২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

স্ত্রীর পরকীয়ায় বাঁধা দেয়ায় স্বামীকে গলাকেটে হত্যা

প্রতীকী ছবি ও পাশে নিহত আমিনুল ইসলাম কালু - নয়া দিগন্ত

শনিবার সকালে সোনারগাঁওয়ের ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে কাফুরদী এলাকা থেকে একটি অজ্ঞাত লাশ উদ্ধার করে সোনারগাঁও থানা পুলিশ। প্রথমে অজ্ঞাত হিসেবে উদ্ধার করা হলেও শনিবার রাতে নিহতের লাশ সনাক্ত করেন হত্যাকান্ডের শিকার যুবকের ভাই সামসুল হক। নিহত যুবকের নাম আমিনুল ইসলাম কালু(২৫)। নিহতের স্ত্রীর নাম রিক্তা বেগম। স্ত্রীর পরকীয়ায় বাঁধা দেয়ায় স্ত্রী রিক্তা ও তার প্রেমিক পরিকল্পিতভাবে স্বামী কালুকে গলাকেটে হত্যা করে।

জানা যায়, শনিবার সকালে নিহত কালুর গলাকাটা লাশ উদ্ধারের পর রাতে নিহতের ভাই সামসুল হক কালুর লাশ সনাক্ত করেন। নিহতের পরিচয় উদ্ধারের পর শনিবার রাতেই স্ত্রী রিক্তা বেগম ও তার প্রেমিক রেজাউল করিম ওরফে পলাশকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরপরই নিহতের স্ত্রীর পরকীয়া ও এর জের ধরে স্বামী কালুকে হত্যার ব্যাপারে নিশ্চিত হয় পুলিশ। নিহত আমিনুল ইসলাম কালু নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থানার এনায়েতনগর এলাকার আজমত মিয়া ওরফে নাটাই মিয়ার ছেলে।

নিহতের স্ত্রী রিক্তা ও তার প্রেমিক রেজাউল করিম ওরফে পলাশকে গ্রেফতারের পর রোববার বিকেলে ৫ দিনের রিমান্ড চেয়ে নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফাহমিদা আক্তারের আদালতে প্রেরণ করা হয়। আদালত এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এছাড়া আরো ৪ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

সূত্র জানায়, নিহত আমিনুল ইসলাম কালুর স্ত্রী রিক্তা বেগম তার বাড়িতে ব্যাচালরদের মেসে রান্না করে খাবার সরবরাহ করতো। এতে করে বিভিন্ন ছেলের সাথে রিক্তার সম্পর্ক গড়ে উঠে। শেরপুর সদর উপজেলার কৃষ্ণপুর গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে রেজাউল করিম পলাশের সাথে রিক্তার পরকীয়া ও দৈহিক সম্পর্ক গড়ে উঠে। বিষয়টি রিক্তার স্বামী হাতেনাতে ধরে ফেলে। এসব নিয়ে আমিনুল ইসলাম কালুর সাথে তাদের দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়।

এরই জের ধরে গত শুক্রবার রাতে রেজাউল করিম পলাশ ও তার সহযোগিরা কালুকে অপহরণ করে সোনারগাঁওয়ের কাইকারটেক কাফুরদী এলাকায় ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে নিয়ে গলাকেটে হত্যা করে লাশ ফেলে যায়। পরে শনিবার সকালে এলাকাবাসী লাশ দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়।

এদিকে অজ্ঞাত লাশ উদ্ধারের খবর শুনে নিহত কালুর ভাই সামসুল হক নারায়ণগঞ্জ জেলা হাসপাতালে গিয়ে ভাইয়ের লাশ সনাক্ত করেন এবং সোনারগাঁও থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এরপর রাতেই পুলিশ অভিযান চালিয়ে নিহত কালুর স্ত্রী রিক্তা বেগম ও তার পরকীয়া প্রেমিক রেজাউল করিম পলাশকে গ্রেফতার করে। পরে রোববার বিকেলে নারায়ণগঞ্জ আদালতে রিমান্ড চেয়ে প্রেরণ করা হয়।

সোনারগাঁও থানার পরিদর্শক (অপারেশন) আলমগীর হোসেন জানান, উপজেলার কাফুরদি গ্রামের পাশে ব্রহ্মপুত্র নদের তীর খেকে উদ্ধারকৃত নিহত যুবকের নাম আমিনুল ইসলাম কালু। নিহত কালু তার স্ত্রী রিক্তা বেগমের পরকীয়ার বলি হয়েছে। রিক্তা বেগম ও তার পরকীয়া প্রেমিক রেজাউল করিম ওরফে পলাশকে শনিবার রাতে সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকায় অভিযান চালিয়ে গ্রেফতারের পর হত্যাকান্ডের বিষয়টি পরিষ্কার হয়।

সোনারগাঁও থানার ওসি মোঃ মনিরুজ্জামান জানান, আমিনুল ইসলাম কালু হত্যাকান্ডের ঘটনায় তার স্ত্রী ও পরকীয়া প্রেমিককে গ্রেফতার করে ৫ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়। আদালত তাদের এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। এছাড়া আরো ৪ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement