২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ডেঙ্গুতে এখন পর্যন্ত মারা গেছে কিশোরগঞ্জের ৬ জন

ডেঙ্গুতে এখন পর্যন্ত মারা গেছে কিশোরগঞ্জের ৬ জন - নয়া দিগন্ত

ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন মনোয়ারা বেগম (৪৫) নামের মিঠামইনের এক গৃহবধূ। শনিবার দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। নিহত গৃহবধূ মনোয়ারা বেগম মিঠামইন উপজেলার চমকপুর গ্রামের সাইফুল ইসলামের স্ত্রী।

নিহত গৃহবধূর স্বামী সাইফুল ইসলাম জানান, তার স্ত্রী মনোয়ারা খাতুন ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হলে ঈদের পরদিন মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতির দিকে বলে সেদিনই তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়। শনিবার দুপুরে মনোয়ারা শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

এদিকে ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপ শুরু হওয়ার পর থেকে এতে আক্রান্ত হয়ে শনিবার দুপুর পর্যন্ত কিশোরগঞ্জের মোট ছয়জনের মৃত্যুর খবর জানা গেছে। তাদের মধ্যে তিনজন নারী এবং তিনজন পুরুষ। ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর এই তালিকায় দুই গৃহবধূ ছাড়াও কওমী মাদরাসার ছাত্রী, সিআইডিতে কর্মরত একজন এবং দুই কলেজ ছাত্র রয়েছেন।

তাদের মধ্যে গত ১৩ জুলাই ভোর চারটার দিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান সাকিনা (১৮) নামে এক কওমী মাদরাসার ছাত্রী। সাকিনা জেলার করিমগঞ্জ উপজেলার গুনধর ইউনিয়নের মোকামবাড়ি গ্রামের মোঃ রইসউদ্দিনের মেয়ে। সাকিনা খয়রত গ্রামের একটি কওমী মাদরাসায় পড়তো। গ্রামের বাড়িতে বেশ কয়েকদিন ধরে জ্বরে আক্রান্ত থাকার পর জেলা শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে তাকে চিকিৎসার জন্য নেয়া হয়। সেখানে পরীক্ষায় ডেঙ্গুর বিষয়টি ধরা পড়লে তাকে প্রথমে কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি ঘটলে ১২ আগস্ট সোমবার ঈদের দিন তাকে ময়মনসিং মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় সেখানে ১৩ আগস্ট ভোর চারটার দিকে মারা যান সাকিনা।

পরিবারের লোকজন নিশ্চিত করেন, সাকিনা বাড়িতেই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিল। সে কোনো দিন ঢাকায় যায়নি। তার বাড়ির লোকজনও কেউ ঢাকা থেকে আসেনি বা যায়নি।

এর আগে গত ২১ জুলাই সকালে ঢাকার একটি হাসপাতালে আল আমিন (১৭) নামে এক কলেজ ছাত্রের মৃত্যু হয়। আল আমিন হোসেনপুর পৌরসভার ৩ নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ আড়াইবাড়িয়া এলাকার আব্দুস সাত্তারের ছেলে।

নিহত আল আমিন ঢাকার তেজগাঁও পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে ভর্তির জন্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। রাজধানীর বেগুনবাড়ি এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করার সময় তিনি ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হন। পরে তাকে বড় মগবাজার এলাকার একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। নয় দিন চিকিৎসার পর গত ২১ জুলাই সকালে তার মৃত্যু হয়।

ঈদের আগের দিন (১১ আগস্ট) বেলা ১১টা ৫০ মিনিটের দিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ১৫ নং ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন কলেজ ছাত্র ফরহাদ হোসেন (২০)। নিহত ফরহাদ আহমেদ ইটনা উপজেলার বড়িবাড়ি ইউনিয়নের শিমুলবাঁক হাটির পল্লী চিকিৎসক ফেরদৌস মিয়ার ছেলে। তিনি কিশোরগঞ্জ শহরের গুরুদয়াল সরকারি কলেজের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।

