২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

কথা

-

আষাঢ়ের ঘোর বরষাদিনে ভেজানো দরজায় মৃদু শব্দের সাথে মেঝেতে সন্তর্পণে পা ফেলে সে যখন প্রথমবারের মতো খুব কাছে এলো, কী এক অসাড়তা আমাকে মূক করে রাখল। পার্শ্বচোখে তার এলোচুল, ফর্সা পা, ঝোলানো হাত, ওড়নার আঁচল, অদূরের চেয়ার ধরে দাঁড়ানো সবই নজরে এলো। তবু চুপ করে প্রথমে তার পক্ষ থেকে কিছু শোনার অপেক্ষায় অন্যমনস্ক বসে রইলাম। আগে কথা হয়নি কখনো; সম্ভবত এই সঙ্কোচে সে-ও ইতস্তত করতে লাগল। তার হাতের চাপে শূন্য চেয়ারের চার পায়ে মৃদু শব্দ হতে থাকলে আমি বই থেকে দৃষ্টি তুলে নিয়ে জানালা পথে বাইরে ফেলি। বাগানের বৃষ্টিস্নাত দোলনচাপায় তখন ঘন মেঘের ছায়া লেগেছে। দমকা হাওয়ার দোলা যেন বাইরে থেকে এসে আমার মনেও সঞ্চারিত হতে থাকে। দ্বিধান্বিত হচ্ছিলাম এই ভেবে : আগে কথা বলব কি না, কী বলব, কী সম্বোধন করব, আপনি নাকি তুমি বলব, জীবনে এতবার চোখাচোখি হয়েছেÑ কখনো সে কথা বলেনি, আজ এ বর্ষণ দিনে আমার এ একলা মুহূর্তে কেন সে ঘরে এলো। ভেতরে নানা প্রশ্নঝড়ের সাথে ক’ সেকেণ্ডের মধ্যে অতীতে তাকে দেখার যতসব স্মৃতি অতি দ্রুত মানসপটে বয়ে যেতে লাগল। মনে পড়তে লাগল : কতবার বসন্তের বৈরি হাওয়ায় তাকে দেখেছি চুল উড়িয়ে দরজার ওপাশেরই বকুল শাখায় বাধা দোলনায় সহাস্যে দোল খেতে, ধবধবে মুক্তোদাঁতে প্রাণখুলে হাসি ঝরাতে- কোনোদিন কথা হয়নি।
ভাবনার ফাঁকে কানে বৃষ্টির শব্দ প্রবলতর হয়ে বাজছিল। খোলা জানালায় দেখলাম বৃষ্টির ধারা শ্বেতশুভ্র হয়ে সামনের দৃষ্টিসীমাকে অবরুদ্ধ করে দিয়েছে। আকস্মিক বিজলীর চমক চোখে আঘাত হানলে ভয়ে জানালাটা বন্ধ করে দেই। প্রচণ্ড শব্দে খুব কাছেই কোথাও বজ্রপাত হলো। যে মৃদু আলোর উপস্থিতি এতক্ষণও ঘরটাকে অন্ধকারে হারাবার পথ থেকে টেনে রাখছিল জানালা বন্ধ করার সাথে তা মৃদুতর হয়ে ওঠে। ভাবলাম, এবারে কিছু একটা বলে ফেলি। কিন্তু বলতে হলো না। কারণ সে-ই মুখ খুলল, ভালো আছেন?
হ্যাঁ, আপনি?
আছি। একটু বসব? দাঁড়িয়ে থাকতে কষ্ট হচ্ছে। কাতর শোনাচ্ছিল তার কণ্ঠ।
বসুন।
কিছু মনে করবেন না। খুব প্রয়োজনে আপনার সাথে একটু কথা বলতে আসতে হলো। বসি-উহ্। কষ্টাভিব্যক্তি ঝরল তার কণ্ঠে।
জি, বলুন এবার। আমি কৌতূহলে তাকালাম।
কোনো দিন কথা হয়নি আপনার সাথে। আপনি কিছু মনে করবেন না তো?
