২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

অসহ্য যন্ত্রণার পর অবশেষে মৃত্যুর কোলে ধর্ষিতা শিশু আছিয়া

- ছবি : নয়া দিগন্ত

অবশেষে মৃত্যু হলো ধর্ষিতা শিশু আছিয়ার (৮)। ধর্ষণের এক বছর পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার ভোররাতে শিশুটি ঢাকায় তার এক আত্মীয়ের বাসায় মারা যায়। আছিয়া টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার নারান্দিয়া ইউনিয়নের মালতী গ্রামের দিনমজুর আশরাফ আলীর মেয়ে।

সোমবার দুপুরে আছিয়ার লাশ ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়িতে আনা হলে সেখানে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। এ ঘটনায় ধর্ষকের ফাঁসির দাবি করেছে শিশুটির পরিবার ও এলাকাবাসী।

গত বছর ৯ জুন শিশুটিকে ধর্ষণ করে একই গ্রামের তায়েজ উদ্দিনের বখাটে ছেলে মাহবুব (১৫)। এ বিষয়ে আদালতে মামলা বিচারাধীন রয়েছে। আসামী বর্তমানে জামিনে রয়েছে এবং গ্রেফতারের পর সে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছে।

জানা যায়, ২০১৮ সালে ৯ জুন ধর্ষক মাহবুব ফুসলিয়ে আছিয়াকে ডেকে তাদের বাড়িতে নিয়ে একটি ঘরে আটকে ধর্ষণ করে। এতে আছিয়া অসুস্থ হয়ে পড়লে প্রথমে এলেঙ্গার একটি বেসরকারি হাসপাতালে এবং পরে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর অবস্থার অবনতি হলে শিশুটিকে ঢাকায় রেফার করা হয়।

ঘটনার দিনই আছিয়ার বাবা আশরাফ আলী বাদী হয়ে মাহবুবকে আসামী করে মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ তদন্ত শেষে ২০১৮ সালের ৩০ আগস্ট আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে।

শিশু আছিয়ার নানা হযরত আলী বলেন, ঢাকায় এক আত্মীয়ের বাসায় থেকে আছিয়া চিকিৎসা নিচ্ছিল। সোমবার ভোররাতে আছিয়া হঠাৎ ব্যাথ্যায় ছটফট করতে থাকে। হাসপাতালে নেয়ার আগেই মারা যায় সে।

টাঙ্গাইল জেনারেল হাসাপাতলের শিশু ও মহিলা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে অনস্টোপ ক্রাইসিস সেলের অফিসার (পিও) বায়েজিদ বলেন, সে সময় ধর্ষণের ফলে শিশুটির ব্যাপক রক্তক্ষরণ হয়। মলদ্বার ও যৌনাঙ্গ ছিড়ে গিয়ে এক হয়ে যায়। এতে আটটি সেলাই করার পরও তার শারীরীক অবস্থার অবনতি হলে টাঙ্গাইলের তৎকালীন এডিসি জেনারেল নেসার উদ্দিন জুয়েলের আর্থিক সহায়তায় শিশুটিকে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় ঢাকায় থেকে চিকিৎসা নিচ্ছিল শিশুটি। এ ধরনের আক্রান্তদের মৃত্যু ঝুঁকি অনেক বেশি বলে জানান তিনি।

কালিহাতী থানার ওসি মীর মোশারফ হোসেন নয়া দিগন্তকে বলেন, ধর্ষণের ঘটনাটি একবছর আগের। এ ঘটনায় অভিযুক্ত ধর্ষক মাহবুবকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয় এবং আদালতে সে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। তদন্ত শেষে আদালতে অভিযোগপত্র দেয়া হয়েছে। বর্তমানে মামলাটি বিচারাধীন রয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement