২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

ডুবছে মিনি কক্সবাজার মৈনট ঘাটসহ দোহার-নবাবগঞ্জের নিম্মাঞ্চল

পানিতে ভেঁসে যাওয়ার আতঙ্কে টং দোকানগুলো ঘোড়ার গাড়িতে করে সরিয়ে নিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। ছবিটি মঙ্গলবার বিকেলে দোহার উপজেলা মৈনট ঘাট থেকে তোলা - নয়া দিগন্ত

ভারি বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে পদ্মা নদীতে অস্বাভাবিকভাবে বাড়ছে পানি। আর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় তলিয়ে যাচ্ছে মিনি কক্সবাজার খ্যাত মৈনট ঘাট। ফলে ধিরে ধিরে প্লাবিত হচ্ছে দোহার ও নবাবগঞ্জের চরাঞ্চলসহ নিম্মাঞ্চল। আতঙ্কতি হয়ে পড়েছেন মিনি কক্সবাজার খ্যাত মৈনট ঘাটকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ব্যবসায়ীরা।

মঙ্গলবার বিকেলে সরেজমিনে দোহার উপজেলার পদ্মা নদীর তীর ঘুরে দেখা যায়, মৈনট ঘাটে গড়ে উঠা মিনি কক্সবাজার ধিরে ধিরে পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে। মৈনট ঘাটে বেড়াতে আসা পর্যটকরা জানান, সকালে পানি ছিল না বিকেলে তারা পানিতে আটকা পড়েছেন। পানির প্রতিবন্ধকতায় অনেকেই বিনোদন এলাকায় যেতে পারছেন না। মৈনট ঘাটকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠা খাবার হোটেলগুলো পানিতে ডুবে যাচ্ছে। এ সময় নদী ভাঙ্গন ও পানিতে ডুবে ভেঁসে যাওয়ার আতঙ্কে অনেক ব্যবসায়ীদের তাদের টং দোকানগুলো ঘোড়ার গাড়িতে করে সরিয়ে নিতে দেখা যায়।

স্থানীয়দের সাথে আলাপ করে জানা যায়, গত কয়েক দিন ধরে হঠাৎ করেই পদ্মা নদীতে বাড়তে শুরু করেছে পানি। এভাবে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে যেকোন সময় নদীর বুকে তলিয়ে যেতে পারে মৈনট ঘাটে কয়েকশ দোকানসহ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের তথ্য অনুযায়ী, মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত পদ্মার পানি ভাগ্যকুল পয়েন্টে বিপদসীমার ৫.৯০ মিটার ও মাওয়া পয়েন্টে ৫.৭০ মিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এভাবে পানি বাড়তে থাকলে পানি বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে। তবে এখনও তেমন কোন বড় ধরনের ক্ষতির আশঙ্কা নেই বলে দাবি করেছেন পানি উন্নয়ন বোর্ড ঢাকা উপ-বিভাগীয় নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ মইনুদ্দিন। তারপরও আমরা সতর্ক রয়েছি সম্ভাব্য বন্যা মোকাবিলায় আমরা প্রস্তুুত রয়েছি।

মৈনট ঘাটের ব্যবসায়ী সামাদ মেম্বার ও মোজাহারুল হক বলেন, মৈনট ঘাটে ব্যবসা করে পরিবার পরিজন নিয়ে ভাল ছিলাম। পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বেকার হয়ে যাওয়ায় পরিবার পরিজন নিয়ে খুব কষ্টে দিনাতিপাত করতে হবে।

মৈনট ঘাটের ইজারাদার কাশেম মেম্বার জানান, মৈনট ঘাটের বিনোদন ও বেড়ানোর জায়গাগুলো পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় সৌন্দর্য পিপাসু মানুষেরা প্রধান সড়কে আশ্রয় নিয়ে সৌন্দর্য অবলোকন করছে। ঘাটের কার্যক্রম পরিচালনা ও নিরাপদ করার জন্য নদী থেকে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো দূরে অপসারণ করা দরকার।

নারিশা ইউপি চেয়ারম্যান সালাহউদ্দিন দরানী জানান, দীর্ঘদিন ধরে দোহার উপজেলার বেশীর ভাগ অংশ পদ্মার ভাঙ্গণে বিলিন হয়ে গেছে। আবার নতুন করে পদ্মায় পানি বৃদ্ধির ফলে ভাঙ্গনের মুখে পড়ে মৈনট ঘাট বিলিনের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণে পানি উন্নয়ন বোর্ডের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন তিনি।

দোহার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আফরোজা আক্তার রিবার বলেন, পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে ঠিকই কিন্তু এখনও তেমন বড় ধরনের হুমকির কারণ হয়ে উঠেনি। চরাঞ্চলের বসতবাড়ি ও গ্রামগুলো এখনও নিরাপদ রয়েছে। তিনি আরো বলেন, পানি বৃদ্ধির ফলে কোথাও তেমন হুমকি দেখা দিলে তাৎক্ষনিকভাবে তা প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 


আরো সংবাদ



premium cement