না না, বলুন।
আমি আপনার চেয়ে বয়সে ছোট।
জানি।
তুমি করে বললেই খুশি হবো।
সমস্যা নেই, আপনি বলুন।
কথাটা আসলে আপনার বন্ধুর জন্য। তাকে একটু...।
ওর সাথে কথা হয় না আপনার? দেখা...? আপনাদেরই বাড়ি এটা। একই তো বাড়ি। বলতে গেলে...।
না, ও বাড়িতেই তো আসছে না দু’দিন ধরে।
আপনার সাথে বাইরে দেখা হয় না? খুব কাহিল লাগছিল তাকে।
না না, দু’দিন ধরে ও তো কলেজেই যায় না।
এ জন্যই বাড়িতে এলাম। তা বলুন ওকে কী বলতে হবে।
কী বলব আমি আপনাকে ? কী বলার আছে ? উ-হু-হু। আমি কিছু বলতে পারব না আপনাকে। আকস্মিক কান্নায় ভেঙে পড়ছিল সে; চোখ চেপে ধরছিল দু’হাতে।
হতবিহ্বলভাবে বললাম, কী সমস্যা? কোনো গুরুতর কিছু? আপনার সমস্যা হলে থাক; খুলে বলার প্রয়োজন নেই। আমি জানাব ওকে যে আপনার বিশেষ কথা আছে। দেখা করতে বলব আপনার সাথে। আপনি শান্ত থাকুন।
সে সুযোগ কী আছে? আর কী বলার আছে? কেউ যদি আমার হয়ে তাকে একটু বুঝিয়ে বলতÑ এমন কে আছে পৃথিবীতে? কেউ তো নেই-। কাকে কী বলব?
আপনি বিশ্বাস রেখে নিঃসঙ্কোচে বলতে পারেন। আমি অবশ্যই আপনার হয়ে ওকে বলব। কিন্তু একটু ধারণা পেলে তবে বোঝাতে পারতাম। বলবেন কি, কী বলব ওকে ? দেখুন যদি বলা যায়।
না না, কী বলব? কী বলা সম্ভব? ওড়নায় মুখ ঢাকল সে। মাথা নুইয়ে প্রায় ঊরু নাগাদ নিয়ে এলো।
আমি হতবিহ্বল বসে থাকি। কিছু না বলে হঠাৎ উঠে দাঁড়ায় সে। টলতে টলতে খোলা দরজা পথে এগিয়ে যায়। বাকরুদ্ধ তাকিয়ে থাকি আমি। দরজায় হাত রেখে খুব সন্তর্পণে পা বাড়াল সে। আঙিনায় পা চালাতেই হুমড়ি খেয়ে পড়তে গিয়ে কোনোমতে টাল সামলে নেয়। বৃষ্টির মধ্যে খুব ধীরে পা চালিয়ে আঙিনা পেরিয়ে তার ঘরের খোলা দরজা পথে অদৃশ্য হয়ে যায়। তাৎক্ষণিক দরজাটি বন্ধ হলো; খানিক পর ঘরের খোলা থাকা জানালাটিও।
বৃষ্টি এবার প্রবলতর হয়ে নামল। চার দিক থেকে ঘন মেঘের ছায়া এমনভাবে নিচে নেমে এসেছে যে চোখের নিমিষে খোলা আঙিনাসহ সম্মুখের ঘরগুলোও অদৃশ্য হয়ে এলো। আমি গভীর ভাবনায় ডুবি। এ বাড়িতে আমার আসা-যাওয়া প্রায় বছর সাতেক ধরে। বাড়ির মালিক প্রবাসী সেজান সিঁয়াধরের ভাতিজা তথা আমার সহপাঠী সেলিম সিঁয়াধরের সাথে বন্ধুত্ব ঘনিষ্ঠতাই এখানে নিয়মিত ঢুঁ দেয়ার কারণ প্রতীয়মান হলেও বাড়ির প্রাকৃতিক আকর্ষণও জোরালো কারণের মধ্যে পড়ে। বাড়িতে এ মুহূর্তে যারা অবস্থান করেন তারা হচ্ছেন সেলিমের চাচী, এক চাচাত বোন, এক গৃহভৃত্য ও সেলিম নিজে। পাশের সংলগ্ন বাড়িটি সেলিমের এক দূরসম্পর্কের মামার। তারই তরুণী মেয়ের নাম কথা, যাকে কিছুক্ষণ আগে সেলিমের ঘর থেকে বিদায় জানালাম। কিন্তু কী বলতে এসেছিল কথা, যা সে বলতে অপারগ হলো? আমি ভাবতে পারছি না কিছু। সবই কেমন রহস্যময় হয়ে উঠছে।
