২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

রবীন্দ্রনাথ তাঁর সৌন্দর্য চেতনা

-

মানুষমাত্রই সৌন্দর্যবোধের অধিকারী। তবে কবিদের বেলায় এ প্রশ্ন অনিবার্যভাবেই চলে আসে। কারণ, তাঁরা অপেক্ষাকৃত শুদ্ধ মন ও মননশীলতায় চিত্তবোধকে লালন করে থাকেন। কবিগণ নির্লোভ-নিস্পৃহ, নির্মোহ-নিরাসক্ত জীবনবোধকে অবলম্বন করেই পথ চলেন। স্বভাবত কারণেই জগৎ ও জীবনের সৌন্দর্যময় দিকটি তাদের কাছে ভিন্নতর মাত্রামহিমায় অভিব্যঞ্জিত হয়। অন্য দিকে জীবনের অনুষঙ্গ ও অনাচার, ক্লেদ-গ্লানিমা, পাপ-পঙ্কিলতা, অন্যায়-অবিচার সমানভাবে তাদের মনকে আলোড়িত করে থাকে। এ অর্থে তাঁরা সাধারণ মানুষের চেয়ে অনেক বেশি সম্পর্শকতার, অনুভবপ্রাণ, স্বপ্নবিলাসী, ন্যায়পরায়ণ, কল্পনাপ্রবণ ও আবেগধর্মের অনুসারী। এ সুবাদে কবিরা সৃষ্টিশীল চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে ওঠেন। নব নব পথ ও মতের সৃজনসুখের ভাবনায় আন্দোলিত হন। তারা অন্যান্য পথের অনুসারী না হয়ে নিজেই পথ সৃষ্টি করেন। এবং সেই পথে সবাইকে অংশীদার হওয়ার আহ্বান জানান।
এরই মনন-মনস্বীতার পথ বেয়েই কবি সৌন্দর্য সাধনায় আত্মনিয়োগ করেন। কারণ, এই একটা মৌখিক চেতনাবোধের কাছেই প্রতিটি মানুষ আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য। পৃথিবীর একটি মানুষও তার অবস্থানে সন্তুষ্ট নন। সবাই আরো অধিকতর ভালো অথবা সুন্দর হওয়ার জন্য নিরন্তর সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন। এর ফলেই মানুষের শুরু ও শেষের মধ্যে অনেক পার্থক্য লক্ষণীয়। মূলত, এর মধ্যে একটা অতৃপ্ত সৌন্দর্যবোধ সবাইকে তাড়িয়ে বেড়ায়। কবিগণ মূলত এই সৌন্দর্য সাধনায় জীবনপণ কার্যক্রম পরিচালনা করেন। তাঁরা এর যথাযথ রূপকার হিসেবেও নিজের অবস্থানকে স্পষ্ট করে তোলেন। এ অর্থে তাঁরা মানুষের নান্দনিক বোধকে একটা স্বপ্নমুখর জগতে নিয়ে যেতে সক্ষম হন।
রবীন্দ্রনাথের কাব্যিকতা নিয়ে আলোচনায় বরাবরই বলা হয় তিনি প্রকৃতির কবি, সৌন্দর্যের কবি ও মানবতার কবি। এর উৎস রহস্য কোথায়? একটু চিন্তা করলেই বোঝা যাবে কবি অভিধায় চিহ্নিহ্নত এসব বৈশিষ্ট্য মোটেই বিচ্ছিন্ন নয়; বরং একটি অন্যের পরিপূরক হিসেবে দেখা দেয়। আমি তাঁকে মানবতার কবি হিসেবে উল্লেখ করতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। তিনি সর্বকাল, সর্বদেশ ও সর্বমানবগোষ্ঠীর কবি হিসেবেই চিহ্নিহ্নহ্নত হয়ে আছেন। এক অর্থে তিনি কোনো নির্দিষ্ট ধর্ম-কর্ম, সম্প্রদায়-গোষ্ঠী ও কালাকালের অনুসারী ছিলেন না। মানবতার প্রশ্নেই তার যাবতীয় সৃষ্টিশীল কর্ম, জীবনকর্ম অনুষ্ঠিত হয়েছে। পৃথিবীর যেখানেই মানবতা লাঞ্ছিত, সেখানেই তিনি উচ্চকিত কণ্ঠে প্রতিবাদ করেছেন। এবং লেখালেখি সেমিনার-সিম্পোজিয়াম, সভা-সমাবেশের মাধ্যমে নিজের অবস্থান তুলে ধরেন। আবার নৈতিক-মানসিক যেকোনো কর্মকেই তিনি অভিনন্দন জানিয়েছেন। এ অর্থে তার সৌন্দর্যবোধ ও নান্দনিক চেতনা অবশ্যই ব্যাপকতর হতে বাধ্য।
