১৯ মার্চ ২০২৪, ০৫ চৈত্র ১৪২৯, ০৮ রমজান ১৪৪৫
`

দুই বানরের অত্যাচারে ‘অতিষ্ঠ’ ব্যবসায়ীরা

- নয়া দিগন্ত

ফলের দোকানের ফল ছিনিয়ে নেয়া, ফল ফেলে দিয়ে নষ্ট করা, রুটির দোকানের রুটি ছিনিয়ে নেয়া ও বাজারের বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের দোকানের মালামাল ফেলে নষ্ট করা এবং বাধা দিতে গেলে হামলা করা- একেই বলে বানরের বাঁদরামি।

দুই বানরের অত্যাচারে প্রায় এক বছর ধরে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে নরসিংদীর পলাশ উপজেলার ঘোড়াশাল বাজারের ব্যবসায়ী ও স্থানীয় বাসিন্দারা। সুযোগ পেলেই ফলের দোকানের ফল, বিভিন্ন হোটেলের সব খাবার সাবার করাসহ বাজারের বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালামাল নষ্ট করছে । বাধা পেলে দাঁত খিঁচিয়ে তেড়ে আসছে বা ঝাঁপিয়ে পরছে গায়ের ওপর। চালাচ্ছে ব্যবসায়ীদের ওপর হামলা। বানরের হামলায় ইতোমধ্যে বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ী আহত হয়েছে বলেও জানা গেছে।

 ঘোড়াশাল বাজার এলাকা থেকে বাংলাদেশ জুটমিল পর্যন্ত প্রায় কয়েক’শ দোকান ও বসতঘর রয়েছে। প্রায় সব দোকান ও বসতঘরে হানা দিচ্ছে এই বানরেরা। সাধারণত এই ধরণের বানর জনবহুল এলাকায় দেখা যায় না। কিন্তু জনবহুল ঘোড়াশাল বাজার এলাকায় এই বানর দু’টি দাপিয়ে বেড়াচ্ছে।

শনিবার বিকেলে সরেজমিনে ঘোড়াশাল বাজার এলাকায় গিয়ে দেখা মিলে বানর দুইটির। এই প্রতিবেদক কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে নিজেই দেখতে পায় বানরের অত্যাচার। একটি চায়ের দোকানের টিনের চালে কিছুক্ষণ বসে থেকে মুহুর্তেই   চায়ের দোকানের রুটির ব্যাগে থাবা মেরে রুটি নিয়ে যায়। সেই সাথে কিছু রুটি মাটিতেও ফেলে নষ্ট করে দেয়। স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এক সময় বাংলাদেশ জুটমিলের পাট মাদারীপুর জেলার চরমুগুরিয়া উপজেলা থেকে ট্রাকে করে আনা হতো। ওই সময়ই একটি ট্রাকে করে বানর দু’টি বাংলাদেশ জুটমিলে আসে। এরপর থেকে বানর দু’টি ওই জুটমিলেই বসবাস করে। বানর দু’টি এলাকায় আগে এমন না করলেও বর্তমানে প্রায় এক বছর ধরে ক্ষুধার জ্বালায় বিভিন্ন দোকানে ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অত্যাচার করছে।

তাছাড়া গত বুধবার ঘোড়াশাল বাজারের হোটেল ব্যবসায়ী মো. কাশেম মিয়ার হোটেলে এই বানর দু’টি থাবা মেরে অনেক খাবার নষ্ট করে। পরে হোটেল দোকানী কাশেম মিয়া বানর দু’টিকে বাধা দিতে গেলে তারা কাশেম মিয়ার ওপর হামলা করে  রক্তাক্ত জখম করে।

পরে স্থানীয়রা দৌড়ে আসলে বানর দুটি চলে যায়। পরে গুরুত্বর আহত অবস্থায় কাশেম মিয়াকে ঘোড়াশাল রওশন জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে কাশেম মিয়া দুই দিন থেকে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে যায়। বানরের এমন অত্যাচারের বিষয়ে বাংলাদেশ জুটমিলের নিরাপত্তাকর্মী দুলাল মিয়া জানান, প্রায় চার বছর ধরে এই বানর দুটি বাংলাদেশ জুটমিলেই বসবাস করছে। আগে এতো অত্যাচার না করলেও এক বছর ধরে খুব অত্যাচার করছে বানর দুটি। ঘোড়াশাল বাজার এলাকার ফল ব্যবসায়ী মুন্না মিয়া জানান, কিছু দিন আগে বানর দুটি আমার দোকানের সব ফল ফেলে নষ্ট করে দেয়। এই বানর দুটির অত্যাচারে এ বাজারের ব্যবসায়ীসহ স্থানীয় বাসিন্দারা অতিষ্ঠ। আমরা বানরের বিষয়ে অনেকবার উপজেলা প্রাণীসম্পদ অফিসে অভিযোগ দিলেও কোনো লাভ হয়নি।

 এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ডা. জামাল উদ্দিনের মুঠোফোনে একাধিক বার কল দিলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।


আরো সংবাদ



premium cement