২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

শামসুর রাহমান : সময়ের বাতিঘর

-

মৃত্যু : ১৭ আগস্ট ২০০৬, জন্ম : ২৩ অক্টোবর ১৯২৯
জীবনানন্দ দাশকে আমরা আবিষ্কার করেছিলাম ষাটের শেষার্ধে, যখন বাঙালির অভ্যুদয় ও স্বাধিকার সংগ্রামের চেতনায় বাংলা উদ্দীপ্ত, মুক্তির আকাক্সক্ষা যখন ছড়িয়ে পড়ছে নগর থেকে শহর-বন্দর-গ্রামগঞ্জে। নিজেদের আকাক্সক্ষার আকাশে জীবনানন্দ দাশের রূপসীবাংলা তখন সঞ্জীবনী হয়ে উঠেছিল। আমরা জীবনানন্দকে চিনেছিলাম আমাদের কবি হিসেবে; কিন্তু বাংলা সাহিত্যে নিজের সময়ে কবিপ্রধান শামসুর রাহমানকে আমরা তাঁর জীবদ্দশাতেই পেয়েছিলাম নিজেদের আকাক্সক্ষা ও স্বপ্নপূরণের কবি হিসেবে। যে আকাক্সক্ষা ও স্বপ্নপূরণের সংগ্রাম আমাদের করতে হবে দীর্ঘ দিন। এবং আমার বিশ্বাস আকাক্সক্ষা ও স্বপ্নপূরণের প্রতিটি আন্দোলনে শামসুর রাহমান ফিরে ফিরে আসবেন আমাদের প্রেরণা জোগাতে। এক বিবেচনায় জীবনানন্দ ছিলেন আমাদের কাছে অনাবিষ্কৃত নক্ষত্র, আর শামসুর রাহমান আমাদের আলোকিত বাতিঘর। যে বাতিঘর ছড়িয়ে দিয়েছে আমাদের অন্তরে চেতনার দ্যুতি। কবি শামসুর রাহমান তাঁর এ অবস্থানটি নিজের সৃষ্টিশীল রচনাশৈলী আর জীবনাচার দিয়ে সৃষ্টি করে গেছেন জীবদ্দশাতেই।
আর পাঁচজন মহৎ কবির সাথে শামসুর রাহমানের মিল এবং অমিলগুলো কোথায় তা জেনে নেয়া গেলে শামসুর রাহমানের সাথে সৃষ্টিশীল সচেতন বাঙালি, সংবেদনশীল বিদগ্ধ মানুষের ঐক্যের সন্ধান সহজ হয়ে যাবে। রবীন্দ্রনাথ যেমন আমাদের প্রাত্যহিকতায়, চিন্তা-চেতনায়, স্বপ্ন-আকাক্সক্ষায়, জীবনাচারের প্রতিটি পদক্ষেপে নিবিড়ভাবে মিশে আছেন, প্রাত্যহিক সঙ্গীত ও প্রার্থনায় বাঙালির গভীরতম অন্তরপ্রদেশ আলোড়িত করেছেন, শামসুর রাহমান তেমনটি নন; কিন্তু আমাদের দেশপ্রেমের প্রত্যয়ে, স্বপ্ন ছোঁবার সংগ্রামে, প্রতিবাদের সাহস হয়ে অবলীলায় আমাদের দীপ্ত উচ্চারণে মিশে আছেন শামসুর রাহমান। শামসুর রাহমান যে মমতায় বাঙালির ইতিহাস-ঐতিহ্য-কৃষ্টি, সংগ্রাম-আন্দোলন, চাওয়া-পাওয়ার কথা চিত্রিত করেছেন তাঁর কবিতায়, তা কী কোনো শিষ্ট বাঙালির পক্ষে ভোলা সম্ভব! এক দিকে শামসুর রাহমানের কাব্যভাষার স্বাতন্ত্র্য; অন্য দিকে সারল্য, এক দিকে শামসুর রাহমানের কবিতার ছন্দপ্রকরণ এবং বিষয়-বৈচিত্র্যের ঋদ্ধি, অন্য দিকে বুননের আটপৌরে মেজাজ; একদিকে বৃহত্তর মধ্যবিত্ত শ্রেণীর আকাক্সক্ষার বাক্সময়রূপ-মায়ার চালচিত্র, অন্য দিকে বাঙালির মুক্তিসংগ্রামের অকপট কথকতা, কবি শামসুর রাহমানকে করে তুলেছিলো তাঁর সময়ের অনিবার্য কাব্যপুরুষ এবং সময়ের প্রধান কবি। তাঁর কবিতার বৈশিষ্ট্য খুঁজতে গেলে দেখব, তাঁর কবিতায় গদ্য এবং ছান্দিক