শিশু সন্তানকে রেখে না ফেরার দেশে বৃষ্টি, স্বামী-শ্বশুর আটক
- নারায়ণগঞ্জ সংবাদদাতা
- ১২ এপ্রিল ২০১৯, ২১:৩৯
মাত্র এক বছর বয়সের শুভদ্বীপকে রেখে পরকালে চলে গেলো তার মা নারায়ণগঞ্জ শহরের টানবাজার সাহপাড়ার গৃহবধূ বৃষ্টি চৌধুরী। শুক্রবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ শহরের টানবাজার সাহাপাড়ার গিয়াস উদ্দিনের বাড়ির ৭ম তলা থেকে অচেতন অবস্থায় বৃষ্টি চৌধুরীকে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হলে জরুরী বিভাগের চিকিৎসক নূরুজ্জামান তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এরপর পুলিশ হাসপাতাল থেকে লাশ উদ্ধার করে।
এদিকে গৃহবধূ বৃষ্টির লাশ উদ্ধারের পর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তার স্বামী ও শ্বশুরকে আটক করেছে পুলিশ। এছাড়া বৃষ্টির লাশ উদ্ধারের খবর পেয়ে পালিয়ে যায় তার ননদ ডেইজী সাহা।
নিহত গৃহবধূ বৃষ্টির স্বামী আটককৃত সুদীপ রায় দাবি করেছেন, তার স্ত্রী (বৃষ্টি চৌধুরী) পারিবারিক দ্বন্দ্বের জের ধরে আত্মহত্যা করেছে। প্রায় প্রতিদিনই তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব লেগেই থাকতো। শুক্রবার গৃহবধূ বৃষ্টির দরজা বন্ধ পেয়ে অনেক ডাকাডাকি করার পরও কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে দরজা ভেঙ্গে বৃষ্টির ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসেন তারা।
তবে নিহত বৃষ্টি চৌধুরীর ভাই মিঠুন চৌধুরী অভিযোগ করেন, স্বামী সুদীপ, শ্বশুর সুভাষ ও ননদ ডেইজীসহ পরিবারের লোকজন বৃষ্টিকে হত্যা করেছে। কারণ বিয়ের সময় ১৫ লাখ টাকা যৌতুক নেয়ার পর তার শ্বশুরবাড়ি থেকে আরো যৌতুক দাবি করা হচ্ছিল। তাছাড়া শ্বশুর সুভাষ, তার ছেলে সুদীপ ও তার বোন ডেইজী সুদের ব্যবসায়ী।
তিনি আরো জানান, এক বছর আগে বৃষ্টির সন্তান শুভদ্বীপ জন্মের মাত্র ৮ দিনের মধ্যে বৃষ্টিকে মারধর করে বাবার বাড়ি কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর থানার ছালিয়া কান্দি পাঠিয়ে দেয় তারা। এমন দ্বন্দ্বের কারণে বিয়ের মাত্র দুই বছরের মধ্যে বহুবার সালিশও হয়েছে। গত কয়েকদিন যাবৎ যৌতুকের কারণে বৃষ্টিকে মারধর করা হচ্ছে বলে বৃষ্টির বাবা জানতে পারেন। বৃষ্টির বাবা শ্যামল চৌধুরী কুমিল্লার একজন ব্যবসায়ী।
এরপর বিষয়টি কয়েকবার শ্যামল চৌধুরীর বোন জামাই সূতা ব্যবসায়ী প্রবীর সাহাকে জানায়। কিন্তু শুক্রবার বৃষ্টি চৌধুরীর এমন মৃত্যুর খবর পেয়ে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ছুটে আসেন নিহত এই গৃহবধূর অনেক আত্মীয় স্বজন।
লাশ উদ্ধারের পর সদর থানার এসআই আলাউদ্দিন আল আজাদ নিহতের লাশের সুরতহাল বিপোর্ট তৈরী করে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ মর্গে পাঠান।
হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. নূরুজ্জামান জানান, নিহত বৃষ্টি চৌধুরীর শরীরে আঘাতের চিহ্নসহ গলায় দাগ পাওয়া গেছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা যায় তার মৃত্যু স্বাভাবিক না। এ ঘটনায় বৃষ্টির স্বামী ব্যাংক কর্মকর্তা সুদীপ রায় এবং শ্বশুর সুভাষ চন্দ্র রায়কে জিজ্ঞাবাদের জন্য নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় ডেকে আনা হয়েছে। তবে বৃষ্টির মৃত্যুর খবর পেয়ে পালিয়ে যায় তার ননদ ডেইজী সাহা।
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসি কামরুল ইসলাম বলেন, বৃষ্টি নামের এক গৃহবধূ মারা গেছে। এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহতের স্বামী ও শ্বশুরকে থানায় আনা হয়েছে । ঠিক এখনই বলা যাবে না আসলে এটি কি হত্যা নাকি আত্মহত্যা। পিএম (পোষ্টমর্টেম) রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত গৃহবধূর মৃত্যুর সঠিক কারণ বলা কঠিন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা