১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫
`

কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা তাঁর ভূবন

-

“শ্যামাঙ্গিনী,
এতোকাল আমিও বুঝিনি,
কবিতার ক্লাশে বসে তোমাকে খুঁজেছি শুধু,
কবিতার দুধশাদা চরণ খুঁজিনি।”
... কবিতা, ‘দুধশাদা চরণ’
মুহম্মদ নূরুল হুদা।

কী অসামান্য সুন্দর ব্যঞ্জনাময় পঙ্ক্তি উঠে এসেছে তাঁর লেখায়। ষাট দশক থেকে শুরু করে আজ অবধি যে ক’জন মেধাবী কবি বাংলা কাব্য-ভুবন কাঁপিয়ে কবিতা নির্মাণে মেধার স্বাক্ষর রেখে আসছেন তাদের মধ্যে অন্যতম প্রধান তিনি। লিখে চলেছেন অনেক অনেক বেশি। বহুমাত্রিক এই কবি কেবল কবিতা রচনাই নয়, বাংলা কাব্যে সচেতন কাব্য-আন্দোলনের প্রধান সংগঠকও তিনি। বলছি জাতিসত্তার কবি মুহম্মদ নূরুল হুদার কথা।
কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা সত্তর দশকের একজন প্রথিতযশা কবি। একই সাথে তিনি কথাসাহিত্যিক, মননশীল লেখক, সাংবাদিক, কলামিস্ট, ঔপন্যাসিক ও সংগঠক। তিনি একজন শিশুসাহিত্যিকও বটে। প্রবন্ধকার, সাহিত্য সমালোচক ও অনুবাদক হিসেবেও তিনি পরিচিত। লেখালেখির সব শাখায় যাঁর অগাধ বিচরণ। ১৯৪৯ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর কক্সবাজার জেলার দরিয়া নগরের পোকখালী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা হাজী মুহাম্মদ সেকান্দর ও মা আনজুমান আরা বেগম। হাজী মুহাম্মদ সেকান্দর গ্রামের বাড়িতে মৌলভী রাখতেন, সেই মৌলভীর কাছেই কবি মুহম্মদ নূরুল হুদার হাতে খড়ি। স্কুলের পাঠ শুরু হয় পূর্ব পোকখালী প্রাইমারি স্কুল থেকে। ১৯৫৪ সালে ভর্তি হন পূর্ব পোকখালী প্রাইমারি স্কুলে। স্কুলটি বাড়ি থেকে প্রায় এক মাইল দূরে ছিল। ১৯৫৯ সালে পূর্ব পোকখালী প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পঞ্চম শ্রেণীতে মেধাবৃত্তি লাভ করেন। দরিয়া নগর ঈদগাঁও হাইস্কুল থেকে ১৯৬৫ সালে এসএসসি পরীক্ষায় কুমিল্লা বোর্ডের মানবিক বিভাগে মেধা তালিকায় দ্বিতীয় স্থান লাভ করেন। ঢাকা কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন ১৯৬৭ সালে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৭০ সালে ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্যে বিএ অনার্স এবং ১৯৭১ সালে এমএ পাস করেন তিনি। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ সংগঠনে অংশগ্রহণ করেন। মুক্তিযোদ্ধাদের সংগঠিত ও পৈতৃক সম্পত্তি থেকে সহযোগিতা প্রদান করেন।
কর্মময় জীবন শুরু ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তালশহর কলেজে ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্যের অধ্যাপনা দিয়ে। ঢাকা শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেন ইংরেজি বিভাগে। ১৯৭৩ সালে বাংলা একাডেমিতে সহকারী পরিচালক পদে যোগদান করেন। এখানেই বিকশিত তাঁর শ্রেষ্ঠ সময়। ১৯৯৬ সালে নজরুল ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক নিযুক্ত হন। বাংলা একাডেমিতে ২০০২ সালে প্রত্যাবর্তন করে একাডেমির পরিকল্পনা, প্রশিক্ষণ ও পাঠ্যপুস্তক বিভাগের দায়িত্ব পালন করেন। নজরুল ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক হিসেবে নজরুল জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় কমিটির সদস্যসচিব এবং দেশে-বিদেশে নজরুল চর্চা ও প্রসারে ব্যাপক ভূমিকা পালন করেন। বাংলা একাডেমি আয়োজিত একুশে বইমেলার সদস্যসচিব হিসেবে একাধিকবার সফলতার সাথে দায়িত্ব পালন করেন। চাকরি থেকে অবসর গ্রহণের পর তিনি ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিভাগের প্রফেসর, বিভাগীয় প্রধান ও মানবিক অনুষদের ডিন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা সম্পর্কে আমরা
একটা সমান্তরাল প্রতিধ্বনি তাঁর কবিতা পাঠ করলে উপলব্ধি করতে পারি। তাঁর কবিতায় আছে দীপ্তির মনন, সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম যুক্তির কল্পনাময় প্রতীক ও রহস্যময় ভাষণ এবং বহুমাত্রিকতা। কবিতার চরণে চরণে তিনি তুলে আনেন প্রকৃতির সূক্ষ্মতর বিষয়। কবিতা লিখতে হারিয়ে যান নিজের শৈশব-কৈশোর বেলায়। কথাসাহিত্য, প্রবন্ধ, ছোটগল্প লেখক এবং নতুন কাব্য আন্দোলনে তিনি একজন প্রধান পৃষ্ঠপোষক। তাঁর লেখা প্রবন্ধ পড়তে শুরু করলে মনে হয় তিনি যেন প্রবন্ধেই সেরা। আবার ছোটগল্পে বা শিশুদের জন্য যখন লিখেন তখন নিজেই যেন সেই চরিত্রে দাঁড়িয়ে পড়েন। তিনি যেমন সমাদৃত হয়েছেন নিজ দেশে, তেমনি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তাঁর কাব্যকৃতী স্বীকৃতি পেয়েছে। তার লেখা দেশ-বিদেশে নানা ভাষায় অনূদিত হয়েছে। বাংলাদেশে কপি রাইট আন্দোলন তাঁর চেষ্টায় আন্তর্জাতিক রূপ পেয়েছে এবং তিনি তার সাথে সক্রিয়ভাবে যুক্ত রয়েছেন।
মুহম্মদ নূরুল হুদার অধিকাংশ কবিতায় প্রাণী ও জড়, প্রযুক্তি ও বিজ্ঞান, মিথ ও প্রাসঙ্গিকতা, উপাখ্যান ও দর্শন, ঐতিহ্য ও পুরাতত্ত্ব, মহাজাগতিক বস্তু থেকে গাণিতিক প্রস্তর প্রভৃতির ব্যঞ্জনায় গড়ে তুলেছেন তাঁর কবিকৃতীর ফিকশনাল ডাইমেনশন। আমাদের এ পারিপার্শ্বিক বিশ্বের মধ্যে নবায়ন করতে চেয়েছেন এ ভিন্ন মাত্রিকতায় নিজস্ব স্বপ্নবিশ্ব। তাই তাঁর কবিতায় রূপক, সাঙ্কেতিকতা, আঙ্গিক, ভাষা, চিত্র ও দৃশ্যকল্প এক ভিন্নধর্মী মেটাফর তৈরি করেছে। এ ভিন্ন মেটাফর কবি হিসেবে তাঁর সময়ের থেকে তাঁকে আলাদাভাবে পৃথক করেছে যেমন তাঁর সময়ের অন্যতম প্রধান কবি হিসেবে।
কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা সৃষ্টিশীলতায় দ্বৈতসত্তা বিরাজমান। প্রথম সত্তায় আমরা তাঁর কবিতায় হই আকৃষ্ট, হৃদয়াবেগ দিয়ে তা গ্রহণ করি; আর তাঁর কবিতার দ্বিতীয় সত্তায় আমরা লাভ করি বহুমাত্রিক চিন্তা-উদ্রেককর বিচিত্র অনুষঙ্গ, যা পাঠ করতে আমরা হই আচ্ছন্ন ও সম্মোহিত। সৎ এবং গুরুত্বপূর্ণ কবির কবিতা শুধু আকৃষ্ট করে না, আকৃষ্ট স্তর পার হয়ে তা বিশেষ আচ্ছন্নতা বিস্তার করে, যেখানে তার রচনায় বহুমাত্রিক জ্যোতিবলয়ের স্বাক্ষর পাওয়া যায়। মুহম্মদ নূরুল হুদার অধিকাংশ রচনায় আমরা এই বৈশিষ্ট্য লক্ষ করি।
বিশিষ্ট নজরুল গবেষক কবি আব্দুল মান্নান সৈয়দ বলেছেন, ‘মুহম্মদ নূরুল হুদার কবিতার উতল তরঙ্গের পাশে গহন-উন্মুক্ত কিন্তু যুক্তিশীল, শিকড়িত কিন্তু মুক্তচিত্ত প্রবন্ধ-সমালোচনার একটি নির্জন নহর বয়ে চলেছে।’
এক সাক্ষাৎকারে কবি বলেন,
“আমি কবিতা দিয়ে শুরু করেছি এটা যেমন সত্য কিন্তু শুধু কবিতাতে আছি এটা সত্য নয়। আমি কবিতার পাশাপাশি গদ্যও লিখছি। আমার উপন্যাস আছে তিনটি এগুলোকে আত্মজৈবনিক বলা যেতে পারে। এ ছাড়া আরো একটি উপন্যাস আছে যেটি বিদেশী সাহিত্যের ছায়া অবলম্বনে লিখেছি। আরো উপন্যাস লেখার চিন্তা আছে। কবিতা লেখার জন্য একটা আবহ ছিল। তখন আমাদের বাড়িতে পুঁথি পাঠ হতো। যেমনÑ আমির হামজার পুঁথি, সোনাবানের পুঁথি পাঠের রেওয়াজ ছিল। প্রচণ্ড বৃষ্টিতে আমার দাদী পুঁথি পাঠ করতেন ঘরে বসে। গ্রামের তরুণেরাও পুঁথি পাঠ করত। এটা একটা ঢ়বৎভড়সরহম ধৎঃ ছিল। স্কুলে যখন আমি যাই যে লেখাটি আমাকে আকৃষ্ট করে তা হলো রবীন্দ্রনাথের ‘আমাদের ছোট নদী চলে বাঁকে বাঁকে/বৈশাখ মাসে তার হাঁটুজল থাকে।’ যা পড়ে আমি অনুপ্রাণিত হই। কবিয়ালদের একটা প্রভাব ছিল। আমি দু-একবার কবিয়ালদের সাথে মিলিত হই। এরপর প্রাথমিক স্কুলে পড়ার সময় আমি কবিতা লিখি তখন প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষক আমাকে প্রেরণা দেন সেই থেকে শুরু। আমার চারপাশের প্রকৃতি আমাকে বলেছে লেখ, লেখ।”