প্রবহমানতার যুগপৎ প্রবল উপস্থিতি, দেখবো অতিমাত্রায় আটপৌরে স্বভাব এবং পরিপার্শ্বের বিস্তর উপস্থিতি পাঠককে অন্তরঙ্গ ও ঘনিষ্ঠ করে তোলে। মধ্যবিত্তের খুবচেনা ঘনিষ্ঠ জীবন যেন মুহূর্তে মূর্ত হয়ে ওঠে পাঠকের চেতনায়। তাঁর কবিতায় পাই অজস্র গল্পের সুচারু বিন্যাস, যা কবিতাকে যেমন সুখপাঠ্য ও সহজবোধ্য করে, অন্যদিকে পাঠকের নিজস্ব আনন্দ-বেদনা, কষ্ট, সুখ আর ভালোবাসায় একাকার হয়ে যায়। শামসুর রাহমানের কবিতায় পাই বিপুল বৈচিত্র্যপূর্ণ শব্দবৈভব। ভেবে অবাক হতে হয় পরিচিত কোন শব্দটি তাঁর কবিতায় নেই? এবং প্রতিটি শব্দই যেন একান্ত নিজস্ব শব্দ তাঁর। আমাদের স্বপ্নগুলো একাধারে বাক্সময় হয়ে ওঠে শামসুর রাহমানের কবিতায়, অন্যদিকে আমাদের স্বপ্ন ভাঙার বেদনাও বিবৃত হয় গভীর মমতায়, সেজন্যও পাঠক সহজে আপন মনে করেন কবিকে। তারচেয়েও বড় কথা শামসুর রাহমানের কবিতায় এমন এক সম্মোহনÑএমন এক মুন্সিয়ানা আছে, যা যে কোনো পাঠকের অন্তরে এমন এক ধারণা স্থায়ী করে দেয়, যে তিনি মনে করেন আধুনিক কবিতা যেন মুড়ি-মুড়কির মতোই সহজ। একজন কবিতাকর্মী পাঠক তো বটেই, এমনকী একজন সাধারণ পাঠকও নিজের অজান্তেই কবি হয়ে ওঠেন গোপনে গোপনে। শামসুর রাহমানের কবিতা পড়তে পড়তে পাঠক বিশ্বাস করতে থাকেন, নিজের অসংখ্য অনুষঙ্গ নিয়ে তার পক্ষে কবিতা লেখা যেন তুড়ির ব্যাপার। শামসুর রাহমানের পাঠক-ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠার পক্ষে এসব প্রসঙ্গ কি যথেষ্ট নয়! শামসুর রাহমানের কবিতার আটপৌরে স্বভাব চিহ্নিত করতে আমরা তাঁর একটি কবিতার কয়েকটি পঙ্ক্তি উদ্ধৃত করছি।
‘আমরা বাগান চাই আমরা ক’জন অকপট
শান্তিবাদী ক্লান্ত নাগরিক এমন বাগান চাই
যেখানে ফুলের কাছে সহজে পারবো যেতে, ঘাসে
চিৎ হয়ে শুয়ে দিব্যি পা দু’টি নাড়বো অকারণ
মাঝে মাঝে। কী কী ফুল থাকবে বাগানে তার সুদীর্ঘ তালিকা
বলোতো পাঠাতে পারি পৌর সমিতির কাছে। ভদ্র মহোদয়,
আমরা বাগান চাই, আমরা ক’জন হতচ্ছাড়া,
যারা মাঝরাস্তা দিয়ে ভাগ্যের ছ্যাকড়া গাড়ি হাঁকাতে হাঁকাতে
বড়ো বেশি ক্লান্ত হয়ে পড়েছি সম্প্রতি, আমরাই
শহরে বাগান চাই লিরিকের প্রসন্নতা-ছাওয়া;
এবং বিশ্বাস করো আছে আজো চাওয়ার সাহস।’
(সম্পাদক সমীপে ॥ বিধ্বস্ত নীলিমা)
শামসুর রাহমানের কবিতায় যেমন স্বদেশ প্রেম, তেমনি স্বজাত্যবোধ, যেমন অক্ষমতার গ্লানি, তেমনি ক্ষোভের হুঙ্কার; সর্বোপরি বাঙালির প্রতিটি সংগ্রাম ও সাহসের ছবি বারবার আমাদের মুগ্ধ করে। কবিতার সাথে তাঁর গৃহস্থালির অহঙ্কার তিনি নানাভাবে উচ্চারণ করেছেন কবিতায়। নিজ বাসভূমে কাব্যের ‘ইচ্ছা’ কবিতায় যেমন নিজের কাব্যচর্চার আকাক্সক্ষা ব্যক্ত করেন, তেমনি প্রথম