রবীন্দ্রনাথ জন্মসূত্রে একটা ভিন্নতর পরিবেশে বেড়ে ওঠেন। এক দিকে মহর্সী পিতা দেবেন্দ্রনাথের আধ্যাত্মিক আলো-আলয় অন্য দিকে সমাজবিচ্ছিন্ন পরিবেশ পরিস্থিতি। তবে উভয় ব্যবস্থাই তিনি পরবর্তীকালে ভেঙেচুরে একাকার করে ফেলেন। দেবেন্দ্রনাথ প্রথম জীবনে বরাবরই আধ্যাত্মিক বলয়ে আত্মসমাহিত থাকতেন। পরে তিনি জনবিচ্ছিন্ন সাধনভজনের বিপক্ষে অবস্থান গ্রহণ করেন। তিনি ক্রমান্বয়ে মৃত্তিকালগ্ন সমাজ জীবনের প্রতি গভীরভাবে আকৃষ্ট হন। প্রাত্যহিক সংসারজীবনকেই ধারণক্ষেত্র হিসেবে বেছে নিয়েছেন। এবং এর মধ্য দিয়েই জীবনের পরিপূর্ণ সার্থকতা বলে মতামত প্রদান করেন। দেবেন্দ্রনাথ রচিত ‘আত্মজীবনী’ পাঠ করলেও অনুরূপ সাক্ষ্যপ্রমাণ খুঁজে পাওয়া যাবে। দেবেন্দ্রনাথের এই জীবনবোধই রবীন্দ্রনাথের মধ্যে অভিব্যক্তি লাভ করেছে। দেবেন্দ্রনাথ নিজেও বিভিন্ন শিক্ষাদীক্ষার মাধ্যমে পুত্র রবীন্দ্রনাথকে অনুরূপভাবে গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছিলেন। যেকোনো রকম অতীন্দ্রিয় মায়ালোক নয়Ñ এই পরিপার্শ্ব জগৎ-সংসারের দিকেই রবীন্দ্রনােেথর দৃষ্টি আকৃষ্ট করা হয়। শুধু এ কথাটি মনে রেখেও রবীন্দ্রনাথের সৌন্দর্যবোধ অনেকখানি উপলব্ধি করা সম্ভব। ফলে রবীন্দ্রনাথ প্রতিদিন ধূলিমলিন ও সুখ-দুঃখ পরিহিত জগৎ সংসারের সৌন্দর্য নিয়েই জীবনের সব আয়োজন সম্পন্ন করেছেন।
প্রথমত, তিনি বড় ভাই জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর ও জমিদারি দেখাশোনার সুবাদে পূর্ববঙ্গে আগমন করেন। কুষ্টিয়া, পাবনা ও রাজশাহীর বিস্তৃত অঞ্চল ভ্রমণ করার সুযোগ পান। এখানকার জীবন ও প্রকৃতির সৌন্দর্যরাশি তিনি প্রাণভরে আস্বাদন করতে থাকেন। একেবারে ভাবতন্ময়তা নিয়ে দিনরাত অবগাহন করেন। এবং এর ফলেই তাঁর মানসিক বিকাশ বিবর্তন বিস্ময়কররূপে উন্মোচিত হতে থাকে। প্রকৃতির মায়াবী হাতছানি তাকে কল্পনার জগতে নিয়ে যায়। এর ফলে একটা অদৃশ্য অলৌকিক শক্তির সাথে গভীর মেলবন্ধন রচিত হয়। খাঁচায় বন্দী পাখি যেন মুক্ত আকাশে ছাড়া পেল। আর অনাদি-অনন্ত আকাশে সে কেবলই ডানা ঝাঁপটাতে থাকে। বিশ্ব প্রকৃতির রহস্য উন্মোচনে একেবারে মরিয়া হয়ে ওঠে। মূলত পূর্ববঙ্গের মুক্ত প্রকৃতির বুকেই রবীন্দ্র প্রতিভার বিকাশ-বিবর্তন একটা পথ খুঁজে পায়। সমালোচকগণ বলেন, রবীন্দ্রনাথ পূর্ববঙ্গে না এলে কবি হয়ে উঠতেন কি না সন্দেহ। তার বেশির ভাগ শ্রেষ্ঠতম সৃষ্টিসম্ভার এখানে বসেই রচিত হয়।
