২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

বিয়ের ৩ দিনের মাথায় একই রশিতে ঝুলে নবদম্পতির আত্মহত্যা

প্রতীকী ছবি - সংগৃহীত

মোহাম্মদ আলী ও রুমানা খাতুন রুমি। একে অপরকে ভালোবেসে বিয়ে করেন গত ২২ ফেব্রুয়ারী শুক্রবার। নতুন সংসার আর চোখে নতুন স্বপ্ন। কিন্তু বাস্তবে আর তা কিছুই হল না। হাতের মেহেদীর রং শুকানোর আগেই একই রশিতে ঝুলে আত্মহত্যা করেছেন এই নবদম্পতি। ঘটনাটি ঘটেছে সাভারের তেঁতুলঝোড়া ইউনিয়নের হেমায়েতপুরের ধরিণধরা এলাকার ফজলুর রহমানের ভাড়াবাড়িতে।

এই বাড়িরই একটি কক্ষ থেকে সোমবার এই নবদম্পতি স্বামী-স্ত্রীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে সাভার মডেল থানার পুলিশ। নিহত মোহাম্মদ আলী (২২) সিরাজগঞ্জ জেলার কাজিপুর থানার চরগিরিস গ্রামের গোলাম মাওলার ছেলে ও তার স্ত্রী রুমানা খাতুন রুমি (১৬) একই থানার সালানচর গ্রামের রফিকুল ইসলামের মেয়ে।

নিহত মোহাম্মদ আলী সিরাজগঞ্জের কাজীপুর থানার ক্যাপ্টেন মনসুর আলী সরকারি কলেজের এইচএসসি ২য় বর্ষের বাণিজ্য বিভাগের ছাত্র এবং স্ত্রী রুমানা খাতুন রুমি সাভারের হেমায়েতপুর হরিণধরা এলাকার স্ট্যান্ডার্ড গ্রুপের গামের্ন্টস কারখানায় পোশাক শ্রমিক হিসেবে কাজ করতো।

থানা পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রেমের সূত্রধরে তারা দুইজন সম্প্রতি সিরাজগঞ্জ থেকে সাভারের হেমায়েতপুরে বাসা ভাড়া করে। গত ২২ ফেব্রুয়ারী শুক্রবার স্থানীয় এক কাজীর মাধ্যমে তারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। এরপর তারা ভাড়া বাসায় নতুন সংসার শুরু করে। এদিকে তাদের বিয়ে মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানায় উভয়ের পরিবার।

এরপরই সোমবার বিকেল ৩টায় সময় সাভারের তেঁতুলঝোড়া ইউনিয়নের হরিণধরা এলাকার ফজলু মিয়ার ভাড়া বাড়ির একটি কক্ষের ভিতরে ঘরের আড়ার সাথে একই রশিতে ঝুলন্ত অবস্থায় এই নবদম্পতির লাশ দেখতে পায় বাড়ির অন্য ভাড়াটিয়ারা। বিষয়টি সাভার মডেল থানা পুলিশকে জানালে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে তাদের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন।

সাভার মডেল থানা ও ট্যানারী ফাঁড়ি ইনচার্জ (পরিদর্শক) গোলাম নবী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, তারা উভয়ে একে অপরকে ভালোবেসে বিয়ে করেন। কিন্তু ছেলের পরিবার তাদের এই বিয়ে মেনে না নিলে তারা আত্মহত্যা করে।

 

আরো পড়ুন : বিষপানে নবদম্পতির আত্মহত্যা
মোহাম্মদ আলী ঝিলন, গাজীপুর, (১৭ আগস্ট ২০১৮)

গাজীপুরের কাপাসিয়ায় বিয়ের ২১ দিন পর এসএসসি পরীক্ষার্থী এক নবদম্পতি বিষপানে আত্মহত্যা করেছে। পুলিশ নিহতদের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য শুক্রবার গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছে।

পুলিশ ও নিহতদের স্বজনরা জানায়, প্রেমের সম্পর্কের জের ধরে গত তিন সপ্তাহ আগে কাপাসিয়া উপজেলার সন্মানিয়া ইউনিয়নের আড়াল গ্রামের হানিফ মিয়ার মেয়ে শাহীনা আক্তার নিপা (১৬) ও কড়িহাতা ইউনিয়নের ইকুরিয়া গ্রামের আফজাল হোসেন ভূঁইয়ার হৃদয় হোসেন (১৭) গোপনে গাজীপুর আদালতে গিয়ে নোটারী পাবলিকের মাধ্যমে হলফ নামা দিয়ে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। তারা উভয়েই আগামী এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিল। সম্প্রতি এ বিয়ের খবর প্রকাশ পেলে দুই পরিবারের অভিভাবকরা নবদম্পতি প্রাপ্ত বয়স্ক না হওয়া পর্যন্ত বিয়ের বিষয়টি গোপন রাখার সিদ্ধান্ত নেয়।


নিহত নিপার পিতা হানিফ মিয়া ও রিনা বেগম বলেন, গত ৫ দিন আগে বাড়ির কাউকে না জানিয়ে জামাতা হৃদয় আমার মেয়ে রিনাকে তাদের বাড়িতে নিয়ে যায়। এ কারনে হৃদয়ের বাড়ির লোকজন আমার মেয়েকে খারাপ ভাষায় গালিগালাজ ও দুর্ব্যবহার করে। এ অপমান সহ্য করতে না পেরে নিপা আমাদের বাড়িতে চলে আসে।
বিয়ের ২১দিনের মাথায় বৃহষ্পতিবার দুপুরে খাবার খাওয়ার পর স্বামী হৃদয়ের সঙ্গে নিপা তার ঘরে কথাবার্তা বলছিল। বিকেল ৫টার দিকে তারা একসঙ্গে বিষ পান করে। পরে এক অপরের গলায় জড়িয়ে ধরে ঘর থেকে বের হয়ে বারান্দায় এসে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। এ সময় গুরুতর অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে পার্শ্ববর্তী মনোহরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাবার পথে নিপা মারা যায়। পরে সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য হৃদয়কে রাজধানীর উত্তরা হাই-কেয়ার হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাতে মারা যায়।

এব্যাপারে নিহত হৃদয়ের বাবা আফজাল হোসেন বলেন, ছেলে-মেয়ে উভয়েই অপ্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ায় আইনগত বাধা থাকার কারনে তাদের প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করার পরামর্শ দেয়া হয়েছিল। আমাদের অজান্তে মেয়ের বাড়িতে গিয়ে আমার ছেলে হৃদয় কি কারনে বিষ পান করেছে, তা আমাদের জানা নেই।

কাপাসিয়া থানার ইন্সপেক্টর (অপারেশন) মনিরুজ্জামান জানান, খবর পেয়ে পুলিশ নিহতদেও লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য শুক্রবার গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement