২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

বড় ভাইয়ের হাতে ছোট ভাইয়ের করুণ মৃত্যু

প্রতীকী ছবি - সংগৃহীত

বড় ভাইয়ের ছোড়া টেটায় বিদ্ধ হয়ে ছোট ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার দুপুর ২টায় মুন্সীগঞ্জ জেলার শ্রীনগর উপজেলার দেউলভোগ গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত ছোট ভাইয়ের নাম আরাফাত। আর তার বড় ভাইয়ের নাম অরিয়ান। তারা দেউলভোগ গ্রামের আপতু মোড়লের সন্তান।

এলাকাবাসী জানায়, শ্রীনগর পাইলট স্কুল এন্ড কলেজের ৮ম শ্রেনীর ছাত্র আরিয়ান (১৩) মাছ শিকার করার জন্য সোমবার দুপুরে টেটা নিয়ে বাড়ির পাশের পুকুরপাড়ে অবস্থান করছিল। এমন সময় তার ছোট ভাই দেওলভোগ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্র আরাফাত (৮) পুকুরের অপর প্রান্ত থেকে ডুব দিয়ে কচুরিপানার নিচে এসে কচুরিপানা নাড়া দেয়।

এ সময় বড় ভাই আরিয়ান মাছ ভেবে টেটা ছুড়ে মারলে সেটা তার ছোট ভাই আরাফাতের বুকে বিদ্ধ হয়। এ সময় আশপাশের লোকজন এসে তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আরাফাতকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার মিডফোর্ড হাসপাতালে প্রেরণ করেন।

পরে সোমবার সন্ধ্যায় ঢাকা মিডফোর্ড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরাফাতের মৃত্যু হয়। আরিয়ান ও আরাফাত উপজেলার দেউলভোগ গ্রামের আপতু মোড়লের সন্তান। অনাকাঙ্খিত এই দুর্ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

শ্রীনগর থানার ওসি মোঃ ইউনুচ আলী ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, নিহত শিশু আরাফাতের লাশ মিডফোর্ড হাসপাতালে আছে। পরিবারের লোকজন আসলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আরো পড়ুন : চট্টগ্রামে ছোট ভাইয়ের হাতে প্রকৌশলী খুন

চট্টগ্রাম ব্যুরো, (১২ অক্টোবর ২০১৫)

লেখাপড়ার জন্য বকাঝকা করায় বড় ভাইকে কুপিয়ে ও ছুরিকাঘাতে হত্যা করেছে আপন ছোট ভাই। নগরীর কোতোয়ালি থানার নূর আহমদ সড়কের রাবেয়া রহমান গলিতে গতকাল সকাল ৯টায় এ ঘটনা ঘটে। নিহতের নাম সোহেল চৌধুরী (৩৬)। তিনি ডিপ্লোমা প্রকৌশলী এবং একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করতেন বলে জানা গেছে। হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত রায়হান চৌধুরী রানা (২০) নিহত সোহেলের ছোট ভাই এবং কাজেম আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। পরিবারের দাবি, রায়হান চৌধুরী মানসিকভাবে অসুস্থ ছিল।

কোতোয়ালি থানার এসআই শাহ আলম জানান, কলেজ কামাই করায় গত শনিবার রাতে ছোট ভাই রায়হান চৌধুরী রানাকে বকাঝকা করেন বড় ভাই সোহেল। রানা নগরীর কাজেম আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের একাদশ শ্রেণীর ছাত্র। গতকাল সকালে বড় ভাই তাকে কলেজে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হতে বলেন। কিন্তু রানা বড় ভাইয়ের সাথে কলেজে যেতে রাজি হয়নি।

একপর্যায়ে বড় ভাই তাকে ডাকতে তার রুমে গেলে রানা বড় ভাইকে ছুরিকাঘাত করে। ছুরিকাঘাতের ফলে সোহেলের মাথার মগজ বের হয়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। ঘটনার পরপরই রানা পালিয়ে যায়।

কোতোয়ালি থানার ওসি জসিম উদ্দিন নয়া দিগন্তকে জানান, ঘটনাস্থল থেকে দু’টি ছোরা, একটি ট্যাব ও কিছু খাতা উদ্ধার করা হয়েছে। ছোট ভাই রানার কইে ক্ষত-বিক্ষত লাশটি পড়ে ছিল। সেখান থেকে উদ্ধার করে পরে তা ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়।

স্থানীয়রা জানান, নিহত সোহেল চৌধুরীর বাবা বোয়ালখালী উপজেলার করলডেঙ্গা ইউনিয়নের সিরাজ-দৌল্লা চৌধুরী। বাবা-মা ও আরো দুই ভাইয়ের সাথে স্ত্রী ও কন্যা নিয়ে রাবেয়া রহমান লেনের নিজস্ব (৮৮৮/এ) পাঁচতলা ভবনের চারতলার ফ্যাটে থাকতেন সোহেল চৌধুরী।

নিহত সোহেলের মা রওশন আরা জানান, তাদের চার ছেলের মধ্যে বড় ছিল সোহেল। মেজ ছেলে কয়েক বছর আগে অসুস্থ হয়ে মারা যান। তৃতীয় ছেলে আমেরিকায় পড়াশোনা করেন। সোহেল সিভিল বিভাগ থেকে পাস করা ডিপ্লোমা প্রকৌশলী। তিনি একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করতেন। ছয় বছর আগে সোহেল সাথী আক্তারকে বিয়ে করে। তাদের তিন বছরের একটি মেয়ে আছে।

নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (দণি) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান পরিবারের সদস্যদের বরাত দিয়ে জানান, রায়হান সবসময় একা একা থাকত। নিজের কে দরজা বন্ধ করে বসে থাকত। তার আচরণ ছিল অদ্ভুত। তিনটা কথা জিজ্ঞেস করলে একটার উত্তর দিত। গত শনিবার রাতে বড় ভাই সোহেল তাকে এ ধরনের আচরণ এবং পড়ালেখার জন্য বকাঝকা করেন। এ জন্য রায়হান ভাইয়ের ওপর ক্ষুব্ধ ছিল।


আরো সংবাদ



premium cement