২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`

ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্তকে জাপার যুগ্ম মহাসচিব করায় গাজীপুরে বিক্ষোভ

আহসান উল্লাহ মাস্টার হত্যায় ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্তকে জাপার যুগ্ম মহাসচিব করায় গাজীপুরে বিক্ষোভ - নয়া দিগন্ত

গাজীপুরের আহসান উল্লাহ মাস্টার এমপি হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি নুরুল ইসলাম দিপুকে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম মহাসচিব করায় গাজীপুরে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ মিছিল অব্যাহত রয়েছে। বুধবার বিকেলে গাজীপুর জেলা শহরের ভাওয়াল রাজবাড়ি রোডস্থ আওয়ামীলীগের দলীয় কার্যালয়ের সামনে মহানগর সেচ্ছাসেবকলীগের কর্মীরা প্রতিবাদ সমাবেশ ও বিক্ষোভ করেছে। গাজীপুর মহানগর স্বেচ্চ্ছা সেবক লীগের সভাপতি সঞ্জিত মল্লিক বাবুর সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মহানগর আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট ওয়াজ উদ্দিন মিয়া,আব্দুল হাদী শামীম,হাজী মোঃ সেলিম, মোঃ শাহজাহান, সাইফুল্লাহ শাওন, আনোয়ার হোসেন, রাজু শাহ, আনিছুর রহমান খোকন প্রমুখ।

সমাবেশে বক্তারা শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত আসামি নুরুল ইসলাম দিপুকে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে বহিষ্কার ও তার মৃত্যুদণ্ডের রায় কার্যকরের দাবী জানিয়ে বলেন, বিদেশ পলাতক ফাঁসির আসামিকে জাতীয় পার্টি যুগ্ম মহাসচিব পদে মনোনীত করে জনপ্রিয় শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার এমপি’র আত্মাকে অপমান করেছে। এসময় বক্তারা খুনি নুরুল ইসলাম দিপুকে কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিবের পদ থেকে বাদ দেয়া না হলে গাজীপুরে জাতীয় পার্টির সকল রাজনৈতিক কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়ার ঘোষণা দেন।

পরে একটি বিক্ষোভ মিছিল দলীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। মিছিল শেষে নুরুল ইসলাম দিপুর কুশপুত্তলিকা দাহ করে বিক্ষোভকারীরা।

এদিকে একই দাবীতে গত কয়েকদিন ধরে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের চান্দনা চৌরাস্তা ও টঙ্গীসহ বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভ, প্রতিবাদ সমাবেশ ও সড়ক অবরোধ করেছে ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবকলীগসহ অঙ্গসংগঠনের নেতা কর্মীরা।

গাজীপুরের জনপ্রিয় নেতা সংসদ সদস্য আহসান উল্লাহ মাস্টার ২০০৪ সালে ৭ মে গাজীপুরের টঙ্গীর নোয়াগাঁও মজিদ মিয়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে স্বেচ্ছাসেবকলীগের সম্মেলন চলাকালে সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হন। এসময় গুলিতে ওমর ফারুক রতন নামের আরো একজন কিশোর নিহত হন। ঘটনার পরদিন নিহতের ছোট ভাই মো. মতিউর রহমান বাদী হয়ে ১৭জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ১০-১২জনের বিরুদ্ধে টঙ্গী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ মামলার তদন্ত শেষে ওই বছরের ১০ জুলাই ৩০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। একই বছরের ২৮ অক্টোবর ৩০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। রাষ্ট্রপক্ষে ৩৪ এবং আসামিপক্ষে দুজন সাক্ষ্য দেন। এ মামলায় ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিন ২০০৫ সালের ১৬ এপ্রিল রায় ঘোষণা করেন। ওই রায়ে প্রধান আসামি বিএনপি নেতা নুরুল ইসলাম সরকারসহ ২২ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড, ছয় আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড এবং দুইজনকে খালাস দেয়া হয়। পরবর্তীতে কয়েক আসামি তাদের দন্ডাদেশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করেন। শুনানি শেষে সর্বশেষ ২০১৬ সালের জুন মাসে উচ্চ আদালতের রায়ে ছয়জনের মৃত্যুদন্ড, ৮ জনের যাবজ্জীবন দন্ডাদেশ দেন। রায়ে দ্রুত বিচার আদালতে মৃত্যুদন্ড অথবা যাবজ্জীবন কারাদন্ড হয়েছিল এমন ১১জন আসামিকে খালাস দেয়া হয়। দন্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত বিএনপি নেতা নুরুল ইসলাম সরকার, মাহবুবুর রহমান ও সোহাগ এবং যাবজ্জীবন কারাদন্ড প্রাপ্ত মোহাম্মদ আলী ও নুরুল আমিনসহ ৮জন বিভিন্ন কারাগারে বন্দী রয়েছে। নুরুল ইসলাম দিপুসহ বাকি দন্ডপ্রাপ্তরা ভারত, ইতালি, বেলজিয়া, ফ্রান্সসহ বিভিন্ন দেশে পলাতক রয়েছে।

 


আরো সংবাদ



premium cement