২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`
গাজীপুর-৩

পুলিশি হয়রানীর প্রতিকার চেয়ে ঐক্যফ্রন্ট প্রার্থীর আবেদন

পুলিশি হয়রানীর প্রতিকার চেয়ে ঐক্যফ্রন্ট প্রার্থীর আবেদন - নয়া দিগন্ত

গাজীপুর -৩ (আসন নং ১৯৬) সংসদীয় আসনের কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ মনোনীত জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট সমর্থিত ধানের শীষের প্রার্থী ইকবাল সিদ্দিকী সোমবার নির্বাচনী কাজে বাধা প্রদানসহ পুলিশি হয়রানীর প্রতিকার চেয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বরাবার আবেদন করেছেন। জেলা রিটার্নিং অফিসার ও জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রেরিত এ আবেদনে তিনি বলেন, পুলিশি অপতৎপরতার কারণে নির্বাচনী পরিবেশ ধূলিসাৎ হতে চলেছে।

ঐক্যফ্রন্টের নেতাকর্মীদের অবস্থা এখন দেশ থেকে বিতাড়িত ভাগ্য বিড়ম্বিত রোহিঙ্গাদের থেকেও খারাপ উল্লেখ করে তিনি বলেন, রোহিঙ্গারাও রাতে তাদের নিজ পরিবারের সাথে নিজের বিছানায় ঘুমাতে পারে। পুলিশি হয়রানির কারণে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতাকর্মীদের নির্বাচনী মাঠে টিকে থাকাই মুশকিল হয়ে দাঁড়িয়েছে।

লিখিত আবেদনে তিনি উল্লেখ করেন, গত ১৪ই ডিসেম্বর সন্ধ্যায় শ্রীপুর উপজেলার টেংরাবাজারে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নির্বাচনী পথসভা শেষ হওয়ার সাথে সাথে সভাস্থল থেকেই আমার নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও শ্রীপুর উপজেলা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি পীরজাদা এস এম রুহুল আমিনকে কোনো প্রকার গ্রেফতারী পরোয়ানা ছাড়াই আটক করা হয়। আমি থানায় উপস্থিত হয়ে ওসির সাথে কথা বললে তিনি জানান যে, পীরজাদা এস এম রুহুল আমিনকে নির্বাচন সংক্রান্ত বিষয়ে কথাবার্তা বলার জন্য থানায় নিয়ে আসা হয়েছে।

পরের দিন জানতে পারি তাকে কাপাসিয়া থানার এক মিথ্যা নাশকতা মামলায় জেল-হাজতে পাঠানো হয়েছে। অথচ মামলায় বর্ণিত সময়কালে তিনি মসজিদে ইমামতি করছিলেন। গ্রেফতারকালে পুলিশ জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টির উদ্দেশে এক ধরনের ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করে।

সর্বজন শ্রদ্ধেয় সত্তরোর্ধ্ব এই প্রবীণ আলেম পীরজাদা এস এম রুহুল আমিনকে গ্রেফতারের মধ্যদিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সকলস্তরের নেতাকর্মীদের মধ্যে গ্রেফতার আতঙ্ক সৃষ্টির ঘৃণ্য অপচেষ্টা করা হয়েছে বলে জনগণ মনে করে। এছাড়া পুরো নির্বাচনী এলাকায় জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের কর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে পুলিশি খোঁজখবর নেতাকর্মীদের মনে এক ভীতিকর অবস্থার সৃষ্টি করেছে।

গত ১৩ই ডিসেম্বর গভীর রাতে কোনো প্রকার গ্রেফতারী পরোয়ানা প্রদর্শন না করেই আমার নির্বাচন পরিচালনা কমিটির অন্যতম যুগ্ম-আহ্বায়ক, গাজীপুর বিএনপির জেলা কমিটির সহ-সভাপতি হুমায়ুন কবির সরকার এবং আরেকজন যুগ্ম-আহ্বায়ক শ্রীপুর উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আব্দুল মোতালেবকে পুলিশ তাদের নিজ বাড়ি থেকে আটক করে।

থানায় যোগাযোগ করা হলে জানানো হয়, তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য তুলে আনা হয়েছে। পরবর্তীতে পুরনো এক গায়েবী মামলায় তাদেরকেও আসামী দেখিয়ে রিমান্ডের আবেদনসহ আদালতে প্রেরণ করা হয়।

তাছাড়া তফসিল ঘোষণার পর গাজীপুর-৩ আসনের আওতাধীন জয়দেবপুর থানায় বেশ কয়েকটি মাদক মামলা তৈরী করে বেছে বেছে বিএনপির নেতা কর্মীদের আসামী করা হয়েছে। এসব মামলায় এমন অনেককে অভিযুক্ত হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে যারা মাদক তো দূরের কথা জীবনে কোনোদিন ধূমপানের সাথেও জড়িত ছিল না। এ ব্যাপারে ইতোমধ্যে পত্রপত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে এবং মাননীয় হাইকোর্ট পুলিশ সুপার গাজীপুরকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছেন।

সিইসর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, তফসিল ঘোষণাকালে জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া আপনার ভাষণে দেশবাসীর মনে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যাপারে যে আশার সঞ্চার হয়েছিল, পুলিশি অপতৎপরতার কারণে তা ধূলিসাৎ হতে চলেছে। দেশ থেকে বিতাড়িত ভাগ্য বিড়ম্বিত রোহিঙ্গারাও রাতে তাদের নিজ পরিবারের সাথে নিজের বিছানায় ঘুমাতে পারে, অথচ জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতাকর্মীরা পুলিশি হয়রানি এবং পরিকল্পিতভাবে সৃষ্ট গ্রেফতার আতংকে তাদের পরিবারের সাথে নিজের বিছানায় রাতে ঘুমাতে পর্যন্ত পারছে না।

পুলিশের এ ধরনের আচরণের প্রতিকার, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতাকর্মীদের পুলিশের হয়রানী বন্ধ এবং এসব অপতৎপরতায় জড়িতদের বিরুদ্ধে যথাযথ শাস্তিমূলক ব্যবস্থাগ্রহণের জন্য তিনি সিইসির প্রতি অনুরোধ জানান। এছাড়া তার নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক এবং দুইজন যুগ্ম-আহ্বায়ককে অবিলম্বে মুক্তিদানের ব্যবস্থা গ্রহনের আহবান জানান তিনি।


আরো সংবাদ



premium cement