২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

মহাকাব্য প্যারাডাইস লস্ট ও জন মিলটন

-

১৬০৮ সালের ৯ ডিসেম্বর ইংল্যান্ডের লন্ডন শহরের ব্রেড স্ট্রিটে জন্মগ্রহণ করেন ইংরেজি সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবি জন মিলটন। তিনি ইংরেজি সাহিত্যের অন্যতম প্রধান ও প্রভাবশালী কবি। শেক্সপিয়ারের পরেই যার স্থান বলে মনে করেন অনেকে। স্কুলের ছাত্র থাকাকালে মিলটন নিয়মিত পড়াশোনার পাশাপাশি লাতিন, গ্রিক, হিব্রু ভাষা ও সাহিত্য অধ্যয়ন করেন। সেই সাথে কাব্যচর্চাও শুরু করেন। ১৬২৬ সালে কলেজে পড়ার সময় তার প্রথম কবিতা প্রকাশিত হয়। তার সবচেয়ে বিখ্যাত ও কালোত্তীর্ণ সৃষ্টি মহাকাব্য Paradise Lost। এ ছাড়া তার রচিত উল্লেখযোগ্য রচনাসমূহ হচ্ছেÑ কবিতাগ্রন্থ লাইসিডাস, প্যারাডাইস রিজেন্ট, স্যামসন এনিস্তে, লা এলেগ্র,কাব্যনাটক কমাস,গদ্য রচনা অব এডুকেশন, এরিওপোজিটিকা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
প্যারাডাইজ লস্ট মহাকাব্যটি মিলটনের সময় থেকে আজ অবধি ইংরেজ সাহিত্য-সমালোচনার কেন্দ্রেই রয়ে গেছে। ১৬৫৮ থেকে ১৬৬৪ সালের মধ্যে মিলটন তার মহাকাব্য প্যারাডাইজ লস্ট রচনা করেন। বাইবেলের কাহিনীকে ভিত্তি করে রচিত এই মহাকাব্যটি ১৬৬৭ সালে প্রকাশিত হয়েছিল। মানুষ জীবনের সব প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে কিভাবে মহান হতে পারেন তার উৎকৃষ্ট উদাহরণ তিনি। সে সময় তিনি অন্ধ এবং দরিদ্র ছিলেন। মহাকাব্যটি তার নিজের জীবনের হতাশা এবং ব্যর্থতা তুলে ধরে, একই সাথে মানুষের সুপ্ত মতাকে নিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করে। মহাকাব্য Paradise Lost শুধু ইংরেজি সাহিত্যই নয় বরং বিশ্বসাহিত্যের অন্যতম সেরা সম্পদ। ব্লাঙ্ক ভার্স বা মুক্ত ছন্দে রচিত মহাকাব্যটি নিয়ে তখন থেকেই বর্তমান অবধি ব্যাপক ধর্মীয় সমালোচনা আছে। সেখানে স্রষ্টা এবং শয়তানের ভূমিকা ভিন্নভাবে উপস্থাপন করেছেন তিনি। যা জন্ম দেয় ইতিহাসের অন্যতম সেরা সাহিত্য বিতর্কের। পরে ১৬৬৭ সালে দশ খণ্ডে প্রকাশিত হয়েছিল সেটি। প্রকাশের পর পরই দুনিয়াব্যাপী আলোচিত-সমালোচিত হন তিনি। তারই ধারাবাহিকতায় ১৬৭১ সালে প্যারাডাইস লস্ট’র পরবর্তী অংশ প্যারাডাইজ রিগেইনড প্রকাশিত হয়। সেটা নিয়েও কম আলোচনা হয় না। এটাও কাসিক মর্যাদা পেয়েছে।
১৬৪২ সালে ইংল্যান্ডে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। সে সময় মিলটন তার সেরা সাহিত্য রচনা শুরু করেন। সংবাদপত্রের স্বাধীনতা বিষয়ে তার এ্যারোপাগিটিকা Areopagitica ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে।
১৬৪৯ সালে মিলটন রচনা করেন The Tenure of Kings and Magistrates। এ বইতে রাজার করুণ পরিণতির কথা তুলে ধরেছেন। জনগণই যে দেশের সর্বময় মতার অধিকারী তা উপস্থাপন করতে চেয়েছেন।
১৬৪২ সালে পার্লামেন্ট এবং রাজার মতবিরোধের কারণে ইংল্যান্ডে গৃহযুদ্ধ শুরু হলে মিলটন পার্লামেন্টের সমর্থনে গদ্য রচনা শুরু করেন। এ সময় সংবাদপত্রের স্বাধীনতা বিষয়ে লিখিত তার Areopagitica (১৬৪৪) গ্রন্থটি বিশেষ আলোড়ন সৃষ্টি করে। গৃহযুদ্ধের পর ইংল্যান্ডের রাজা প্রথম চার্লসকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হলে মিলটন এর আলোকে Kings and Magistrates (১৬৪৯) শিরোনামে বিখ্যাত রাজনৈতিক পুস্তিকাটি রচনা করেন। এতে রাজার করুণ পরিণতির কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, জনগণই দেশের সর্বময় মতার অধিকারী। এরপর ক্রমওয়েল কাউন্সিল অব স্টেটের প থেকে মিলটন দেশের বিদেশী ভাষাবিষয়ক সচিব নিযুক্ত হন। ১৬৫১ সালে তিনি কমনওয়েলথ নিউজ পেপার কর্তৃক প্রকাশিত Mercurius Polilicus পত্রিকার প্রধান স¤পাদক পদে যোগ দেন।
১৬০৮-১৬৭৪ জন মিল্টন সপ্তদশক শতাব্দীর ইংরেজ কবি, গদ্য লেখক এবং ইংরেজ কমনওয়েলথের একজন সরকারি কর্মচারী। বিভিন্ন সামাজিক ও সাহিত্য জার্নালের কল্যাণে মিলটনের অবদান একুশ শতাব্দীতেও অটুট রয়েছে। তার মৃত্যুর পর থেকে আজ পর্যন্ত মিলটনের জীবন নিয়ে বিস্তর গবেষণা হয়েছে। ১৬৭৪ সালের ৮ নভেম্বর লন্ডন শহরে মারা যান ইংরেজি তথা বিশ্বসাহিত্যের অন্যতম মহান কবি জন মিলটন।


আরো সংবাদ



premium cement
সাটুরিয়ায় প্রশান্তির বৃষ্টি চেয়ে সালাতুল ইসতিসকা আদায় ইরান নিয়ে মার্কিন হুঁশিয়ারি পাকিস্তানকে গাজায় গণকবরের বিষয়ে ইসরাইলের কাছে ‘জবাব’ চেয়েছে হোয়াইট হাউস দ্বি-রাষ্ট্র সমাধান বাস্তবায়ন করা হলে হামাস অস্ত্র ছাড়তে রাজি শনিবার থেকে শুরু গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা, প্রস্তত জবি ক্যাম্পাসগুলোতে মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে সমর্থন করেন বাইডেন: মুখপাত্র নোয়াখালীতে ইসতিসকার নামাজ আদায় জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তিভাব থাকবে বান্দরবানে বৃষ্টির চেয়ে চোখের পানি ফেলে বিশেষ নামাজ চকরিয়ায় যুবককে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা, গ্রেফতার ৭ উপজেলা নির্বাচনে ব্যর্থ হলে গণতন্ত্র ক্ষুণ্ন হবে: সিইসি

সকল