১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

হোসেনপুরে চয়ন হত্যা মামলায় তিনজনের মৃত্যুদণ্ড, সাতজনের যাবজ্জীবন

নিহত চয়ন। পাশের ছবিতে মৃতদণ্ডপ্রাপ্ত এক আসামীকে আদালত থেকে জেলে নেয়া হচ্ছে - ছবি : সংগৃহীত

কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরের চাঞ্চল্যকর এরশাদুল ইসলাম চয়ন হত্যা মামলায় তিনজনের মৃত্যুদণ্ড এবং সাতজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে সাজাপ্রাপ্ত প্রত্যেক আসামিকে পাঁচ লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।

বুধবার সকালে কিশোরগঞ্জের প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ আব্দুর রহিম এ রায় দেন। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এপিপি যজ্ঞেশ্বর রায় চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। 

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন-আব্দুল আউয়াল (৪৪), আল-আমিন (৪০) ও সুফল মিয়া (৩৬)। এদের মধ্যে আল-আমিন ছাড়া বাকি দু’জন পলাতক রয়েছে। যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- আবদুল করিম (৫৪), সাফিয়া আক্তার (৪৭), আব্দুল কাদির ফকির (৫৯), সোহেল মিয়া (৩৮), রিপা আক্তার (৪৪), জহুরা খাতুন ওরফে অনুফা (৫৪) ও আব্দুর রউফ ফকির ওরফে রূপ মিয়া (৫৪)। যাবজ্জীবন প্রাপ্ত এই আসামীদের মধ্যে একমাত্র সোহেল মিয়া পলাতক রয়েছেন।
মৃত্যুদ- এবং কারাদ-ে দ-িত ১০ আসামিই হোসেনপুর উপজেলার সিদলা ইউনিয়নের টান-সিদলা গ্রামের বাসিন্দা।

মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০০৫ সালের ২ ডিসেম্বর পারিবারিক বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষের হামলার নিহত হন এরশাদুল ইসলাম চয়ন। তিনি হোসেনপুর উপজেলার টানসিদলা গ্রামের জহিরুল ইসলাম রতনের একমাত্র ছেলে ছিলেন।

এরশাদুল ইসলাম চয়ন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ব্যবস্থাপনায় অনার্সসহ মাস্টার্স পাস করে রেলওয়েতে স্টেশন মাস্টার হিসেবে নিয়োগ পান। দুদিন পরই চাকরিতে যোগদান করার কথা ছিল চয়নের। ঘটনার দিন দুপুরে আসামিরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে চয়নদের বাড়িতে অতর্কিত হামলা চালায়। তার মা ও বোনকে পিটিয়ে আহত করে। এ সময় তাদের রক্ষা করতে গেলে চয়নকে কুপিয়ে ও ছুরিকাঘাত করে গুরুতর আহত করা হয়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে হোসেনপুর উপজেলা হাসপাতালে নেয়া হলে ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন।

এ ঘটনায় নিহতের বাবা বাদী হয়ে ঘটনার দিন ৯ জনকে আসামি করে হোসেনপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। পুলিশ দীর্ঘ তদন্ত শেষে ২০০৬ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি ১১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। মামলা চলাকালে আমিনুল হক ওরফে হিরা নামে এক আসামি মারা যাওয়ায় তাকে অভিযোগ থেকে খালাস দেয়া হয়।

মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছিলেন এপিপি যজ্ঞেশ্বর রায় চৌধুরী। আসামি পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন অ্যাডভোকেট অশোক সরকার।

দীর্ঘ সাড়ে ১৪ বছর অপেক্ষার পর বুধবার চাঞ্চল্যকর এই মামলার রায় ঘোষণা করা হলো। মামলার রায়ে নিহতের বাবা জহিরুল ইসলাম রতন এবং মা মোমেনা খাতুন সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।


আরো সংবাদ



premium cement