২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী হয়ে কোটিপতি বনে যাওয়া ম্যাজিক মিজান

মিজানুর রহমান, (ইনসেটে) তার নির্মাণাধীন বাড়ি - ছবি : নয়া দিগন্ত

মিজানুর রহমান। তিনি তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী। মাদারীপুর শহরে উনার ৪টি বাড়ী রয়েছে। পরিবহন ব্যবসায়ও বড় লগ্নি করেছেন তিনি। নিজের নামে ছাড়াও স্ত্রী ও স্বজনদের নামে বিপুল সম্পদ গড়ে দিয়েছেন। চাকুরীর শুরুতে একেবারে শূন্য থেকে বিশাল বিত্তবৈভবের মালিক হওয়া এই তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী রাজৈর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের অফিস সহকারী হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।

এর আগে তিনি মাদারীপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে অর্পিত সম্পত্তি শাখাসহ বিভিন্ন শাখায় কর্মরত ছিলেন। তৃতীয় শ্রেণির চাকরি করে কোটিপতি বনে যাওয়ার এমন ম্যাজিক দেখিয়ে তিনি এখন মাদারীপুরের সাধারণ মানুষের আলোচনার কেন্দ্র বিন্দু। অদৃশ্য খুঁটির জোরেই তিনি বেপরোয়া। অনেক সময় তোয়াক্কা করেন না সিনিয়র কর্মকর্তাদেরকেও। এ নিয়ে অনেকে ক্ষুব্ধ হলেও ভয়ে মুখ খোলেন না কেউ।

অভিযোগ রয়েছে, মাদারীপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে চাকুরীর সময়ই মিজানের ভাগ্যোন্নয়ন শুরু হয়। এই সময় তিনি সরকারী সম্পত্তি লিজ দেয়ার নামে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে হাতিয়ে নেন বিপুল পরিমান টাকা। এছাড়াও সরকারী সম্পত্তি নিজের এবং আত্মীয় স্বজনদের নামেও লিজ নেন। এভাবেই তিনি মাদারীপুর শহরের গড়ে তুলেছেন ৪টি বাড়ী। যার বাজার মূল্য কয়েক কোটি টাকা।

এছাড়াও ভাইদের রয়েছে শহরের বিভিন্ন ধরনের ব্যবসা। এই সব ব্যবসায় তিনিই অর্থের জোগান দিচ্ছেন এমনটাই দাবী এলাকাবাসীর। গ্রামের বাড়ি শিবচর উপজেলার বাশকান্দি ইউনিয়নের শম্ভুক এলাকায়ও রয়েছে সম্পত্তি।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, মাদারীপুর শহরের পাঠককান্দি এলাকায় তার একটি বাড়ি রয়েছে। এই বাড়িতেই তিনি থাকেন। এছাড়াও ভাড়াটিয়া রয়েছে প্রায় ৫টি। যার বর্তমান বাজারমূল্য প্রায় কয়েক কোটি টাকা। শহরের স্টোডিয়ামের পিছনে বহুতল ভবনের নির্মাণ কাজ করছেন তিনি।

সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, এই বাড়ির নির্মাণ কাজ তিনতলা পর্যন্ত হয়ে গেছে। জমিসহ এর বাজার মূল্য কমপক্ষে ৩ কোটি টাকা। শহরের থানতলী এলাকাতেও রয়েছে তার একটি বাড়ি। এই বাড়িতে একাধিক ঘর রয়েছে। একটি ঘরে তার ছোট ভাই থাকেন। বাকি ঘরগুলো ভাড়া দেয়া রয়েছে।

মাদারীপুর শহরের ইউ আই স্কুল সংলগ্ন এলাকায়ও তার একটি বাড়ি রয়েছে। এই বাড়িটি গড়ে তুলেছেন সরকারী জমির উপর। তিনি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের কর্মরত থাকাকালে আপন ভাইয়ের নামে লিজ নেন। এখানেও রয়েছে ৪-৫টি ভাড়াটিয়া। এই বাড়ির বাজার মূল্যও কোটি টাকার উপরে। এছাড়াও পরিবহন ব্যবসাও রয়েছে তার।

এই সম্পদের আয়ের উৎস সম্পর্কে মিজানুর রহমান বলেন, অনেক আগে কমমূল্যে আমি স্টেডিয়ামের পিছনে জমি কিনেছিলাম। সেই জমি দাম এখন বেড়েছে। ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে বাড়ির নির্মাণ কাজ শুরু করেছি। এছাড়াও থানতলী এলাকার বাড়ির জমিও অল্প টাকায় কিনেছিলাম। এখন জমির দাম বেড়ে গেছে। এগুলো আমার বেতনের টাকায় কেনা। আমরা স্বামী-স্ত্রী দুজনেই চাকুরী করি। এছাড়া পাঠককান্দি এলাকার জমিটি সরকারী সম্পত্তি। আমার এক আত্মীয় ভোগ দখল করতো। পরে তারা ছেড়ে দেয়ার আমার নামে লিজ নিয়েছি। ইউ আই স্কুল সংলগ্ন জমিটি আমার ছোট ভাইয়ের নামে লিজ নেয়া। এছাড়াও ২-৩টি ট্রাক রয়েছে এগুলো আমার ভাইদের সাথে শেয়ারে কেনা। আমার কোন অবৈধ উপার্জন নেই।


আরো সংবাদ



premium cement