সেলিমের সাথে আমার এত বছরের ঘনিষ্ঠতা শুধুই পড়াশোনার বিষয়াদি ঘিরে। ওকে নিয়ে এ বাড়ির আশপাশে ঢুঁ দেয়া খুবই স্বাভাবিক ও নৈমিত্তিক ব্যাপার। মেয়েলী বিষয়ে কথাবার্তা সময় সময় হলেও তা কলেজের মেয়েদের নিয়েই সীমাবদ্ধ থাকে; গাঁয়ের কোনো মেয়েকে নিয়ে নয়। এ মেয়েটির সাথে আমার যেমন কখনো কথা হয়নি, সেলিমকেও তার সাথে ততটা ঘনিষ্ঠভাবে কখনো চোখে পড়েনি। তবে সে যে বিপদগ্রস্ত, খুব বিধ্বস্ত তা বলার অপেক্ষা রাখে না। মন খারাপ হয়ে গেল খুব। ঘোর বৃষ্টির মধ্যেই হেঁটে এক মাইল পথ পেরিয়ে বাড়িতে এসে উঠি। ভাবলাম, ওখানে আমার এই বুঝি শেষ।
বাস্তবে হলোও ঠিক তাই। সেলিমদের ও বাড়িতে যাওয়া আমার সত্যিকারেই বন্ধ হয়ে গেল। সপ্তাহখানেকের মাথায় খবর পেলাম সেলিম বাড়িটি ছেড়েছে, কলেজের পড়াশোনাও অসমাপ্ত রেখে ও চলে গেছে খুলনা শহরে। ওখানেই কী একটা টেকনিক্যাল কলেজে ভর্তি হয়ে তারই হোস্টেলে উঠেছে। এ দিকে কারো সাথে যোগাযোগ রাখে না। অতএব, বাড়িটাতে যাওয়ার আর প্রশ্ন আসে না। যাওয়া না পড়লেও কথার কথা প্রায়ই মনে পড়ে। সেলিমকে তার কী জরুরি কথা বলার ছিল সে রহস্য আর ভেদ করা হল না। সময় সময় এ নিয়ে ভাবনাচ্ছন্ন হই; আবার মুছেও ফেলি তা মন থেকে। এভাবে মাসখানেকের মতো অতিক্রান্ত হয়।
দুই
বিয়ে বাড়ির হই-হুল্লোড়, নানা কথোপকথনসহ বিচিত্র সব শব্দপাত সন্ধ্যায় এখানে ওঠা অবধিই কানে উঠছিল। কিন্তু ওসব আমার মধ্যে কোনো প্রকার আগ্রহ তৈরি করছিল না। শহরের কলেজ থেকে ফেরার পথে আকস্মিক সিদ্ধান্তে মাঝপথে অবস্থিত বড় বোনের শ্বশুরবাড়িতে এসে উঠেছি। সারা দিনের কর্মক্লান্ত শরীরে অনেকটা নির্জীব মাথা গুঁজে আছি খাটে।
আমার ভাগ্নে ভাগ্নিরা থেকে থেকে শব্দ করে ঘরে উঠছে; আবার বেরিয়েও যাচ্ছে শব্দ করে। পাশের বাড়িতে বিয়ে। ও বাড়িতে ঢুঁ দেয়াই ওদের প্রধান কর্তব্যে পরিণত হয়েছে। আমার বোনটিও ও বাড়ির আয়োজনে উল্লেখযোগ্য শামিল। সে-ও থেকে থেকে ও বাড়ি থেকে এসে আমার খোঁজখবর করছিল আমি ঠিক আছি কি না, অসুখ-বিসুখ করল কি না, বিয়ে বাড়ি যেতে আগ্রহী কি না প্রভৃতি। আমি মাথা নেড়ে হ্যাঁ-না জবাব দিচ্ছিলাম।
রাত ১০টার দিকে বরযাত্রী যখন নতুন বউ নিয়ে ফিরল, তখন বাড়িটা যেন নতুন উদ্যম উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়ল। হই-হুল্লোড়, উচ্চস্বরে গানবাজানোর সাথে পটকা ফুটল। বাজির আলোয় চার দিক উদ্ভাসিত হতে লাগল। এক ফাঁকে আমার বোন এসে টেবিলে খাবার তুলে দিয়ে বলল, বউ খুব সরস। এমন বউ পাওয়া এদের চৌদ্দপুরুষের ভাগ্য। আমি বললাম, ছেলে কেমন? কী করে?
আছে, বনের মোষ তাড়ায়।
মানে?
বাপদাদার জমি জমা ধনদৌলত আছে। খায় দায় ফুর্তি করে, ঘুরে বেড়ায়।
আর?
