মুক্তিপণের দাবিতে স্কুলছাত্রকে অপহরণ, পরে হত্যা

কুমিল্লায় এক স্কুলছাত্রকে অপহরণের পর হত্যা করা হয়েছে। নিহত ওই স্কুল ছাত্রের নাম তৌহিদ। অপহরণের পর থেকে তারা ওই স্কুলছাত্র তৌহিদের পরিবারের নিকট ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে আসছিল। এরপর সোমবার বিকেলে একটি বালুর মাঠ থেকে ওই স্কুলছাত্রের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

এ ঘটনায় পুলিশ কুমিল্লা শহর থেকে মাজহারুল ও মঞ্জুরুল নামে ২ অপহরণকারীকে আটক করেছে। নিহত তৌহিদ জেলার সদর দক্ষিণ উপজেলার কোটবাড়িসংলগ্ন সালমানপুর গ্রামের আবু মুছার ছেলে এবং কোটবাড়ি কারিগরী প্রশিক্ষণ উচ্চ বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণির ছাত্র ছিল।

জানা যায়, রোববার রাত ১০টা পর্যন্ত স্কুলছাত্র তৌহিদ (১৬) বাড়ি না ফেরায় তার পরিবারের লোকজন বিভিন্ন স্থানে তাকে খোঁজাখুজি শুরু করে। এরই মধ্যে রাত সাড়ে ১০টার দিকে তার পরিবারের নিকট মোবাইল ফোনে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে অপহরণকারীরা। এ বিষয়ে সোমবার সকালে তৌহিদের ভাই জাহিদ সদর দক্ষিণ মডেল থানায় জিডি করেন। পাশাপাশি অপহরণকারীরা একাধিকবার মুক্তিপণের ৫ লাখ টাকা দাবি করে আসছিল।

সদর দক্ষিণ মডেল থানার অধীন কোটবাড়ি পুলিশ ফাঁড়ির এসআই মোঃ আনোয়ার হোসেন জানান, আমি ওই ছাত্রের অভিভাবক পরিচয়ে অপহরণকারীদের সাথে কথা বলি। মুক্তিপণের টাকা মোবাইল বিকাশের মাধ্যমে দিতে চাইলে তারা নিষেধ করে এবং নগদ টাকা নিয়ে তাদের কথামতো ঠিকানায় নিয়ে যাওয়ার জন্য বলে। পরে তাদের দেয়া ঠিকানা অনুযায়ী সোমবার বিকেলে কুমিল্লা শহরের সাত্তার খান কমপ্লেক্স মার্কেটে তৌহিদের পরিবারের লোকজনকে পাঠাই এবং আমরা (পুলিশ) তাদের অনুসরণ করি।

তিনি আরো বলেন, ওখানে যাওয়ার পর তাদের নিকট থেকে টাকা গ্রহণ করতে আসা ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলার বেলী গ্রামের সোলায়মানের ছেলে মঞ্জুরুল ইসলাম মবিন (১৯) নামে এক অপহরণকারীকে আটক করি। পরে তার দেয়া তথ্য অনুযায়ী শহরের ধর্মপুর রেলওয়ে স্টেশন এলাকার আজমীর হোটেলের ম্যানেজার ও জেলার দেবিদ্বার উপজেলার খলিলপুর গ্রামের মৃত আবদুল করিমের ছেলে মাজহারুল (৩৬) নামে অপহরণকারী চক্রের অপর এক সদস্যকে আটক করি।

এসআই মোঃ আনোয়ার হোসেন বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে তারা স্কুলছাত্র তৌহিদকে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণের জন্য অপহরণের কথা স্বীকার করে এবং তৌহিদকে তারা হত্যা করে মাটি চাপা দিয়ে রেখেছে বলে জানায়। পরে তাদের দেখানো মতে কোটবাড়ি এলাকার গন্ধমতি গ্রামের একটি বালুর মাঠের একপাশে মাটি খুঁড়ে ওই ছাত্রের লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

মঙ্গলবার কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে নিহতের লাশের ময়নাতদন্ত করা হবে বলেও জানান তিনি।

নিহত তৌহিদ জেলার সদর দক্ষিণ উপজেলার কোটবাড়িসংলগ্ন সালমানপুর গ্রামের আবু মুছার ছেলে এবং কোটবাড়ি কারিগরী প্রশিক্ষণ উচ্চ বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণির ছাত্র ছিল।