২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

নীল নীল সাদা ঢেউ

-

শরতের আকাশটা ভীষণ মায়াবী কোমল। রোদ উঠেছে কি ওঠে নাই, নীল আর সাদা রঙ ছড়িয়ে দিয়ে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকায়। মনে মনে বলে, ‘দ্যাখো তো কে বেশি সুন্দর, আমি না ওই নদীর বুকে নীল নীল সাদা ছায়াটা, নাকি আম-জাম-শাল-তাল-তমালের মায়া মায়া সবুজ, নাকি হাততালি দিয়ে আনন্দে নাচতে থাকা কাশের বন অথবা রঙ-বেরঙের পাখপাখালি, ওদের কিচির-মিচির গানের সুর?’ আমি বলি ‘তোমাকে দেখে আজ সবাই সুন্দর!’ আকাশ একটু অভিমান করে, আবার হাসতে হাসতে কোথায় ভেসে যায়।
আকাশের মেঘগুলো উড়ে উড়ে ঘুরে ঘুরে নীরব মুখরতায় ছুটে বেড়ায়। মনটা কেবলই পেছন ফিরে যেতে চায়Ñ সেই যে ফুল আঁকা ফ্রক পরা ছেলেবেলাটায়, যখন খালি পায়ে বেণী দুলিয়ে ঘুরে ঘুরে ফুল পাখি আকাশ আর নদীর সাথে কথা বলার সময় ছিল। ওই রঙিন দিনগুলোর কথা তো শুধু মনেই পড়ে। আজ এ-ও কি সম্ভব?
কিন্তু এই অবেলার বেলায়ও যে আমি ফুল, পাখি, নদী আর আকাশের সাথে কথা বলতে চাই! নদীর পাড় ধরে দৌড়ে যেতে চাই যতদূর যাওয়া যায়। নীল নীল সাদা আকাশ আর নদীর বুকজুড়ে বিছিয়ে থাকা আকাশের ছবিÑ দুটোই যে দেখতে চাই, কাশের বনে ছুটে বেড়াতে চাই! কী যে ভাবি!
কিন্তু আকাশ আমাকে বড্ড ভালোবাসে! আমি দূর থেকেই দু’চোখ মেলে আকাশকে দেখি, তাই বলে আকাশ কিন্তু একটুও রাগ করে না। আমি যখন আকাশকে শুধাই ‘কি গো এত নীল কোথা থেকে পেয়েছ? আর এত সাদা?’ আকাশ বড় বড় চোখে আমার দিকে তাকায়, চোখে চোখে কথা বলে, আর গৌরবে যেন ঝলমল করে ওঠে। আকাশটা ওই নীল আর সাদায় কত যে ছবি এঁকে যায়! আকাশের মেঘগুলো কখনো মনে হয় হাতে মস্ত একটা তলোয়ার নিয়ে যেন সেনাপতি দাঁড়িয়ে আছে, আবার সরে যায়, আবার মেঘগুলো ভেঙে ভেঙে মাতাল নদী হয়ে যায়, একটা পালতোলা সাদা নৌকা যেন নীল সাগরে দুলতে থাকে... ভাসে... আবার হারিয়ে যায়। আমি দু’চোখ ভরে দেখি।
আকাশটা ভারি সুন্দর! নীল নীল সাদা ঢেউ যেন আমার অনেক কাছে এসে আমাকে ছুঁয়ে ছুঁয়ে যায়, আবার কার টানে যে কোথায় হারিয়ে যায়।
আমি আদর করে ডাকলে...
আবার কাছে আসে...
হাসে... কেবলই হাসে...
যে হাসিটা আমি বড্ড ভালোবাসি!!! ঘ


আরো সংবাদ



premium cement