২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

সাহিত্য কবিতাবলী

-

জাহাঙ্গীর ফিরোজ
ঠোঁটে তর্জনী

যে কথা বলতে চেয়েছি, সেকথা হলো না বলা;
অন্ধকার ঘিরে ধরে পৃথিবীর আলো,
আজ তাই ভাবনায় সবকিছু এলোমেলো
আকাশ পাতাল থেকে উঠে আসা হাহাকার
চুপ হয়ে গেল
কারো মুখে শব্দ নেই কোনো।
ভয়ে বীণ রাত্রি দিন
অগণন মিথ্যের দাপটে আতঙ্কে ডুবে যায়।

কথক পাখিটি আর বলবে না কিছু;
বলার ইচ্ছেগুলো উপ্ত থাক
সুপ্ত বিশ্বাসের নাবাল জমিতে।

এখন গ্রহণ কাল
রাহু গিলে নিয়েছে আলোকে
আবার গ্রহণ কাল শেষ হবে;
তবু আশাহীন!
বিশ্বাসেরও মৃত্যু হয় কী?
কেউ আর বলছে না কিছু
মূক ও বধির যেন চেয়ে আছে!
কেউ কিছু শুনছে না আর
ভয় ও আতঙ্ক চোখে
রুদ্ধ ঠোঁটে তর্জনী আজ।

সুহৃদ সরকার
শিল্পের শহর
আল মাহমুদ প্রিয় কবিকে

শিল্পের শহর ছেড়ে কতদূরে চলে যান কবি
আপনাকে নিয়ত খুঁজি রাজপথ ঘুপচি গলিতে
কতটা বাস্তব আপনি কতটা সে ছবি
একথা ভাবতে ভাবতে আপনার সতীর্থের দিন কেটে যায়Ñ
হায়! কখন কে চলে যায় কখন যে আসে
বুকের কষ্টগুলো কখন যে যমুনায় ভাসে
কে জানে? আমি জানি আপনার এই চলে যাওয়া
যাওয়ার নামেই শুধু ফিরে ফিরে আসা
কবি আর কবিদের সমুদয় সুখ দুঃখ ভাষা
ফুল হয়ে ফুটে থাকে মনোজাগতিক এক শুদ্ধ বাগানে
সে বাগানে পাখি থাকে কবি আর কবিতা ও গানে।

আপনার পদচিহ্ন ধরে পথ চলে অগুনতি পথিক
আপনিও তাহার আর তাহাদের সাথেও সঠিক
পথ ধরে হাঁটতে থাকেন অনন্ত অসিম এক গন্তব্যের দিকেÑ
আলোকের ধারায় আপনি স্নাত হয়ে থাকবেন কবি
আমাদের ভালোবাসা দুঃখ সুখ সমস্ত উৎসবে।

স্বপন শর্মা
দুঃখগুলো

দুঃখগুলোÑ
উড়ন্ত একঝাঁক পোষ্যপাখির মতো
সারাদিন অন্যের পরিত্যক্ত মাঠে
উচ্ছিষ্ট শস্যদানা খুঁটে, খুঁটে ভোজন সারে

দিনের শেষে ঝাঁক বেঁধে ঘরে ফেরে
সমস্ত রাত আমার অস্তিত্বজুড়ে বিচরণ

ঘুমহীন রাতে ভাবলামÑ
দুঃখগুলোকে ঝেটিয়ে বিদায় করব রাত পোহালে
সকালে ছুটলাম সবুজ অরণ্যের পানে
গভীর অরণ্য পেয়ে দুঃখগুলোকে মুক্ত করে দিলাম

দুঃখগুলোÑ
খুব সুখে থাকবে সবুজ বনে
তারপর দীর্ঘশ্বাস নিয়ে ঘরের পানে ফিরে,
উঠোনে এসে দেখি, আমার ভগ্নদশা ঘরের চালে,
সারি বেঁধে বসে আছে উড়ন্ত পোষ্যপাখির দল

আমার দুঃখগুলোÑ
উড়ন্ত একঝাঁক পোষ্যপাখির মতো
যতবার ছেড়েছি দূরে কোথাও
ততবার ফিরেছে আমার ঘরে

আজও পাইনি মুক্তি দিতে কিম্বা মুক্ত হতে...

সাঈদ কামাল
নির্বাসন

লিলিয়া,
আমরা নির্বাসনে যেতে প্রস্তুতি নিই আজ রাতে,
নীল পাখির মতো উড়তে উড়তে, সমস্ত ন্যায্যতাকে মুক্তি দিয়ে,নির্বাসনে যাবো।
রাতভর কুয়াশায় ভিজতে থাকা ঝুমকো লতা দেখে আমরাও শিখে নেবো,নিষ্পেষিত হওয়ার মতো শিল্প আর নেই।
লিলিয়া,
আমরা ভুলে যাবো, এইখানের সব স্মৃতি, অবহেলা, ঘৃণা আর নিঃসঙ্গতার কথা,
ব্লাক কেইমেন দিয়ে মানুষকে নির্বাচিত করার কথা, আমরা কোনোদিনও ভাববো না।
লিলিয়া,
আমরা নির্বাসনে যাবো, সুন্দরকে শকুনের খাদ্য করে দিয়ে ঝুনঝুনি নুনির লতাদের মতো সংসার শুরু করব।

 


আরো সংবাদ



premium cement