২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

চাঁদপুর মুক্ত দিবস আজ

-

আজ ৮ ডিসেম্বর চাঁদপুর মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় এই দিনে মুক্তিবাহিনী ও মিত্র বাহিনীর সম্মিলিত আক্রমণের মুখ পাকিস্তানি সেনারা চাঁদপুর থেকে পালাতে বাধ্য হয়।

১৯৭১ সালের ৭ এপ্রিল পাক হানাদার বাহিনীর সদস্যরা সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত দু’টি বিমানে চাঁদপুর শহরের উপর দিয়ে পর পর প্রায় ২ঘন্টাব্যাপী শেলিং করে আতংকের সৃষ্ট করে। এ সময় দু’জন পথচারী মারা যায় এবং ৩৭জন নারী-পুরুষ ও শিশু আহত হয়।

পরদিন ৮ এপ্রিল বিকেলে ৫ শ’ সেনার একটি বিরাট গাড়ির বহর কুমিল্লা সেনানিবাস থেকে চাঁদপুর এসে পৌঁছে। চাঁদপুর শহর থেকে ৪ কিলোমিটার দূরে টেকনিক্যাল হাইস্কুল ভবনে তারা ঘাঁটি গড়ে। কর্মকর্তারা ওঠে নিকটস্থ ওয়াপদা রেস্ট হাউজে। ওইদিন স্কুল মাঠ থেকে গরু-ছাগল নিয়ে বাড়ি ফেরার সময় এক বৃদ্ধাকে পাক সেনারা গুলি করে হত্যা করে এবং রাতের খাবার জোগাড় করার জন্য তার গরু ছাগলগুলো রেখে দেয়।

৯ এপ্রিল সকালে শহরে টহল দিতে এসে স্থানীয় চক্ষু হাসপাতালের সামনে এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা করে। ১০ এপ্রিল কারফিউ ভঙ্গ করার অপরাধে দু’জন যুবককে সাইকেলে চলন্ত অবস্থায় শহরের চিত্রলেখা সিনেমা হলের সামনে গুলি করে হত্যা করে।

৭ ডিসেম্বর ভোর থেকেই মুক্তিবাহিনী ও মিত্র বাহিনী হাজীগঞ্জ, মোদাফ্রগঞ্জ ,বলাখাল, ফরিদগঞ্জ, বাবুরহাট ইত্যাদি স্থান দিয়ে পাকসেনাদের ওপর চতুর্মুখী আক্রমণ চালায়। মিত্র বাহিনীর এই সম্মিলিত আক্রমণের মুখে পাক সেনারা দিশেহারা হয়ে পড়ে এবং গভীর রাতে মেঘনা নদী দিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে চাঁদপুর ত্যাগ করে। ৮ ডিসেম্বর ট্যাংকসহ মিত্র বাহিনী চাঁদপুর প্রবেশ করে। তারা ট্যাঙ্কের গোলা ও বিমান থেকে গুলি করে পলায়রত ৬ শতাধিক পাক সেনার হামলা চালায়। পানিতে ডুবে মৃত্যু হয় তাদের প্রায় সবার। ফলে চাঁদপুর হয় মুক্ত।

এই শহীদদের স্মরণে চাঁদপুরে নাম সম্মিলিত ‘স্মৃতি ফলক’, পানির উপর ভাসমান ‘অঙ্গীকার’, চাঁদপুর শহরের ৪ রাস্তার মোড়ে স্মৃতি স্তম্ভ ‘শপথ’, চাঁদপুর প্রথম ৪ শহীদদের স্মরণে ‘মুক্তিসৌধ’, বড় স্টেশন বদ্ধভূমিতে ‘রক্তধারা’ স্মৃতি ভাস্কর্য নির্মাণ করা হয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement