১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫
`

সোনালী কাবিন হোক ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ

-


প্রাণপাখি উড়ে গেল খাঁচার বন্ধন ছিঁড়ে চিরতরে, এরকমই যায়
কবি নাও ভেড়ালেন দীঘল সফর শেষে অচিন গাঙের কোনো ঘাটলায়
কেমন গন্তব্য ঠাঁই? কীরকম আচার-নমুনা? যার কোনো অবয়ব মানুষ দেখে না
নশ্বর দেহের মুক্তি মরমিয়া আকাশে বাতাসে ব্যাপ্ত দূরতর দিগন্তরেখায়
কিন্তু তাঁর দেশপ্রেম কীর্তিগাথা নক্ষত্রদ্যুতিতে জ্বলে, ওটাই তো অমোঘ নিয়ম।
কবির প্রস্থানে কাঁদে বাংলাদেশ, হাওর গোপাট চর আলুথালু বিষণœ প্রকৃতি
বর্ণমালা আর্তনাদে ডুকরে ওঠে, চরাচরে ব্যথিত ডাহুকপাখি স্তব্ধ হয়ে রয়।
কিন্তু হায়! মানুষেরা মর্মান্তিক ব্যতিক্রম, তারা নিচু বিদ্বেষের রসায়নে
দিন দিন সঙ্কুচিত হয়েই চলেছে, এইমত অধ্যায়ের অবসানও নাই।
ক্ষমতান্ধ মূঢ় মানুষের দর্প প্রতিহিংসা, ক্ষুদ্রতার চাষাবাদ কবির প্রস্থানপর্ব
অবজ্ঞার অশোভন শীতল চাদরে শৈত্যে ঢেকে দিতে চাইলেও
শেষতক পারে না সফল হতে, বিবেকের দংশনের মুখোমুখি হয়
কবির কী আসে যায় কিছু? প্রকৃতিই বিউগলে বাজায় করুণ সুর
মুক্তিযোদ্ধা কবির প্রকৃত সম্মান দিতে একমাত্র নিরপেক্ষ প্রকৃতিই জানে!

দুলে ওঠে মায়াবী পর্দার ঢেউ, কবি ক্রমে নিরুদ্দেশ অনন্ত উড়ালে
তিতাসের মৃদুমন্দ ভেজা হাওয়া বিলি কাটে তার চুলে, সখ্য অপরূপ
কালের কলস থেকে স্বাদু পানি ইচ্ছামত ঢেলে তৃষ্ণা নিবারণ করে যান কবি
কাজ সমাপন শেষে চলে যেতে হয় তাঁকে একদিন লোক থেকে লোকান্তরে,
সৌরভের কাছে নন পরাজিত, নদীর ঢেউয়ের কাছে বলেছেন অহর্নিশ কবুল কবুল
অগ্নিঝরা ঊনসত্তর ঝলসে ওঠে স্বাধীনতাকামী ক্ষুব্ধ কবির কলমে
মতিউরকে ডাক দেন, একাত্তরে কলকাতায় শরণার্থী জীবনের দিনলিপি
জ্বলজ্বলে ভাষা পায়, মুক্তিযুদ্ধ সশস্ত্র ক্রন্দনে ক্রমে বেগবতী নদীর ধারায়
আকাক্সিক্ষত সমুদ্রের দেখা পেয়ে যায়, লাল সবুজের স্পর্ধা জয়যুক্ত হয়Ñ
সোনালী কাবিন হোক বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ, এই দাবি ইউনেস্কোর কাছে
কবি তো দেশের নন, নির্দিষ্ট গণ্ডিরও নন, কোনো ক্ষুদ্র কালেরও প্রতিভূ নন
পরম্পরাক্রমে তিনি সর্বমানবের, তিনি গোটা বিশ্বসভ্যতার, কিছুতেই দূরগামী নন
যতদিন বাঁচবে বাংলা বর্ণমালা, ততদিন অক্ষয় অমøান থাকবে আয়ুষ্মান এসব কবিতা...


আরো সংবাদ



premium cement