২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

পাগলি ১১ সন্তানের মা হলেও বাবা হলেন না কেউ

ধর্ষণ
১১ সন্তানের জন্ম দিয়েছেন পাগলি - ছবি : নয়া দিগন্ত

নরসিংদীর মনোহরদীতে মানসিক ভারসাম্যহীন চল্লিশোর্ধ এক নারী ধর্ষণের শিকার হয়ে এগারোটি সন্তান প্রসব করেছে। বর্তমানে তিনি আবারো অন্তঃসত্ত্বা। কিন্তু এ পর্যন্ত তার প্রসবকৃত কোনো সন্তানেরই বাবার পরিচয় পাওয়া যায়নি।

এর আগে একইভাবে ধর্ষণের শিকার হয়ে ওই নারী ১০ জন পুত্র এবং একটি কন্যা সন্তানের মা হয়েছেন। ইতিপূর্বে তার প্রসবকৃত সন্তানগুলোর ১০টি পুত্র আর একটি কন্যা। তার প্রত্যেক সন্তানই আশপাশের বিভিন্ন গ্রামের নিঃসন্তান দম্পতিরা লালন পালন করছে।

মানসিক ভারসাম্যহীন নারীটি বার বার মা হতে যাওয়া নিয়ে এলাকায় আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে। সকলেরই মনে প্রশ্ন এতোগুলো সন্তানের বাবা কে বা কারা? কাদের লালসার শিকার মানসিক ভারসাম্যহীন এই নারী? এমন নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে সচেতন মহলে।

ঘৃণ্য এ ঘটনা ঘটেছে মনোহরদী উপজেলার বড়চাপা ইউনিয়নের পূর্ব বড়চাপা গ্রামে।

এলাকাবাসী জানায়, প্রায় ১৫ বছর আগে মানসিক প্রতিবন্ধী ওই নারীর একই ইউনিয়নের বীর মাইজদিয়া গ্রামে বিয়ে হয়। বিয়ের সময় মানসিকভাবে কিছুটা ভারসাম্যহীন থাকলেও কয়েকমাস পর পুরোপুরি মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন। এরপর থেকে ওই নারীটি বাড়ি থেকে বের হয়ে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরতে থাকেন। রাত্রী যাপন করতে থাকে বড়চাপা বাজার থেকে পোড়াদিয়া বাজার পর্যন্ত বিভিন্ন রাস্তায় রাস্তায়। ক্ষিদে পেলে বাজারের হোটেল থেকে চেয়ে খেয়েই দিন কাটছে তার।

২০০৪ সালে মানসিক ভারসাম্যহীন ওই নারীর শারীরিক গঠনের পরিবর্তন লক্ষ্য করেন বাজারের লোকজন। ওই বছরই পোড়াদিয়া বাজারের রাস্তার পাশে ফুটফুটে একটি কন্যা সন্তান প্রসব করেন। ঘটনাটি দেখতে পেয়ে আশপাশের মহিলারা এসে সদ্য ভূমিষ্ঠ নারী শিশু এবং মাকে তুলে পাশের বাড়িতে নিয়ে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করেন। দু-একদিন পর কিছুটা সুস্থ হয়ে ওই বাড়ি থেকে বেড়িয়ে যান নারীটি। প্রতিবেশী এক দম্পতি নিয়ে যায় ওই কন্যা শিশুটিকে।

একইভাবে অজানা ব্যক্তির ধর্ষণের শিকার হয়ে আবারো অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন তিনি। এবার রাস্তার পাশে ফুটফুটে একটি পুত্রসন্তান জন্ম দেন তিনি। এই পুত্র সন্তানটিও নিঃসন্তান দম্পতির ঘরে আশ্রয় পায়। এভাবে ওই নারীটি অজানা পুরুষের হাতে ধর্ষিত হয়ে ১১ বার সন্তান প্রসব করেছেন। যাদের মধ্যে ১০ জন পুত্র এবং একজন কন্যা।

বড়চাপা বাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, প্রায় ১৫ বছর ধরে মানসিক ভারসাম্যহীন এই নারীটি বাজারে চলাফেরা করে। যারা বারবার তার সাথে লজ্জাজনক কাজ করে যাচ্ছে তাদের চিহ্নিত করে আইননানুগ ব্যবস্থার দাবি জানাই।

বড়চাপা ইউপি চেয়ারম্যান উপাধ্যক্ষ এম সুলতান উদ্দিন বলেন, মানসিক ভারসাম্যহীন নারীর এভাবে বার বার ধর্ষণের শিকার হয়ে অন্তঃসত্ত্বা হওয়া অত্যন্ত দুঃখজনক ও লজ্জাজনক ঘটনা। ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে নরপশুদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়ার দাবি জানাই।

মনোহরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাফিয়া আক্তার শিমু বলেন, মানসিক ভারসাম্যহীন ওই নারীর বিষয়ে আমার জানা নেই। তবে ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। বিস্তারিত জেনে ওই নারীর পুনর্বাসনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে এবং অপরাধীদের চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।


আরো সংবাদ



premium cement