তিনি প্রকৃতপক্ষে একজন পরিশ্রমী কবি। শব্দ নির্বাচন, প্যারাডাইমিক শব্দের ব্যবহার ইত্যাদি নিয়ে তিনি সবসময় চিন্তাভাবনা করেন, এর প্রতিফলন তাঁর কবিতা। তাঁর কবিতায় কবিতা খুঁজে পাওয়া যায় ঠিকই, তবে মাঝে মধ্যে মনে হয় নির্মাণকেই তিনি প্রাধান্য দিয়েছেন বেশি। সৃষ্টি ও নির্মাণ কবিতার লক্ষণ বা গুণ হিসেবে যেভাবে চিহ্নিত, সেগুলোর ধারণাই তাঁকে নির্মাণের পথে নিয়ে গেছে। তবে নির্মাণের পথ বেয়ে কোনো কোনো সময় সৃষ্টির স্তরেও উঠে যান। কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা কবিতা নির্মাণের নানা পর্যায় অতিক্রম করে বর্তমানে বাস্তবতার কবিতায় তার মেধা-মনন শক্তিকে নিয়োজিত করেছেন কাব্য নির্মাণের এমন এক জিজ্ঞাসায়, যেখানে বহুর আকাক্সক্ষা আছে। তিনি বহুর আকাক্সক্ষা ও স্বপ্নকে সচেতন কাব্য-নির্মাণের মধ্য দিয়ে শিল্পসত্তা মানবমুখী করে তোলার চেষ্টা করছেন, যা ইতিহাসের দাবির সাথে সম্পৃক্ত।
নূরুল হুদাকে বাংলা একাডেমি পুরস্কার প্রদান করা হয়। এ ছাড়াও তিনি বহু পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। ছাত্রজীবনে ‘অধোরেখ’ সঙ্কলনটি সম্পাদনা করে সুধীজনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। তারপর বাংলা একাডেমির পরিচালক কবি নূরুল হুদা জার্মান, জাপান, আমেরিকা, হাওয়াই, লন্ডন, সোভিয়েত ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্র, পাকিস্তান, বেইজিং, শ্রীলঙ্কা, তুরস্ক প্রভৃতি দেশে বিভিন্ন সেমিনারে অংশগ্রহণ করেন এবং তুরস্ক প্রভৃতি দেশ থেকে সম্মাননাও গ্রহণ করেন। মুহম্মদ নূরুল হুদার প্রাপ্ত পুরস্কারগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য আলাওল সাহিত্য পুরস্কার ১৯৮৩, যশোর সাহিত্য পুরস্কার ১৯৮৩, আবুল হাসান কবিতা পুরস্কার ১৯৮৩, আওয়ামী শিল্পী গোষ্ঠী সংবর্ধনা ১৯৮৬, বাংলা একাডেমী সাহিত্য পুরস্কার ১৯৮৮, কক্সবাজার পদক ১৯৮৮, হুমায়ুন কাদির স্মৃতি পুরস্কার (১৯৯৪, উপন্যাসের জন্য), যুক্তরাষ্ট্রের আইএসপি ঘোষিত পোয়েট অব ইন্টারন্যাশনাল মেরিট ও পোয়েট অব দ্য ইয়ার সম্মানে ভূষিত ১৯৯৫, কবি আহসান হাবিব কবিতা পুরস্কার ১৯৯৫, তুরস্কের রাষ্ট্রপতি সুলেমান ডেমিরিল কর্তৃক বিশেষ রাষ্ট্রীয় সম্মানে ভূষিত ১৯৯৭, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ কর্তৃক প্রদত্ত নজরুল জন্মশতবর্ষ সম্মাননা ১৯৯৯, কলকাতাস্থ ‘নজরুল ফাউন্ডেশন’ কর্তৃক সম্মাননা ২০০০, জীবনানন্দ পুরস্কার ২০০১, কক্সবাজার সাহিত্য একাডেমি পুরস্কার ২০০১, সুকান্ত পুরস্কার ২০০৪, মহাদিগন্ত পুরস্কার কলকাতা ২০০৭, চয়ন সাহিত্য পুরস্কার ২০০৮, দেশব্যাপী ষাটবর্ষপূর্তি সম্মাননা ২০০৯, নগরচাবি কক্সবাজার ২০০৯, ঢাকাস্থ চট্টগ্রাম সমিতি পুরস্কার ২০১০, রূপসী বাংলা পুরস্কার- কলকাতা ২০১০, উতল হাওয়া পুরস্কার- কলকাতা ২০১০, একুশ-উনিশের ভাষাগৌরব সম্মাননা, ত্রিপুরা সরকার, ভারত ২০১২, নগরপ্রতীক কক্সবাজার ২০১২, সিটি-আনন্দ আলো কবিতা পুরস্কার ২০১৩, বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মাননা একুশে পদক-২০১৫, চর গড়গড়ি সাহিত্য পুরস্কার-২০১৭ ইত্যাদি। তিনি বহু গ্রন্থ ও কাব্য রচয়িতা, বহু ভাষার ধ্রুপদি সাহিত্যের রূপান্তর সাধক এবং আপন ভাষা ও দেশমাতৃকার অসঙ্কোচ সেবক।