গান, দ্বিতীয় মৃত্যুর আগে কাব্যের ‘কাব্যতত্ত্ব’ কবিতায় কবিতাবিরোধী পক্বকেশ পণ্ডিত সমালোচকের সমালোচনার জবাব দিয়েছেন, একইভাবে এক ধরনের অহঙ্কার কাব্যের নামকবিতা, আমি অনাহারী কাব্যের ‘কবিকে দুঃখ দিও না’, ইকারুসের আকাশ কাব্যের ‘নিজের কবিতা বিষয়ে কবিতা’য় একই ভূমিকায় দেখি তাঁর অবস্থান। শামসুর রাহমান কবিতার মাধ্যমে আমাদের আত্মসচেতনই শুধু করেননি, বরং উপলব্ধির প্রচ্ছন্ন জগৎটিকে চোখের সামনে তুলে ধরেছেন অসাধারণ যোগ্যতায়।
‘এখনো দাঁড়িয়ে আছি, এ আমার এক ধরনের অহঙ্কার।
বেজায় টলছে মাথা, পায়ের তলায় মাটি সারা দিনমান
পলায়নপর,
হা-হা গোরস্তান ছাড়া অন্যকিছু দেখতে পাচ্ছি না
আপাতত, তবু ঠিক রয়েছি দাঁড়িয়ে
প্রখর হাওয়ায় মুখ রেখে।’
(এক ধরনের অহংকার ॥ এক ধরনের অহংকার)
নিজ বাসভূমেÑস্বদেশের মাটিতে প্রাগসর মানুষের দুরবস্থার ছবি যখন শামসুর রাহমান আঁকেন, পাঠকের তখন বুঝতে বাকি থাকে না জাতির এই বিবেক কতটা সংবেদনশীলÑকতটা অনিবার্য প্রগতির পক্ষে। কে তাঁকে নিজের কাঁধে এ কঠিন দায় তুলে নিতে বাধ্য করেছে?
এ-কোন্ খাঁচায় আছি ? চাবি-দেয়া পুতুলের মতো
ঘুরিফিরি, মাথা নাড়ি; ক্লান্ত হলে শিক গুনে গুনে
ঘুমের খাঁচায় ঢুকি। বস্তুত এমন খাঁচাব্রত
একনিষ্ঠ সাধকেরও সাধ্যাতীত। যতদূর শুনে
কিবা গ্রন্থপাঠে জানি দীপঙ্কর অথবা মেধাবী
শঙ্কর, ইবনেসিনা ছিলেন না এমন খাঁচায়
কোনদিন, সত্যাসন্ধ ইতিহাস করবে না দাবি
ওরা খুঁটেছেন করুণার ছোলা দৈনিক বাঁচায়।’
(খাঁচা ॥ উদ্ভট উটের পিঠে চলেছে স্বদেশ)
স্বাধীন বাংলাদেশের অবরুদ্ধ অবস্থা বর্ণনা করতে যোগ্য বাতিঘর হয়ে কতশত বার শামসুর রাহমান গর্জে উঠেছেন তাঁর কবিতায়, তা বলে শেষ করা যাবে না। নিজেদের প্রয়োজনে শামসুর রাহমান পাঠ করে নিজেদের অপূর্ণতাগুলোকে পূরণ করে নেব; সচেতন করে নেবÑ
‘গণ্ডার, ভালুক, বুনো হাতি, উটের পায়ের দাগ
বালিতে দেখতে ভালোবাসে। যখন টিভিতে বন
জঙ্গলের ছবি দ্যাখে, তখন সে খুশিতে কেমন
ডগমগ হয়ে ওঠে। হঠাৎ বায়না ধরে যাবার
ঝুলিয়ে বন্দুক কাঁধে, যেন আজ করবে সাবাড়
হিংস্র পশুদের, ঘোরে যারা জঙ্গলের আনাচে-কানাচে।
কী ক’রে বোঝাই তাকে বস্তুত সে জঙ্গলেই আছে।’
(বনে-জঙ্গলে ॥ আমার কোন তাড়া নেই)
যে শহীদ মিনারে পু®পার্ঘ্য দিয়ে নিবেদনের আলোড়নÑশ্রদ্ধা প্রদর্শনের ঘনঘটা, সেই শহীদ মিনারই সারাবছর হয়ে হয়ে থাকছে অবহেলার ইট-সিমেন্টের পরিত্যক্ত অঞ্চল, প্রাকৃতিক ক্রিয়াদি সারার প্রকৃষ্ট আড়াল! দু’চারটি ব্যতিক্রম বাদ দিলে বাস্তব চিত্র এমনই। আজকের এই প্রবল সঙ্কটের বিষয়টি কবি শামসুর রাহমান আগেই উপলব্ধি করেছিলেন, তাই হয়তো তিনি তার একই কবিতায় উচ্চারণ করেছিলেনÑ
এখন তোমাকে ঘিরে উতল বেলেল্লাপনা চলছে বেদম,