কিশোরগঞ্জ শহরের বাসায় অবস্থান করার সময় ফরহাদ ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হন। তাকে কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। সেখানে তিন দিন চিকিৎসা নেয়ার পর তার অবস্থার অবনতি হলে গত ১০ আগস্ট তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। ওইদিন বিকেলে তাকে সেখানে ভর্তি করার পর পরদিনই (১১ আগস্ট) মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন তিনি।

ঈদের দিন (১২ আগস্ট) ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে রাজধানীর এ্যাপোলো হাসপাতালে মারা যান সিআইডিতে কর্মরত জামাল আহমেদ। সোমবার (১২ আগস্ট) সন্ধ্যায় হাসপাতালটিতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। নিহত জামাল আহমেদ কিশোরগঞ্জ শহরের বত্রিশ মনিপুরঘাট এলাকার মোঃ আব্দুল মান্নানের ছেলে। তিনি সিআইডি’র সাইবার ক্রাইম ইউনিটে কর্মরত ছিলেন।

গত ৮ই আগস্ট বিকেলে মালিবাগের সিআইডি অফিসে দায়িত্ব পালনের সময় হঠাৎ মাথা ঘুরে পড়ে যান জামাল আহমেদ। সাথে সাথে তাকে রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে জামাল আহমেদ বাসায় ফিরলেও প্রচণ্ড মাথা ব্যথা অনুভব করায় পরদিন ৯ই আগস্ট উত্তরার বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন। এরপর থেকে ক্রমশ শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে তার।

পরে সংকটাপন্ন অবস্থায় রোববার (১১ আগস্ট) ভোর রাতে এ্যাপোলো হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। সেখানে চিকিৎসকদের সব প্রচেষ্টাকে ব্যর্থ করে দিয়ে ঈদের দিন সোমবার (১২ আগস্ট) সন্ধ্যা ৬টা ২৫ মিনিটে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন জামাল।

এর একদিন পর বুধবার (১৪ আগস্ট) ভোর রাতে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান নাসরিন আক্তার (২০) নামে কটিয়াদীর এক গৃহবধূ। গৃহবধূ নাসরিন আক্তার কটিয়াদী উপজেলার বনগ্রাম ইউনিয়নের দাসের গাঁও গ্রামের আবুল কাশেমের স্ত্রী।

এক সন্তানের জননী নাসরিন স্বামীর সঙ্গে ঢাকায় থাকতেন। সেখানেই তিনি ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হন। ডেঙ্গু জ্বর নিয়ে তিনি বাড়িতে স্বজনদের সাথে ঈদ করতে যান। ঈদের পর দিন মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) রাতে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে রাতেই ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ৩টার দিকে নাসরিন মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।


আরো সংবাদ



premium cement
গফরগাঁওয়ে গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার তীব্র মাত্রায় হিংস্র হয়ে উঠেছে সরকার : মির্জা ফখরুল মিরসরাইয়ে মৃত্যুর ১৫ দিন পর ব্যাংক কর্মকর্তার কবর থেকে লাশ উত্তোলন দেশে দেড় হাজার মেগাওয়াট লোডশেডিং, দুর্ভোগে মানুষ রংপুরে মহানবী সা:-কে নিয়ে কটূক্তি করায় ছাত্রলীগ কর্মী গ্রেফতার বাড়ছে না শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছুটি, অনলাইনে ক্লাস চালুর চিন্তা বিশ্বের অন্যতম স্মার্ট হজ ব্যবস্থাপনা হবে বাংলাদেশে : ধর্মমন্ত্রী সিলেটে ৪৪ লাখ টাকার ভারতীয় চিনিসহ গ্রেফতার ৪ অবৈধ সম্পদ : এস কে সিনহার বিরুদ্ধে প্রতিবেদন ২৬ জুন টি-টোয়েন্টি র‌্যাংকিংয়ে চাপম্যান-আফ্রিদির উন্নতি থানচিতে ট্রাকে দুর্বৃত্তদের গুলি

সকল