আরো সংবাদ



premium cement
জনগণের শক্তির কাছে আ'লীগকে পরাজয় বরণ করতেই হবে : মির্জা ফখরুল টাইম ম্যাগাজিনের ১০০ প্রভাবশালী ব্যক্তির তালিকায় মেরিনা তাবাসসুম বিএনপি নেতারা সন্ত্রাসীদের সুরক্ষা দেয়ার অপচেষ্টা করছে : ওবায়দুল কাদের ট্রাকচাপায় নিহত ১৪ : তদন্ত কমিটি গঠন, চালক-হেলপার গ্রেফতার নেতানিয়াহুর একগুঁয়েমির কারণে মধ্যস্তকারীর ভূমিকা থেকে সরে যাবে কাতার! আফ্রিদির সাথে বিবাদের বিষয়ে কথা বললেন বাবর বাংলাদেশে গ্রিসের দূতাবাস হচ্ছে : পররাষ্ট্রমন্ত্রী পাকিস্তানের সাথে টেস্ট খেলতে চান রোহিত অধ্যাপক মাযহারুল ইসলামের বাসভবনে অধ্যাপক মুজিবুর রহমান ইউক্রেনের ২০টি ড্রোন, ২টি ক্ষেপণাস্ত্র নিষ্কিৃয় করল রাশিয়া তালেবানকে আফগান মাটি অন্যদের ব্যবহারের সুযোগ না দেয়ার আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের।

সকল