এখন তোমাকে নিয়ে ঘিরে খিস্তি-খেউড়ের পৌষমাস।
তোমার মুখের দিকে আজ আর যায় না তাকানো,
বর্ণমালা, আমার দুঃখিনী বর্ণমালা।
(আমার দুঃখিনী বর্ণমালা/ শামসুর রাহমান)
সমকালের অচলায়তনকে ভাষার কারুকার্যে বাক্সময় করতে এসব কবিতায় তাঁর সততাও পরিলক্ষিত হয়। যখন নিজ বাসভূমে কাব্যে তিনি লিখেনÑ
‘এ-শহর টুরিস্টের কাছে পাতে শীর্ণ হাত যখন তখন,
এ-শহর তালিমারা জামা পরে, নগ্ন হাঁটে খোঁড়ায় ভীষণ।
এ-শহর রেস খেলে, তাড়ি গেলে হাঁড়ি হাঁড়ি, ছায়ার গহ্বরে
পা মেলে রগড় ক’রে আত্মার উকুন বাছে, ঝাড়ে ছারপোকা।
....................................................
এ-শহর পল্টনের মাঠে ছোটে, পোস্টারের উল্কি-ছাওয়া মনে
এল গ্রেকো ছবি হয়ে ছোঁয় যেন উদার নীলিমা,
এ-শহর প্রত্যহ লড়াই করে বহুরূপী নেকড়ের সাথে।’
(এ-শহর ॥ নিজ বাসভূমে)
এভাবেই নিজের-পরিপার্শ্ব এবং অনুভবের কথা উচ্চারণ করে শামসুর রাহমান বাঙালি কাব্যপাঠকের স্বজন হয়ে ওঠেন দীর্ঘ কাব্যসাধনায়। নিজের যে কোন প্রয়োজনে মানুষ যখন কবিতায় আশ্রয় নিতে চায় প্রথমেই সে শরণাপন্ন হয় রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, জীবনানন্দ এবং অবশ্যই শামসুর রাহমানের; কারণ সবাই জানেন বাঙালির জীবনসংগ্রাম আর আশা আকাক্সক্ষার যত কথকতা, তা আছে এঁদের বিস্তৃত কাব্যভাণ্ডারেই। বাঙালি যখন তার ভাষা আন্দোলনের কথা ভাববে, মনে ভেসে উঠবে তার ‘বর্ণমালা, আমার দুঃখিনী বর্ণমালা’, বাঙালি জাতিসত্তার বিকাশের কথা যখন ভাববে, সে পড়ে নেবে, ‘আসাদের শার্ট’, ১৯৭১-এর ভয়াবহ যুদ্ধের কথা যখন মনে পড়বে তখন ‘স্বাধীনতা তুমি’ এবং ‘তোমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ পড়ে বিজয়ের আনন্দে ভাসবে। যখন যে আত্মগ্লানির কথা উচ্চারণ করেন কবি তা যেন সহসাই আমাদের সবার বেদনা হয়ে যায়। ১৯৭১-এ অবরুদ্ধ জীবনের হাহাকার আর মুক্তির আকাক্সক্ষার কথা যখন উচ্চারণ করেন ‘বন্দি শিবির থেকে’ কাব্যে তা যেমন ছয় কোটি অবরুদ্ধ বাঙালির হাহাকার এবং মুক্তির আকাক্সক্ষা হয়ে যায়, তেমনি ‘টেলিমাকাস’ কবিতায় একজন জাতিপিতার জন্য আক্ষেপও যেন সাড়ে সাত কোটি পিতৃহারা বাঙালির আক্ষেপ হয়ে ওঠে।
‘তুমি নেই তাই বর্বরের দল করেছে দখল
বাসগৃহ আমাদের। কেউ পদাঘাত করে, কেউ
নিমেষে হটিয়ে দেয় কনুই-এর গুঁতোয় আবার
‘দুধ খাওগে হে খুকুমণি’ ব’লে কেউ তালেবর
দাড়িতে বুলায় হাত। পিপে পিপে মদ শেষ, কতো
ঝলসানো মেঘ আর শুয়োর কাবার, প্রতিদিন
ভাঁড়ারে পড়ছে টান। থমথমে আকাশের মতো
সমস্ত ইথাকা, গরগরে জনগণ প্রতিষ্ঠিত
অনাচার, অত্যাচার ইত্যাদির চায় প্রতিকার।
.................................................
এখনো কি ঝঞ্ঝাহত জাহাজের মাস্তুল তোমার
বন্দরে যাবে না দেখা? অস্ত্রাগারে নেবে না আয়ুধ
আবার অভিজ্ঞ হাতে? তুলবে না ধনুকে টঙ্কার?
’৭৫-এ বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে নৃশংস হত্যার পর যখন আমাদের মুক্তিযুদ্ধের প্রতিটি অর্জনকে ভূলুণ্ঠিত করা হতে থাকে তখন তাঁর এ কবিতা আমাদের সাহসী করে আরেকবার বুক পেতে দাঁড়াতে, ‘একটি মোনাজাতের খসড়া’ মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত শত্রুদের নৃশংসতার কথা স্মরণ করিয়ে দেয়, গণতন্ত্রের পক্ষে শহীদ নূর হোসেনের আত্মত্যাগের মহিমার কথা পুনর্বার মনে করিয়ে দেয় আমাদের। এভাবেই কবি শামসুর রাহমান আমাদের কাছে চেতনার বাতিঘর হয়ে আলো দিয়ে যান এবং স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের স্বার্থে অতন্দ্র রাখে আমাদের।
আবার ‘আলো ঝলমল সবুজ মাঠের কাছে/ জল টলমল মেঘনা নদীর কাছে/ আমার অনেক ঋণ আছে ঋণ আছে।’ গানের মাধ্যমে দেশমাতৃকার কাছে নিজের ঋণের কথা মনে করে নেব বারবার।
বিচিত্র ব্যঞ্জনায় ঘুমের ব্যবহার দেখি শামসুর রাহমান, সৈয়দ শামসুল হক, আল মাহমুদ এবং ফজল শাহাবুদ্দীনের কবিতায়।
বাংলাদেশের কাব্যাঙ্গনের এই চার কবি ব্যক্তিত্বকে স্পর্শ করা না গেলে আলোচনায় অনেকটাই ফাঁক থেকে যায়; আলোচনায় আরো কজন কবির কবিতা আলোচিত হওয়ার দাবি রাখলেও আপাত নিজেকে সংযত রাখতে হচ্ছে; আমি বিশেষভাবে উল্লেখ করছি কবি সানাউল হক, কবি শহীদ কাদরী, আবদুল মান্নান সৈয়দ, আসাদ চৌধুরী, রফিক আজাদ, হুমায়ূন আজাদ প্রমুখের নাম। পুনর্বার সুযোগ পেলে রচনার এ ঊণতাকে কাটিয়ে উঠতে সচেষ্ট হবো।

 


আরো সংবাদ



premium cement
রাত পোহাতেই রুদ্ধদ্বার অনুশীলন শুরু বাংলাদেশের সাটুরিয়ায় প্রশান্তির বৃষ্টি চেয়ে সালাতুল ইসতিসকা আদায় ইরান নিয়ে মার্কিন হুঁশিয়ারি পাকিস্তানকে গাজায় গণকবরের বিষয়ে ইসরাইলের কাছে ‘জবাব’ চেয়েছে হোয়াইট হাউস দ্বি-রাষ্ট্র সমাধান বাস্তবায়ন করা হলে হামাস অস্ত্র ছাড়তে রাজি শনিবার থেকে শুরু গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা, প্রস্তত জবি ক্যাম্পাসগুলোতে মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে সমর্থন করেন বাইডেন: মুখপাত্র নোয়াখালীতে ইসতিসকার নামাজ আদায় জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তিভাব থাকবে বান্দরবানে বৃষ্টির চেয়ে চোখের পানি ফেলে বিশেষ নামাজ চকরিয়ায় যুবককে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা, গ্রেফতার ৭

সকল