১৯ মার্চ ২০২৪, ০৫ চৈত্র ১৪২৯, ০৮ রমজান ১৪৪৫
`

গৃহশিক্ষক বিয়েতে বাধা দেয়ায় ছাত্রীর আত্মহত্যা

বিয়েতে বাধা দিলো গৃহশিক্ষক, ছাত্রীর আত্মহত্যা - ছবি : নয়া দিগন্ত

এসএসসি পরীক্ষার্থী ছাত্রীকে দেখতে আসা বিয়ের বর পক্ষকে ছাত্রীর গৃহশিক্ষকের বাধায় দুই পরিবারের কলহের জের ধরে শারমিন (১৫) নামে এক ছাত্রী গলায় ফাসঁ দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। নিহত ওই ছাত্রী উপজেলার করিমগঞ্জ গ্রামের রাজমিস্ত্রী জামাল উদ্দিন এর মেয়ে এবং বালুয়াকান্দি উচ্চ বিদ্যালয়ের এবারের সদ্য ফরম ফিলাপ করা এসএসসি পরীক্ষার্থী।

ঘটনাটি ঘটেছে, বুধবার দুপুরে উপজেলার করিমগঞ্জ গ্রামে নিহতের বাড়ীর বাথরুমে। হাসনাবাদ পুলিশ ফাড়ির ইনচার্য এসআই মিনহাজুল ইসলাম লাশ উদ্ধার করে নরসিংদী সদর হাসপাতারে ময়না তদন্তের জন্য প্রেরণ করেন।

নিহতের বাব-মা ও পরিবার সূত্রে জানাগেছে, যেখান থেকেই বিয়ের সম্বোধন আসে সেখানেই অনার্স পড়ুয়া প্রতিবেশী গৃহশিক্ষক মনির হোসেন (২৫) ছাত্রীর সাথে তার অবৈধ প্রেমের সম্পর্কের কথা বলে বিয়ে ভেঙ্গে দেয়। সোমবার শারমিনকে একই উপজেলার সাউথপাড়া থেকে পাত্র পক্ষ দেখতে আসে। মেয়ে দেখে পাত্র পক্ষ বিয়ের দিন তারিখের প্রস্তাব করেন। এ খবর পেয়ে ওই গৃহশিক্ষক মনির রাস্তার মোড়ে দাড়িয়ে বিয়ে ভেঙ্গে দিতে অপেক্ষা করেন এবং বর পক্ষকে মোবাইলে আপত্তিকর তথ্য প্রদান করেন। বর পক্ষের কলেজ পড়ুয়া এক ছাত্র বিয়ে ভেঙ্গে দেয়া ওই শিক্ষকের ছবি মোবাইলে তোলে নিয়ে পাত্রী পক্ষকে দেখায়।

এ নিয়ে উভয় পরিবারে চলে পাল্টাপাল্টি তর্কবির্তক। এক পর্যায়ে উল্লেখিত একই গ্রামের প্রতিবেশি মরহুম জয়নাল আবেদীনের ছেলে মনির হোসেন ছাত্রীর পিতা জামাল উদ্দিনকে এ ঘটনা নিয়ে বাড়াবাড়ি করলে মোবাইল ফোনে মেরে ফেলার হুমকি প্রদান করে। ওই শিক্ষকের মা লাইলী বেগম ঘটনার দিন সকালে ছাত্রীর বাড়ীতে এসে ছাত্রী পরিবারকে দেখে নেয়ার হুমকিতে শাসিয়ে যায়।

তারপর থেকে পরিবারের অজ্ঞাতসারে নিহত শারমিন ঘরের ভিতরের বাথরুমে গোসলের অযুহাতে ঢুকে পড়ে। নিহতের পিতা দুপুরে বাড়ীতে এসে শারমিনের খোঁজ নিলে বাথরুম দরজা বন্ধ থাকায় ভেঙ্গে ভেতরে ঢুকে মেয়ের উড়না গলায় ঝরনার লোহায় ঝুলন্ত লাশ দেখতে পায়।

পরে পুলিশকে খরব দিলে স্থানীয় পুলিশ ফাড়ির ইনচার্জ এসআই মিনহাজ লাশ উদ্ধার করে। প্রায় ৫/৬ মাস পূর্বে শারমিনকে প্রাইভেট পড়াতো, এখন আর পারিবারিক অসম্মতিতে প্রাইভেট পড়ছেনা বলে জানা গেছে।

এ ঘটনায় স্থানীয় ইউপি সদস্য মোঃ মোস্তফা ভূইয়া বলেন, মোবাইল ফোনে ছাত্রীর বাবাকে মেরে ফেলার হুমকির বিষয়টি সকালে আমাকে জানায় মেয়ের বাবা। পরে বিয়ে ভেঙ্গে দেয়ার অভিযোগ পেয়েছি। এরই মধ্যে দুপুরে ছাত্রীর আত্মহত্যার খবর আমাকে বিস্মিত করেছে।

নিহতের পিতা জামাল উদ্দিন এ ঘটনায় বাদী হয়ে রায়পুরা থানায় মামলা দায়ের করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

 


আরো সংবাদ



premium cement