গান তাঁর নিজের গলায় না শুনলে জীবনের একটা দিক অপূর্ণ থেকে যেত। তিনি যখন আস্তে আস্তে গাইতেছিলেন, তখন মনে হচ্ছিল, নদীর ঢেউগুলিও যেন তাঁর গান শুনছে। তাঁরই শিষ্য সোহরাব হোসেন ও বেদারউদ্দিন তাঁর নাম কিছুটা রেখেছিলেন। আমি আব্বাসউদ্দীন সাহেবের একজন ভক্ত হয়ে পড়েছিলাম। তিনি আমাকে বলেছিলেন, ‘মুজিব, বাংলা ভাষার বিরুদ্ধে বিরাট ষড়যন্ত্র চলছে। বাংলা রাষ্ট্রভাষা না হলে বাংলার কৃষ্টি, সভ্যতা সব শেষ হয়ে যাবে। আজ যে গানকে তুমি ভালবাস, এর মাধুর্য ও মর্যাদাও নষ্ট হয়ে যাবে। যা কিছু হোক, বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করতেই হবে।’ আমি কথা দিয়েছিলাম এবং কথা রাখতে চেষ্টা করেছিলাম।’’
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতা-উত্তর বাংলা একাডেমিতে অনুষ্ঠিত প্রথম বাংলা সাহিত্য সম্মেলনে শিল্প-সাহিত্য সম্পর্কে অত্যন্ত প্রয়োজনীয় কিছু কথা বলেছিলেন। তিনি বলেছিলেনÑ ‘শিল্প-সাহিত্যে ফুটিয়ে তুলতে হবে এ দেশের দুঃখী মানুষের আনন্দ-বেদনার কথা, সাহিত্য-শিল্পকে কাজে লাগাতে হবে তাদের কল্যাণে। সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে যে দুর্নীতি শাখা-প্রশাখা বিস্তার করছে, লেখনীর মাধ্যমে তার মুখোশ খুলে দিতে হবে।’ তিনি এই সম্মেলনে আরো বলেছিলেন, ‘জনগণই সব সাহিত্য ও শিল্পের উৎস। জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে কোনো দিন কোনো মহৎ সাহিত্য বা উন্নত শিল্পকর্ম সৃষ্টি হতে পারে না।’
বঙ্গবন্ধুর বিশ্বসাহিত্য সম্পর্কেও অগাধ জ্ঞান ছিল। ফরাসি লেখক এমিল জোলার উপন্যাস ‘তেরেসা রেকুইন’ উপন্যাসটি প্রকাশিত হয় ১৮৬৭ সালে। এর শতবর্ষ পর ১৮ জুন ১৯৬৬ সালে বাংলার কারাবন্দী নেতা শেখ মুজিবের হাতে লেখা হচ্ছে এর পাঠ প্রতিক্রিয়াÑ
“এমিল জোলার লেখা ‘তেরেসা রেকুইন’ পড়ছিলাম। সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন তিনটা চরিত্রÑ জোলা তাঁর লেখার ভিতর দিয়া। এই বইয়ের ভিতর কাটাইয়া দিলাম দুই তিন ঘণ্টা সময়।’’
মার্কিন রাষ্ট্রতত্ত্ববিদ, লেখক হেনরি ডেভিড থরোর সুবিখ্যাত রচনা সিভিল ডিসঅবিডিয়েন্স (১৮৪৯) ছিল বঙ্গবন্ধুর পাঠের আওতায়। এপ্রিল ১৯৬৭ সালে তিনি লিখছেনÑ ‘মনে রেখ থরোর কথা 'টহফবৎ ধ মড়াবৎহসবহঃ যিরপয রসঢ়ৎরংড়হং ধহু ঁহলঁংঃষু, ঃযব ঢ়ষধপব ভড়ৎ ধ লঁংঃ সধহ রং ধষংড় ধ চৎরংড়হ.'
অসমাপ্ত আত্মজীবনীতে এসেছে পঞ্চাশের দশকে চীন ভ্রমণে তুর্কি কবি নাজিম হিকমতের সাথে সাক্ষাৎ প্রসঙ্গ; গণমুক্তির আবাহন যাঁর কাব্যে তাঁর সাথে বঙ্গবন্ধু স্বভাবতই বোধ করেছেন আত্মিক মিত্রতাÑ
‘রাশিয়ার প্রতিনিধিদেরও আমরা খাবার দাওয়াত করেছিলাম। এখানে রুশ লেখক অ্যাসিমভের সাথে আলাপ হওয়ার সৌভাগ্য আমার হয়েছিল। এই সম্মেলনেই আমি মোলাকাত করি তুরস্কের বিখ্যাত কবি নাজিম হিকমতের সাথে। বহুদিন দেশের জেলে ছিলেন। এখন তিনি দেশত্যাগ করে রাশিয়ায় আছেন। তাঁর একমাত্র দোষ, তিনি কমিউনিস্ট। দেশে তাঁর স্থান নাই, যদিও বিশ্ববিখ্যাত কবি তিনি।’
পরিশেষে বলা যায়, বঙ্গবন্ধু নিবিড় জনসংযোগের মধ্য দিয়ে হয়ে উঠেছিলেন ‘রাজনীতি ও মানবতার কবি’। তিনি শিল্প-সাহিত্যে ভালোবাসতেন বলেই তার জীবন ও কর্ম নিয়ে বাংলাদেশের শিল্প-সাহিত্যে দারুণ আলোড়ন তুলতে পেরেছিলেন। শুধু তাই নয়, তাঁর সাহিত্য ও সংস্কৃতি মানস ছিল বিশ্বমানের। আর এ কারণেই তিনি নিজেকে নিয়ে গেছেন দক্ষিণ এশিয়ার মহান নেতা মহাত্মা গান্ধী, পণ্ডিত জওয়াহেরলাল নেহরু প্রমুখের মতো ভিন্নতর উচ্চতায়।


আরো সংবাদ



premium cement