এলাকায় মাস্তানি-চাঁদাবাজি করে। মাঝে মধ্যে জেলেও যায়।
ও... মেয়েটার পরিবার মনে হয় ভালো।
তা অতটা জানি না; আমাদের ওই দিকে বীর কাশিমপুর না মীর কাশিমপুর-কোন গাঁয়ে নাকি বাড়ি। তা যা-ই হোক মেয়েটা সাক্ষাৎ হুর পরী।
ও...।
তা যাবি নাকি ? গেলে চল বৌ দেখাইয়া আনি।
নাহ্, ভালো লাগছে না থাক।
ঠিক আছে, ঘুমা তাহলে। বৌ দিনেও দেখা যাবে।
পরদিন ও বাড়িতে বৌভাত। বোনের বাড়িতে সপরিবারে দাওয়াত পড়ায় এখানে কোনো রান্নাবান্নার ব্যবস্থা হয়নি। বোন আসলে চাচ্ছে দাওয়াত খাওয়ার ফাঁকে আমি নতুন বউটা দেখে আসি। দুপুর বেলা একান্ত বাধ্য হয়েই তাই বিয়েবাড়ি হাজির হতে হলো। বাড়ির আঙিনায় পা দিতেই এলাকার কিছু চেনামুখ চোখে পড়ল। কিছুটা বিস্ময় জাগল সেলিমদের বাড়ির আশপাশের কিছু লোককে দেখে। এসব লোক মুখচেনা মাত্রÑ কখনো কথা হয়নি। আমি যেমন তাদের দিকে তাকাচ্ছিলাম, তারাও কৌতূহলে তাকাচ্ছিল আমার দিকে। আঙিনার মাঝামাঝি খাওয়া-দাওয়ার আয়োজন করা হয়েছে। খাওয়া শেষে উঠে দাঁড়াতেই আমার বোন এসে আমাকে টেনে নিয়ে যায় বাড়ির বড় ঘরটির দিকে, কনে দেখাতে। ঘরটির দরজায় দাঁড়িয়ে ভেতরে দৃষ্টি ছুড়তেই বিস্ময়ে থ মেরে যাই। ঘরের খাটে কনে বেশে বসে আছে কথা। আমাকে দেখেই ভূত দেখার মতো চমকে মাথা নুয়ায় সে। কী এক অজ্ঞাত অনুভবে আমারও মাথা নুইয়ে যায়।
বিয়েবাড়ি থেকে বোনের বাড়িতে এসে ঘুম দিয়েছিলাম। বিকেলে আমার ভাগ্নে ভাগ্নীর ডাকে জেগে উঠি। আমার মাথার ডানেই জানালা। ওখানেই কথা বলছে ওরা, মামা মামা, বউ দেখবেন? এই যে নতুন বউ এসেছে। দাদুকে দেখাতে নিয়ে এলাম। চোখ না খুলেই বললাম, না, ঘুম ছাড়ছে না। তোরা যা। পরে দেখব।
ওরা সশব্দে ভেতর বাড়িতে চলে যায়। আমার বোনের শাশুড়ি অশীতিপর বৃদ্ধা। বিছানা থেকে উঠতে পারেন না। প্রতিবেশীর কর্তব্য পালনসূত্রে হয়তো তাকে বউ দেখাতে এনেছে বরের বাড়ির লোকজন। ও ঘরে হইচই কথোপকথন শুনছি। আমি ঢি মেরে শুয়েই থাকি। বউয়ের সাথেও বাড়ি থেকে আসা কেউ কেউ তাৎক্ষণিক চলে যায়। মিনিট দশেক পর বউকে এ বাড়ি থেকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। উঠান দিয়ে চলা সমবেত পদশব্দগুলো আমার জানালার ওপাশে এসে হঠাৎ থেমে যায়। তৎক্ষণাৎ যুগপৎ কিশোরীকণ্ঠ শুনি ও ভাবী, কী হলো?
কিছু না, জুতায় যেন কী হয়েছে। তোমরা হাঁটো সামনে। কথার কণ্ঠ।
কী হয়েছে জুতায় ?
আহা, একটু আগাও না তোমরা। যাও তো।
ডানে তাকিয়ে দেখি দু’জন কিশোরী হেঁটে গিয়ে অদূরের গাছের নিচে দাঁড়াল। কথা উবু হয়ে জুতায় হাত রাখছে। ওই অবস্থাতেই এ দিকে দৃষ্টি ঘুরিয়ে সে বলল, ভালো আছেন?
হুম।
শুনলাম আপনার বোনের বাড়ি।
হুম।
একটা কথা ছিল জরুরি।
বলুন।
ওই দিনের ওইা কথাগুলো দয়া করে বলবেন না এখানকার কাউকে। বিনীত অনুরোধ। কেউ জানলে আমার খুব সমস্যা হবে।
কী কথা?
