২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`

সাহায্য চাওয়ার নামে মোবাইল চুরি, এরপর...

আটককৃত বৃদ্ধ রেজাউল করিম - নয়া দিগন্ত

অভিনব কৌশলে মোবাইল চুরির চেষ্টাকালে আটক হয়েছেন এক বৃদ্ধ। পরে মোবাইল চুরির দায়ে তাকে দুই মাসের কারাদণ্ড দিয়ে জেল হাজতে প্রেরণ করেছে ভ্রাম্যমান আদালত। আটককৃত বৃদ্ধের নাম রেজাউল করিম (৭০)। তার বাড়ি নওগাঁ জেলার নজিরপুর উপজেলার মধুপুর গ্রামে। মঙ্গলবার ঘটনাটি ঘটেছে রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলায়।

জানা যায়, মঙ্গলবার দুপুরে গোয়ালন্দ উপজেলার লোটাস কলেজিয়েট স্কুলের অফিস কক্ষে গিয়ে ওই বৃদ্ধ সাহায্য কামনা করেন। তাকে বসতে দেয়া হলে তিনি এক শিক্ষিকার কাছে পানি পান করতে চান। এ সময় ওই শিক্ষিকা পানি আনতে বাইরে গেলে তিনি শিক্ষিকার টেবিলে থাকা মোবাইল নিয়ে বাইরে চলে যান। এরপর শিক্ষকরা তাকে সাহায্যের কথা বলে রাস্তা থেকে ডেকে স্কুলের ভিতরে নিয়ে গেলে তার কাছ থেকে ওই মোবাইল উদ্ধার হয়। পরে স্কুলের শিক্ষকরা থানা পুলিশকে খবর দেন।

গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি মোঃ এজাজ শফী ওই বৃদ্ধকে আটক করে ভ্রাম্যমান আদালতে হাজির করেন। ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও গোয়ালন্দ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আব্দুল্লাহ আল মামুন তকে ২ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়ে রাজবাড়ী জেলা কারগারে পাঠিয়ে দেন।

বৃদ্ধ রেজাউল করিম তার দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে গোয়ালন্দ উপজেলার পার্শ্ববর্তী রাজবাড়ী সদর উপজেলার ভবদিয়া গ্রামে বসবাস করেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে গোয়ালন্দ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার অভিনব কৌশলে অফিস আদালত, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন বাসাবাড়ি থেকে দামী মোবাইল চুরি করে আসছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু তাকে দেখে বোঝার উপায় নেই যে, তিনি একজন মোবাইল চোর হতে পারেন।

সরজমিনে ভ্রাম্যমান আদালত থেকে ওই বৃদ্ধের নিকট থেকে একটি চোরাই মোবাইল উদ্ধার করা হয়। এ সময় ইতোপূর্বে হারিয়ে যাওয়া মোবাইলের জিডির আলোকে গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের ওএস কানিজ মওলাকে ডেকে আনা হয়। তিনি ওই বৃদ্ধের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া মোবাইলে সংরক্ষিত ফাইল ছবিতে থাকা ছবি দেখে মোবাইলটি রাজবাড়ি জেলা হিসাবরক্ষক অডিট অফিসার সালামা করিমের বলে সনাক্ত করেন।

এ দিকে ওই অভিযুক্ত বৃদ্ধকে সনাক্ত করে স্থানীয়রা জনান, সে বিভিন্ন স্থান থেকে মোবাইল চুরির ঘটনা ঘটিয়েছে। কিন্তু তার বয়স ও অসহায় ভাব দেখে তাকে চোর বলে সন্দেহ করা হয়নি।

এদিকে অভিযুক্ত বৃদ্ধ রেজাউল করিম নিজের পায়ে আঘাতের চিহ্ন দেখিয়ে বলেন, আমার চিকিৎসার টাকা যোগাড় করার জন্য এই অপরাধটি করেছিলাম। নিজেকে বিএসসি পাশ দাবি করে তিনি বলেন, তিনি ঢাকার ওয়েষ্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক ছিলেন। অবসর নেয়ার পর দুর্ঘটনায় আহত হয়ে সর্বশান্ত হয়েছেন।


আরো সংবাদ



premium cement