৩ নারীকে নির্যাতনের মূলহোতা ইউসুফ রিমান্ডে
- নারায়ণগঞ্জ সংবাদদাতা
- ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ২১:০২
তিন নারীকে গাছের সাথে বেধে অমানুষিক নির্যাতনের ঘটনার মূলহোতা স্থানীয় ইউপি মেম্বার ইফসুফকে গ্রেফতার করে ২দিনের রিমান্ডে নিয়ে পুলিশ। সোমবার রাতে গ্রেফতারের পর মঙ্গলবার সকালে তাকে নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ফাহমিদা খাতুনের আদালতে হাজির করা হয়। এসময় অভিযুক্ত ইউসুফের ৫ দিনের পুলিশি রিমান্ডের আবেদন করে পুলিশ। শুনানী শেষে আদালত ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে।
এদিকে ইউসুফ মেম্বারের পক্ষে কোনো আইনজীবী আদালতে দাঁড়াননি। এমনকি আদালতে তাঁর নিজের পরিবারের কোনো সদস্য কিংবা কোনো আত্মীয়-স্বজনও উপস্থিত ছিলেন না। গ্রেফতারের পর পুলিশকে ইউসুফ মেম্বার জানিয়েছে, মূলত ১লাখ ২২ হাজার টাকা লেনদেন নিয়ে তিন নারীকে পতিতা আখ্যা দিয়ে নির্যাতন করেছে তারা।
আদালতে বাদীপক্ষের আইনজীবী হিসেবে মামলা পরিচালনা করেন আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান দিপু।
বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান দিপু বলেন, বর্তমান যুগে আসামীর নেতৃত্বে কিভাবে তিনজন নারীর ওপর অমানুষিক নির্যাতন করা হয়েছে আমরা আদালতে তা উপস্থাপন করেছি। পাঁচ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করলে আদালত দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে। ঘটনার সাথে অন্যান্য জড়িতদের সম্পর্কে জানতেই আদালত রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।
উল্লেখ্য, তিন নারীকে গাছের সাথে বেধে অমানুষিক নির্যাতনের সংবাদ গত রোববার নয়াদিগন্ত অনলাইনে প্রকাশের পর তোলপাড় শুরু হয়। পরদিন সোমবার জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের তিন সদস্য ঘটনা তদন্তে নারায়ণগঞ্জে আসেন এবং ঘটনার সত্যতা খুঁজে পান। পরে বিকেলে ইউসুফ মেম্বারসহ ২৯জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেন নির্যাতিতা ফাতেমা ওরফে ফতেহ। এরপর সোমবার রাত ১০টার দিকে ইউসুফ মেম্বারকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
বন্দর থানার ওসি রফিকুল ইসলাম জানান, মামলায় উল্লেখ করা বর্ণনার সাথে বাস্তবতার মিল পেয়েছি। ইউসুফ মেম্বারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকী আসামীদের গ্রেফতারে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।
এদিকে ঘটনার নেপথ্যের কারণ হিসেবে জানা গেছে, বন্দরের দক্ষিণ কলাবাগান এলাকায় দুই মানসিক প্রতিবন্ধী ছেলেকে নিয়ে বসবাস করতেন খালপারের মৃত মফিজ উদ্দিনের মেয়ে ফাতেমা বেগম ওরফে ফতেহ (৫০)। এক মেয়ে রোকসানাকে বিয়ে দিয়েছেন পাশের গ্রামেই। ফাতেমার কাছ থেকে প্রতিবেশী উম্মে হানীর স্বামী বিদেশ পাঠানোর কথা বলে ১ লাখ ২২ হাজার টাকা ধার নেন। এই ধারের টাকাই উদ্ধার করতে গিয়ে ১৬ ফেব্রুয়ারি নির্যাতনের শিকার হন ফাতেমা এবং তাঁর দুঃসম্পর্কের খালাতো বোন আসমা বেগম (৩৫)। নির্যাতনের শিকার অপর নারী বুরুন্দি এলাকার বকুল মিয়ার স্ত্রী বানু বেগমকে (৩০) চেনেন না ফাতেমা বেগম।
ভুক্তভোগী তিন নারীকে যৌনকর্মী আখ্যা দিয়ে মধ্যযুগীয় কায়দায় তাদের ওপর নির্যাতন চালানো হয়। ওই তিন নারীকে ঘর থেকে বের করে টেনে হিচড়ে গাছের সাথে বেঁধে লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারধর করে ইউসুফ মেম্বারের নেতৃত্বে এলাকার কথিত বিচারকরা। কেবল মারধরই নয় জোর করে ওই নারীদের মাথার চুলও কেটে দেয়া হয়। এরপর ওই অবস্থায় কয়েক ঘন্টা গাছের সাথে বেঁধে রাখা হয় তাদের। খবর পেয়ে পুলিশ তাদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।
নির্যাতিতা ফাতেমা বেগম বলেন, আমার বাড়িঘরে লুটপাট করা হয়েছে। আমার পরিবারের ওপর নির্যাতন করা হয়েছে। আমাদের হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। আমি এসবের ন্যায্য বিচার দাবি করছি।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা