২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`

সড়কে জমা পানি আর বাসা-বাড়ির ময়লায় দুর্ভোগে সাভার পৌরবাসী

সাভার পৌর এলাকার ডগরমোড়া সংযোগ সড়কের সাভার উদয়ন একাডেমির পাশের সড়কের চিত্র। ছবিটি শুক্রবার সকালে তোলা - নয়া দিগন্ত

সারাদেশে ডেঙ্গুর প্রকোপ চলছে। প্রতিদিন ঘটছে মানুষের প্রাণহানি। আর এই সময়েই সাভার পৌরসভা কর্তৃপক্ষের ড্রেন পরিষ্কার না করা, বাসা বাড়ির জমা ময়লা পরিষ্কার না করার কারণে পৌরসভায় বসবাসরত মানুষ চরম দুর্ভোগে জীবনযাপন করছেন। ড্রেন পরিষ্কার না করার ফলে পৌর এলাকায় বসবাসরত মানুষের চলাচলেও প্রতিনিয়ত প্রতিবন্ধকতা তৈরী হচ্ছে।

এদিকে রাস্তায় জমে থাকা পানি আর বাসা-বাড়ির ময়লা থেকে জীবাণুবাহী মশা ও কীটপতঙ্গ সাভার পৌর এলাকার ডগরমোড়া, ব্যাংক কলোনীসহ বিভিন্ন স্কুল-কলেজ, বাসাবাড়ি ও অফিসসহ বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে ঢুকে পড়ছে। এতে মানুষের শরীরে সহজেই রোগব্যাধি দেখা দিতে পারে বলে মনে করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। দ্রুত ড্রেন পরিষ্কার ও বাসা-বাড়ির ময়লা সরিয়ে নেয়ার জন্য পৌরসভাকে অবহিত করলেও পৌরসভার পাঠানো লোকদেরকে অতিরিক্ত টাকা প্রদান করতে হয় বলে অভিযোগ তাদের। আবার অনেক সময় কাজের কাজ কিছুই হয় না।

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, সাভার পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের সাভার নিউ মার্কেট থেকে চাপাইন সড়কটি দীর্ঘদিন ধরে বেহাল দশা। সড়কটি মানুষসহ যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী। প্রায় সময় যানবাহন উল্টে ঘটা দুর্ঘটনায় মানুষ আহত হচ্ছে। আর ডগরমোড়ার ভিতরের সংযোগ সড়কটি ঈদের আগে কাজ শুরু করলেও সাভার উদয়ন একাডেমি এলাকায় সড়কটির ড্রেন পরিষ্কার না করার কারণে সেখানে পানি জমে রয়েছে। যার কারণে মানুষ চলাচল করতে পারছেন না। আর জমে থাকা এই পানিতে মশার উপদ্রপ লক্ষ করার মতো। এ এলাকাটি রয়েছে ডেঙ্গু ঝুঁকিতে।

এদিকে সংযোগ সড়কে পানি জমে থাকার কারণে মানুষের চলাচল করতেও অসুবিধা হচ্ছে। ইতোমধ্যে স্কুলে ছাত্র-ছাত্রীর উপস্থিতি কমে গেছে। সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে শুক্রবার পর্যন্ত ৭৩জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়েছেন। বর্তমানে সেখানে চিকিৎসাধীন আছেন ৬ জন। অনেকে চিকিৎসা শেষে বাড়ী ফিরেছেন। আবার অনেক গুরুতর ডেঙ্গু রোগীকে বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। সাভার পৌরকর্তৃপক্ষের এ জমা পানি সরানোর কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় এবং মশার ওষুধ না ছিটানোর ফলে স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

এদিকে প্রশাসন ও বিভিন্ন সংগঠন সাভার বাসস্ট্যান্ডসহ মহাসড়কে ডেঙ্গু গণসচেতনামূলক র‌্যালি ও প্রচারপত্র বিলি করলেও পাড়া-মহল্লা ও বাসা-বাড়ীর আনাচে কানাচে জমে থাকা ময়লা ও পানি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করতে দেখা যায়নি কাউকে।

অপরদিকে কোরবানির ঈদের পর থেকে সাভার পৌরসভার বাসাবাড়ির জমা ময়লা সরিয়ে না নেয়ার ফলে বসবাসরত মানুষ মশা-মাছির উপদ্রপে ঘুমাতেও পারছেন না। পৌরবাসী রয়েছেন উভয় সংকটে। না পারছেন বাসায় ঘুমাতে, না পারছেন সড়কে চলাচল করতে।

সাভার পৌরসভার বাসা-বাড়ির ময়লা সরানোর ব্যাপারে দায়িত্বরত সুপারভাইজার আদম আলী জানান, ঈদে পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা বাড়ী যাওয়ার ফলে বাড়ি বাড়ি থেকে ময়লা সরিয়ে নিতে দেরী হচ্ছে। আমরা দ্রুত বাসা-বাড়িতে জমে থাকা ময়লা সরিয়ে নেব।

সাভার পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আব্বাস উদ্দিন জানান, ডগরমোড়া সংযোগ সড়কে কাজ করার কারণে পানি সরতে সমস্যা হচ্ছে। শুক্রবার ডগরমোড়ায় মশার ওষুধ দেয়ার জন্য লোক যাবে বলে জানান তিনি।

সাভার উদয়ন একাডেমির প্রধান শিক্ষক মোঃ হারুন জানান, স্কুলের সামনে ডগরমোড়া সড়কটিতে দীর্ঘদিন থেকে পানি জমে থাকার কারণে স্কুলে ছাত্র-ছাত্রীর উপস্থিতি কমে গেছে।

সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক ডা. সামছুন্নাহার জানান, আমাদের হাসপাতালে শুক্রবার পর্যন্ত বিভিন্ন সময় ৭৩জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছে। তাদের মধ্যে শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় গুরুতর রোগীদের ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। আর কিছু রোগী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। আগের তুলনায় ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী এখন কম ভর্তি হচ্ছে বলেও দাবি করেন তিনি।


আরো সংবাদ



premium cement