এমন একটা পরিপ্রেক্ষিত পরিস্থিতির সুবাদে রবীন্দ্রনাথ মাটি ও মানুষের কাছাকাছি চলে আসেন। প্রাত্যহিক জীবন বাস্তবতার সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্না, চাওয়া-পাওয়া, ঘর-সংসার, জীবন-জীবিকা তাঁকে নিবিড়ভাবে ছুঁয়ে যায়; যা তার ‘ছিন্নপত্র’ পাঠ করেও অনেকটা উপলব্ধি করা সম্ভব। এ ছাড়া সে সময়কার অজস্র রচনাবলিতে মাটি ও মানুষের প্রতি গভীর মমত্ববোধ ব্যক্ত হয়েছে। কল্পনায় মায়াবী জগৎ থেকে এ এক প্রকার নিষ্ক্রমণ বটে, যা রবীন্দ্রনাথের কবিসত্তাকে একটা নবজন্ম দান করে। ফলে তিনি এই পরিপার্শ্ব পৃথিবীর সৌন্দর্য বর্ণনায় মুখর হয়ে পড়েন। এবং দৃপ্তকণ্ঠে ঘোষণা করেনÑ
‘মরিতে চাহি না আমি সুন্দর ভুবনে
মানবের মাঝে আমি বাঁচিবারে চাই।’
এবং পৃথিবীর সর্বত্র নিজেকে ব্যক্ত করার বাসনায় অস্থির হয়ে পড়েন। মাটির পৃথিবীতে নিজের অস্তিত্ব কল্পনায় উদগ্রীব হন। সোনার তরী কাব্যের বসুন্ধরা কবিতায় কবি বলেন,
‘আমারে ফিরায়ে লহো, আয় বসুন্ধরে
কোলের সন্তানে তব কোলের ভিতরে
বিপুল অঞ্চল-তলে। ওগো মা মৃন্ময়ী
তোমার মৃত্তিকা মাঝে ব্যাপ্ত হয়ে রই
দিগি¦দিকে আপনারে দিই বিস্তারিয়া
বসন্তের আনন্দের মতো; বিদারিয়া
এ বক্ষ-পঞ্জর টুটিয়া পাষাণ বন্ধ
সংকীর্ণ প্রাচীর, আপনার নিরানন্দ
অন্ধ কারাগার, হিল্লোলিয়া মর্ময়িয়া
কম্পিয়া, স্খলিয়া, বিকিরিয়া, বিচ্ছুরিয়া
শিহরিয়া, মচকিয়া আলোকে, পুলকে
প্রবাহিনা চলে যাই সমস্ত ভূলোকে।
অনুরূপ ভাবানুভব নিয়েই একের পর এক সাহিত্য সৃষ্টি রচনা করতে থাকেন। প্রসঙ্গত, দু-একটি সৃষ্টিকর্ম নিয়ে আলোচনা করা যেতে পারে। ‘প্রকৃতির প্রতিশোধ’ নাটকে রবীন্দ্রনাথ অনেকটা সরাসরিভাবে এ রকম একটা ভাবকে অবলম্বন করেছেন। নাটকে দেখা যায়, এক সন্ন্যাসী সমাজ সংসার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে আত্মগত সাধনায় লিপ্ত হয়েছে। সবাইকে বাদ দিয়ে নিজেই কেবল সাধন সাফল্য পেতে চায়। আত্মসংবৃত ও আত্মসমাহিত হয়ে এই সাধনভজন শেষ পর্যন্ত ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়। অবশেষে এক বালিকার স্নেহপাশে তার চৈতন্যোদয় ঘটে। প্রকৃতির প্রতিশোধ নাটক সম্পর্কে রবীন্দ্রনাথ নিজেই বলেন,
“এই কারোয়ারে প্রকৃতির প্রতিশোধ নামক নাট্য কাব্যটি লিখিয়াছিলাম। এই কাব্যের নায়ক সন্ন্যাসী সমস্ত স্নেহবন্ধন মায়াবন্ধন ছিন্ন করিয়া প্রকৃতির উপরে জয়ী হইয়া, একান্ত বিশুদ্ধভাবে অনন্তকে উপলব্ধি করিতে চাহিয়াছিল। অনন্ত যেন সব কিছুর বাহিরে। অবশেষে একটি বালিকা তাহাকে স্নেহপাশে বন্ধ করিয়া অনন্তর ধ্যান হইতে সংসারের মধ্যে ফিরাইয়া আনে। যখন ফিরিয়া আসিল তখন সন্ন্যাসী ইহাই দেখিলÑ ক্ষুদ্রকে লইয়াই বৃহৎ, সীমাকে লইয়াই অসীম, প্রেমকে লইয়াই মুক্তি। প্রেমের আলো যখনই পাই তখনই যেখানে চোখ মেলি, সেখানেই দেখি, সীমার মধ্যে সীমা নাই।”
এ কথার মধ্য দিয়ে রবীন্দ্রনাথের অন্তর্গত ভাব-ভাবনার পরিচয় মেলে। এতে দেখা যায়, কোনো অতীন্দ্রিয় কল্পলোকে বিহার করে নয়Ñ বরং এই প্রাত্যহিক জীবনকে অবলম্বন করেই মানবজীবনের সার্থকতা সূচিত হয়ে থাকে। এবং এর মধ্য দিয়েই তিনি সৌন্দর্য সাধনায় আত্মনিয়োগ করেন। এই প্রত্যক্ষ জগৎ সংসারের অনুগুপ্ত বর্ণনায় মুখর হয়ে ওঠেন। প্রকৃতির প্রতিশোধ নাটকে কবি বলেন,
“নির্ভয়ে গা ঢেলে দিয়ে সংসারের স্রোতে
এরা সবে কী আরামে চলেছে ভাসিয়া
যে যাহার কাজ করে গৃহে ফিরে যায়
ছোটো ছোটো সুখে দুঃখে দিন যায় কেটে
.... .... ....
ঘরকন্না কাজ আছে, ছেলেপিলে আছে
গোয়ালে তিনটি গোরু তার করি সেবা
বিকেলে চরকা কাটি মেয়েটিকে নিয়ে
এই পরিপার্শ্ব পৃথিবীকে ঘিরেই রবীন্দ্রনাথের যাবতীয় সৃজন সাধন সম্পন্ন হয়েছে। এই প্রত্যক্ষ মত জগতের মঙ্গল কামনায় তিনি নিজেকে বিলিয়ে দিয়েছেন। তার যাবতীয় সৌন্দর্য বোধবুদ্ধিও এই সম্মুখ জগৎকে অবলম্বন করে বিকশিত হয়েছে। সমাজ জীবনের সৌন্দর্য কল্পনায় তিনি নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন এবং ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র জীবন ভাবনাই তার করছে সৌন্দর্যের আধার হিসেবে বিবেচিত হতে থাকে। প্রকৃতির প্রতিশোধ নাটকে তিনি বলেন,
“নদী তরুলতা পাখি হাসিছে প্রভাতে
উঠিয়াছে লোকজন প্রভাত হেরিয়া
হাসিমুখে চলিয়াছে আপনার কাজে
ওই ধান কাটে, ওই করিছে কর্ষণ
ওই গাভী নিয়ে মাঠে চলেছে গাহিয়া
ওই যে পূজার তরে তুলিতেছে ফুল
ওই নৌকা লয়ে যাত্রী করিতেছে পার
কেহ বা করিছে স্নান, কেহ তুলে জল
ছেলেরা ধুলায় বসে খেলা করিতেছে
সখারা দাঁড়ায়ে পথে কহে কত কথা।”
এ ছাড়া রবীন্দ্রনাথ মায়ার খেলা, চিত্রাঙ্গদা, বিসর্জন রাজা ও রানী প্রভৃতি নাটকের মাধ্যমে একটু ভিন্নভাবে অনুরূপ বক্তব্য তুলে ধরেন। পাশাপাশি বিভিন্ন কাব্যকথায় মধ্য দিয়েও মত-প্রীতির গভীর অনুরাগ ব্যক্ত হয়েছে। চিত্রা কাব্যে তিনি বলেন,
“এবার ফিরাও মোরে লয়ে যাও সংসারের তীরে
হে কল্পনে, রঙ্গময়ী। দুলায়ো না সমীরে সমীরে
তরঙ্গে তরঙ্গে আর, ভুলায়ো না মেহিনী মায়ায়।”
শুধু তাই নয়, এই বাস্তব সংসারের কল্যাণ কামনায় তিনি জীবনকে উৎসর্গ করেছেন। অধঃপতিত জীবনের সার্বিক কল্যাণে জীবনপণ সংগ্রামে লিপ্ত হন। রবীন্দ্রনাথ দৃপ্তকণ্ঠে ঘোষণা করেন
...... এই সব সূর ম্লান মূক মুখে
দিতে হবে ভাষাÑ এই সব শ্রান্ত শুষ্ক ভগ্ন বুকে
ধ্বনিয়া তুলতে হবে আশাÑ ডাকিয়া বলিতে হবে
মুহূর্ত তুলিয়া শির একত্র কাঁড়াও দেখি সবে
যার বয়ে তুমি ভীত সে অন্যায় ভীরু তোমা চেয়ে
যখনি জাগিবে তুমি তখনি সে পলাইবে ধেয়ে
এই প্রত্যক্ষ মর্তজীবনের জন্য তাঁর যাবতীয় সাধনার ক্রিয়াকল্প নিবেদিত। বিশেষত বৃহত্তর বিশ্বমানবতার কল্যাণে তার সব সৃষ্টি সাধনা উৎসর্গ করা হয়। এ অর্থে কবি রবীন্দ্রনাথের বিশেষ কোনো জাতপাত বা শ্রেণী-গোষ্ঠী নেই। তিনি সকল দেশের সকল কালের মানবতা-প্রশ্ন নিজেকে উৎসর্গ করেন। কবি ঘোষণা করেন,
“আমি কবি ওদের দলে
আমি ব্রাত্য, আমি মন্ত্রহীন
দেবতার বন্দীশালায়
আমার নৈবেদ্য পৌঁছুল না
পূজারি হাসিমুখে মন্দির থেকে বাহির হয়ে আসে
আমাকে শুধায় দেখে এলে তোমার দেবতাকে?
আমি বলি, ‘না’
অবাক হয় শুনে, বলে জানা নেই পথ?
আমি বলি, ‘না’
প্রশ্ন করে, ‘কোনো জাত নেই বুঝি তোমার
আমি বলি, ‘না’ (পত্রপুট)
মূলত, এই প্রত্যক্ষ জীবনবাস্তবতার অন্তর্মূলে যাবতীয় সাধনসিদ্ধির উৎস অšে¦ষণা লুকিয়ে রয়েছে। পরিপার্শ্ব পৃথিবীর সুখ-দুঃখ, চাওয়া-পাওয়া, স্খলন-পতন, বিঘœ-বিপত্তি, অনাচার-অসঙ্গতি নিয়েই তা সম্ভব হয়ে ওঠে। কোনো কিছু এড়িয়ে নয়Ñ বরং সব কিছু স্বীকার ও স্বীকরণ করেই মানুষের যাবতীয় সাধনা সিদ্ধিলাভ করে থাকে। একটা অখণ্ড-সর্বানুগ দৃষ্টিভঙ্গি পরিপূর্ণ পথযাত্রায় নিয়ে যেতে সক্ষম। রবীন্দ্রনাথ সারাজীবন অনুরূপ মননপ্রবৃত্তি নিয়েই সৃষ্টিশীল কর্মে আত্মনিয়োগ করেন। হ


আরো সংবাদ



premium cement
জবিতে ভর্তি পরীক্ষায় আসন বেড়েছে ৫০টি বিএনপি ক্ষমতায় আসতে মরিয়া হয়ে উঠেছে : ওবায়দুল কাদের মাটির নিচে পাওয়া গ্রেনেড মাইন মর্টার শেল নিষ্ক্রিয় করল সেনাবাহিনী অনির্দিষ্টকালের জন্য অনলাইন ক্লাসে যাচ্ছে জবি, বন্ধ থাকবে পরীক্ষা কুড়িগ্রামে রেলের ভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদ ক্রিকেট খেলতে অস্ট্রেলিয়া যাচ্ছে দেওয়ানগঞ্জের প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী শিহাব কিশোরগঞ্জে বৃষ্টির জন্য বিশেষ নামাজ সাতক্ষীরা বৈদ্যুতিক খুটিতে ধাক্কা লেগে মোটরসাইকেলআরোহী নিহত বার্সেলোনাতেই থাকছেন জাভি চতুর্থ দফা ‘হিট অ্যালার্ট’ জারি : এবারের তাপদাহ শেষেই বৃষ্টিপাতের আশা ফরিদপুরে বৃষ্টির জন্য নামাজে হাজারো মুসুল্লির কান্না

সকল