১৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৪ বৈশাখ ১৪৩১, ০৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ধানক্ষেতে পাওয়া গেলো নবজাতক

- ছবি: নয়া দিগন্ত

তাড়াইলে ধান ক্ষেতে পাওয়া গেছে নবজাতক। খুব ভোরে কান্না শুনতে পেয়ে ধান ক্ষেতে কাদা-পানিতে নবজাতককে পড়ে থাকতে দেখেন গ্রামের এক মহিলা। পরে তাকে আঁচলে মুড়িয়ে পরম মমতায় বাড়িতে নিয়ে যান।

মঙ্গলবার তাড়াইল উপজেলার পুরুরা গ্রামের উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন একটি ধান ক্ষেত থেকে নবজাতককে পাওয়া যায়।

ধারণা করা হচ্ছে, জন্মেও পর পরই তাকে কোনো মা এখানে ফেলে রেখে যান।

স্থানীয় সুত্র জানায়, মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) ভোর ৫টার দিকে গ্রামের সুফিয়া খাতুন নামের এক মহিলা বাড়ির পাশে নবজাতকের কান্না শুনতে পান। আঁচ করতে পারেন বাড়ির পাশে দূরের ধান ক্ষেত থেকে কান্নার শব্দটি আসছে। এগিয়ে যান তিনি। সামনে উচ্চ বিদ্যালয়। উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন একটি ধান ক্ষেতে নেমে দেখেন নবজাতক শিশুটি কাদা-পানিতে পড়ে আছে। হাত-পা নাড়াচ্ছে। কাঁদছে।

ধান ক্ষেতে পড়ে থাকতে দেখে সুফিয়া খাতুনের চোখ ছল ছল করে ওঠলো।  পরম মমতায় তিনি শিশুটিকে কোলে তুলে নেন। বাড়িতে নিয়ে গিয়ে শিশুটির সেবা-শুশ্রুষা করেন।

ধান ক্ষেতে নবজাতক পাওয়ার খবরে এলাকার শত শত মানুষ সুফিয়ার বাড়িতে ভিড় করতে থাকেন। বাড়িতে নেয়ার পর থেকেই ফুটফুটে মায়াবী শিশুটি স্নেহ কাড়ছে সবার। ঠাঁই পাচ্ছে এক কোল থেকে আরেক  কোলে। অনেকেই আবদার জানান শিশুটিকে দত্তক নিতে।

তাড়াইল থানার পুলিশ খবর পেয়ে শিশুটিকে তাদের নিজের জিম্মায় নিয়ে আসেন। পরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসকদের তত্বাবধানে রাখেন।

 এ ব্যাপারে তাড়াইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: মুজিবুর রহমান ’নয়াদিগন্তকে’ বলেন, সুফিয়া খাতুনের পরিবারের কাছ থেকে শিশুটির বিষয়ে খবর পেয়ে তাঁরা শিশুটিকে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে রেখেছেন। চিকিৎসকের বরাত দিয়ে ওসি জানান, উদ্ধারের সময় শিশুটির বয়স একদিন বা দেড়দিন হবে। তিনি বলেন, শিশুটির বিষয়ে সমাজসেবা কার্যালয়কে অবহিত করা হয়েছে। বুধবার সমাজ সেবা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে শিশুটির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

এ বিষয়ে জেলা সমাজ সেবা কার্যালয়ের উপপরিচালক কামরুজ্জামান খান বলেন, কুড়িয়ে পাওয়া শিশুটির বিষয়ে আমি জেনেছি। শিশু আইন-২০১৩ অনুযায়ী স্থানীয় শিশু কল্যান বোর্ডের মাধ্যমে সাময়িককভাবে শিশুটিকে কাউকে পরিচর্যার জন্য দেওয়া হবে। বুধবার এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে শিশুটিকে স্থায়ীভাবে কাউকে হস্তান্তর বা ছোটমণি নিবাসে পাঠানোর জন্য আদালতের সিদ্ধান্ত চাওয়া হবে। আদালতের সিদ্ধান্তের মাধ্যমে শিশুটির বিষয়ে চূড়ান্ত ফয়সালা হবে।


আরো সংবাদ



premium cement

সকল