২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ব ই আ লো চ না

-

ইসলামে শিল্পকলা-সাহিত্য-সংস্কৃতি
শিল্প সাহিত্য ও সংস্কৃতি মানব জীবনের অপরিহার্য বিষয়। যা মানুষের রুচি ও চেতনার সাথে জড়িয়ে আছে। মানব জীবনের সৌন্দর্য অনুধাবনের মাধ্যম শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি। সৌন্দর্য অনুধাবনের মাধ্যম শিল্প সাহিত্য সংস্কৃতি। আর সেটি যদি বিশ্বাসের জায়গা থেকে তবে তো তার মূল্য আলাদা হবেই। এমনি একটি মূল্যবান গ্রন্থ রচনা করেছেন আবৃত্তি শিল্পী নাসিম আহমেদ। বইটির নাম ইসলামে শিল্পকলা-সাহিত্য সংস্কৃতি। প্রকাশক ইসলামিক ফাউন্ডেশন। মূল্য ১৩২ টাকা মাত্র।
অনুপম ভাষার সরলতায় বইটি রচিত হয়েছে। অধিক সতর্কতাও কাজ করেছে লেখকের ভেতর। দীর্ঘ প্রায় ১২ বছর ধরে গবেষণা করে বইটি রচিত। লেখকের ভাষায়, ‘২০০৭ সালের দিকে আমার চিন্তায় আসে কবিতা ও আবৃত্তি শিল্প নিয়ে নবী করিম সা:-এর কী কী হাদিস রয়েছে তার সন্ধান করে একটি বিশ্লেষণধর্মী প্রবন্ধ লেখার। ক্রমে ক্রমে এই চিন্তা প্রসারিত হতে হতে ইসলামে শিল্পকলা সাহিত্য সংস্কৃতির রূপ পরিগ্রহ করেছে।
শুধু তাই নয়, বইটি যেন সুবাসিত ফুলের মতো বিকশিত হয় সে জন্য সর্বশ্রেষ্ঠ পন্থাও অবলম্বন করেছেন। লেখকের ভাষায়, ‘সস্ত্রীক হজ পালনের সময় আমার স্ত্রী অধ্যাপক শায়লা আহমেদ স্মরণ করিয়ে দেয় গ্রন্থটি প্রণয়নে আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনা করতে। আমি আল্লাহু রাব্বুল আলামিনের কাছে তৌফিক কামনা করেছিলাম। তারপর দীর্ঘ সময়ে আমি কুরআনুল কারিম ও সিহাহ সিত্তাহ হাদিস গ্রন্থগুলোতে অন্তর্ভুক্ত প্রত্যেকটি গভীরভাবে অধ্যয়ন করে আমার নির্ধারিত সূচিপত্রের বিষয় অনুযায়ী কুরআনের আয়াত এবং হাদিসগুলো সংগ্রহ ও ক্রমানুসারে শ্রেণীবদ্ধ করেছি।’
তিনি প্রথমেই কুরআন তেলাওয়াতের প্রতি সুনির্দিষ্ট সুন্দর পথ আলোচনা করেছেন। এরপর শিল্প সাহিত্যের উন্নত নিয়মনীতি আলোচনায় প্রয়াস পেয়েছেন। কেননা কণ্ঠ মাধুরী, ধ্বনিসূষমা ও মোহনীয়তা নিয়ে আবৃত্তি এবং বিষয়বস্তুকে জীবন্ত করার যথাযথ তাগিদ দেয়া হয়েছে কুরআন ও হাদিসে। রাসূলুল্লাহ সা: কবি ছিলেন না, তবে আবৃত্তিশিল্পের প্রতি উৎসাহী ছিলেন। বক্তৃতা বিবৃতি ও কাজের মধ্যে তিনি নিজে কিছু কিছু কবিতা আবৃত্তি করেছেন, কবিতার উদ্ধৃতিও দিয়েছেন। লেখক এখানেও কুরআন ও হাদিস দিয়ে আলোচনা করে সুনির্দিষ্ট পাথেয় প্রদান করেছেন। ‘মসজিদে নববীতে আবৃত্তি করার জন্য রাসূল সা: মিম্বর স্থাপন করে দিয়েছিলেন। মুশরিক কাফিরদের বিরুদ্ধে কবিতা আবৃত্তিকে তিনি সাংস্কৃতিক যুদ্ধ বিবেচনা করতেন।’ বিরোধী অশ্লীল আক্রমণাত্মক কবিতার উত্তরে রাসূলুল্লাহ সা: ইসলামের সুমহান আদর্শ নন্দিত জীবনদর্শন ও কল্যাণকর মহাত্ম্য প্রচারের উদ্দেশ্যে কবি সাহাবিদের উত্তম কবিতা লিখে আবৃত্তি করার জন্য উৎসাহিত করেছেন, পুরস্কৃত করেছেন এবং কবিতা আবৃত্তি সম্পর্কে জ্ঞানগর্ভ সুবিবেচনা ব্যক্ত করেছেন।’ এসব বিষয় উঠে এসেছে এই বইটিতে।
আমাদের সমাজে সঙ্গীতের গুরুত্বও অপরিসীম। আছে অভিনয়, সিনেমা, নৃত্য ইত্যাদি। এর ভালো দিক অবশ্যই আছে। কিন্তু তার চেয়ে বেশি অশ্লীলতা আর আদর্শহীনতা আমাদের সমাজে ঢুকে পড়েছে।
এ ক্ষেত্রেও ইসলামের কী দিকনির্দেশনা ও ভূমিকা রয়েছে তাও লেখক উন্নতপন্থায় পর্যালোচনা করে সঠিক আলোচনা করেছেন। বাদ যায়নি কথা, ভাষা, হাস্যকৌতুক, ব্যঙ্গবিদ্রƒপ, কিস্সাকাহিনী শালীনতা, ভদ্রতা, ছবি আঁকা, রোগ, শিফা, গণক জাদু ইত্যাদিও। উল্লিখিত বিষয়সহ আরো অনেক প্রাসঙ্গিক বিষয়ও সুন্দরভাবে উঠে এসেছে বইটিতে। রয়েছে সুন্দর ও মার্জিত ভাষায় পরিশিষ্টও। বইটির প্রচার প্রসার কামনা করছি।
Ñ নূর মোহাম্মদ


আরো সংবাদ



premium cement