১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

অসুস্থ হয়ে পড়ছেন লতিফ সিদ্দিকী

-

টাঙ্গাইল ডিসি অফিসের সামনে আমরণ অনশনরত আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী ধীরে ধীরে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। তিনি কোন ওষুধ গ্রহণ করছেন না। হাসপাতালেও যেতে চাচ্ছেন না। ইতোমধ্যে তার জন্য একটি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। আমরণ অনশনের তৃতীয় দিনেও লতিফ সিদ্দিকী তার দাবির পক্ষে অনড় অবস্থানে রয়েছেন।

আজ মঙ্গলবার লতিফ সিদ্দিকীর ৮১তম জন্মদিন বলে জানান তার সহধর্মিনী লায়লা সিদ্দিকী। এজন্য অনশনরত অবস্থায়ই তাকে পরিবারের লোকজন ও তার নেতাকর্মীরা ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।

মঙ্গলবার সকালে লতিফ সিদ্দিকীর জন্য আট সদস্যবিশিষ্ট একটি মেডিকেল টিম গঠন করেন টাঙ্গাইলের সিভিল সার্জন ডা. মো. শরীফ হোসেন খান। এই মেডিকেল টিমের প্রধান করা হয়েছে টাঙ্গাইলের শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগের সিনিয়র কনসাল্টেন্ট ডা. মোফাজ্জল হোসেনকে। দুপুরে মেডিকেল টিমের সদস্যরা লতিফ সিদ্দিকীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন।

টাঙ্গাইলের সিভিল সার্জন ডা. মো. শরীফ হোসেন খান বলেন, লতিফ সিদ্দিকী সাহেব খাবার না খাওয়ায় ধীরে ধীরে তার শরীরের সুগার কমে যাচ্ছে। এতে শরীর নিস্তেজ হয়ে শারীরিক ঝুঁকি বাড়ছে।

মেডিকেল টিমের প্রধান ডা. মোফাজ্জল হোসেন সাংবাদিকদের জানান, লতিফ সিদ্দিকীর শ্বাসকষ্ট, উচ্চ রক্তচাপ ও হার্টের সমস্যা রয়েছে। তার দুটি হার্টেই রিং পড়ানো আছে। সবমিলিয়ে এখন তার যে অবস্থা, তাকে জরুরীভাবে হসপিটালাইসড করা দরকার। এখন তার যে ধরণের চিকিৎসা দরকার তা হাসপাতাল ছাড়া সম্ভব নয়। তিনি হাসপাতালেও যেতে চাচ্ছেন না, ওষুধও খেতে চাচ্ছেন না। এখানে আমাদের যা করণীয় ছিল তা করে দিয়েছি।

নির্বাচনী প্রচারণার সময় তার গাড়িবহরে হামলার ঘটনায় কালিহাতী থানার ওসি মীর মোশারফ হোসেনের প্রত্যাহারসহ তিনদফা প্রতিকার চেয়ে তিনি রোববার দুপুর থেকে টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক ও জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে অবস্থান ধর্মঘটে বসেন। প্রতিকার না পেয়ে সোমবার সকাল থেকে অবস্থান ধর্মঘটের সাথে আমরণ অনশন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত নেতা সাবেক মন্ত্রী ও টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী।

মঙ্গলবার বিকেলে ডিসি অফিসের সামনের মাঠ থেকে লতিফ সিদ্দিকীকে পাশের একটি টিনের ছাউনির নিচে নিয়ে যাওয়া হয়। তিনি একা হাঁটতে পারছিলেন না। দু’জনের কাঁধে ভর দিয়ে সেখান যান। লতিফ সিদ্দিকীর সহধর্মিনী কালিহাতীর সাবেক এমপি লায়লা সিদ্দিকীসহ অন্য নেতা-কর্মীরা তার সাথে রয়েছেন।

লায়লা সিদ্দিকী বলেন, ধীরে ধীরে তার (লতিফ সিদ্দিকী) শারীরিক অবস্থা খারাপের দিকে যাচ্ছে। তবে তিনি মানসিকভাবে এখনো সুদৃঢ় অবস্থানে রয়েছেন। তিনি বলেন, মানুষ বেঁচে থাকে আত্মসম্মানের জন্য। আর তিনি সেই আত্মসম্মানবোধ থেকেই তার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। এ লড়াই তার একার জন্য নয়। এ লড়াই কালিহাতীর জনগণের।

টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার গোহালিয়াবাড়ি ইউনিয়নের সরাতৈল ও বল্লভবাড়িতে রোববার আব্দুল লতিফ সিদ্দিকীর গাড়িবহরে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এই ঘটনার জন্য তিনি কালিহাতীর এমপি হাছান ইমাম খান সোহেল হাজারী ও তার নেতাকর্মীদের দায়ী করেন।

অন্যদিকে হাছান ইমাম খান সোহেল হাজারী বলেন, আমি একজন এমপি হয়ে এমন কাজ করতে পারি না। তাছাড়া এটা কোন রাজনৈতিক বিষয় নয়। লতিফ সিদ্দিকী মন্ত্রী থাকাকালে ওই এলাকায় স্থানীয় লোকদের কাছ থেকে অনেক জমি কিনেন। শুনেছি তিনি এখনো জমির পুরো টাকা পরিশোধ করেননি। লতিফ সিদ্দিকী সেদিন ওই এলাকায় ভোট চাইতে গেলে পাওনাদারেরা ক্ষিপ্ত হয়ে কয়েকটি ঢিল ছুড়ে। ঘটনা এ পর্যন্তই। পরবর্তীতে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের জন্য লতিফ সিদ্দিকী নিজেই তার লোকজন দিয়ে গাড়ি ভাঙচুরের নাটক সাজান। এ ঘটনার সাথে আমার কোন সম্পর্ক নেই।

মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত লতিফ সিদ্দিকী তার অনশণ কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছিলেন।


আরো সংবাদ



premium cement