সেলিম বলেনি কিছু? ওই যে বলতে চেয়েছিলাম আমি। কথা পরম কৌতূহলে তাকাল।
না। ওর সাথে তো আর দেখাই হয়নি কোনো দিন। ওই যে চলে এলাম ওকে না পেয়ে। তা ছাড়া আমি কাকে কী কথা বলতে যাবো? কেনই বা বলব?
আচ্ছা আসি।
ঠিক আছে।
কথা সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে জুতার দিকে দৃষ্টি রেখে পা দিয়ে মাটিতে বার দুই মৃদু আঘাত করে ওদিকে হাঁটতে থাকে। আমি সোজা হয়ে বসি। বিস্ময়ভরা চোখে দেখি ভারী জামদানি পরা কথা দু’পাশে দুই কিশোরীর হাত ধরে ওর শ্বশুরবাড়ির পথে দ্রুত অদৃশ্য হয়ে গেল।
তার পর প্রায় বছর দেড়েক পেরিয়ে গেছে। এর মধ্যে কথা কিংবা সেলিম কারোরই কোনো খোঁজখবর আমার জানা হয়নি। এক বিকেলে শহর থেকে বাড়ি ফিরেছি মাত্র। জাপান থেকে আমার নামে একটা চিঠি এসেছে জেনে কৌতূহলী হই। কে লিখেছে চিঠি? ওদেশে তো পরিচিত পরিমণ্ডলের কেউ নেই। তবে?
চিঠিটা হাতে ধরে আরো বেশি কৌতূহলী হই। সেলিমের চিঠি। ভাবি কী মনে করে কী লিখল এত দিন পর? দ্রুত খুলে ফেলি খামটা। খুব বিস্মিত হই। ভেতরে চিঠি বলতে যা বোঝায় তেমন কিছু আসলে নেই। ক’টা মেয়েলী নগ্ন ছবি। ছবির সবাই বিদেশিনী। ছবিগুলোর একটার পেছনে গাঢ় নীল কালিতে লেখা : মোহন, টেকনিক্যাল কলেজে ট্রেনিং শেষে আমি এ দেশে চলে এসেছি, বুঝলি? চমৎকার জায়গা। সমুদ্রতীরে রৌদ্রস্নানের যা দৃশ্য! আমি ঢি দিয়া শুধু তাকিয়ে থাকি। না দেখে বোঝা যাবে না। বোঝার জন্য এগুলো পাঠলাম। শুনলাম তোর নাকি বেশ উন্নতি হয়েছে। আমি চাচার বাড়িতে নেই জেনেও বৃষ্টি-বাদলার দিনে নাকি ঘনঘন আমার খোঁজে সেখানে যাওয়া হতো। আজকাল বোনের বাড়িতেও নাকি খুব ঘন ঘন যাতায়াত হয়। বেশ তো। ভেবেচিন্তে তাই তোর জন্য এগুলো পাঠালাম। আশা করি, বেশ কাজে দিবে তোর। এবার বিদায়।
পড়া শেষে ছবিগুলো কুটি কুটি করে জঙ্গলে ছুড়ে মারি। মনে মনে ভাবি, আসলে কেমন আছে কথা। ওর কপালে যা ঘটেছে তা কি ভালোর মন্দ নাকি মন্দের ভালো? হ

 


আরো সংবাদ



premium cement
দ্রব্যমূল্য ঊর্ধ্বগতিতে সাধারণ মানুষ দিশেহারা : আমিনুল লিবিয়ায় নিয়ে সালথার যুবককে নির্যাতনের ঘটনায় মামলা, গ্রেফতার ১ মনুষ্য চামড়ায় তৈরি বইয়ের মলাট সরানো হলো হার্ভাড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আওয়ামী লীগকে বর্জন করতে হবে : ডা: ইরান আমরা একটা পরাধীন জাতিতে পরিণত হয়েছি : মেজর হাফিজ তরুণীর লাশ উদ্ধারের পর প্রেমিকসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা ভিয়েনায় মুসলিম বিশ্বের রাষ্ট্রদূতদের ইফতারে ইসলামিক রিলিজিয়াস অথোরিটি আমন্ত্রিত এবার বাজারে এলো শাওমির তৈরি বৈদ্যুতিক গাড়ি সকল কাজের জন্য আল্লাহর কাছে জবাবদিহিতার অনুভূতি থাকতে হবে : মাওলানা হালিম বিএনপি জনগণের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য রাজনীতি করে : ড. মঈন খান সাজেকে পাহাড়ি খাদে পড়ে মাহিন্দ্রচালক নিহত

সকল