২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

জাকের পার্টির চেয়ারম্যানের হাতে নগদ ১১ কোটি টাকা

জাকের পার্টির চেয়ারম্যান ও আটরশির পীর মোস্তফা আমির ফয়সাল - নয়া দিগন্ত

জাকের পার্টির চেয়ারম্যান ও আটরশির পীর মোস্তফা আমির ফয়সালের হাতে রয়েছে নগদ সাড়ে ১১ কোটি টাকা ও তার স্ত্রীর হাতে নগদ রয়েছে নগদ ৪ কোটি টাকা। তিনি নারায়ণগঞ্জ-৩ (সোনারগাঁ) আসনে মনোনয়নপত্রের সাথে দেয়া হলফনামায় এ তথ্য উল্লেখ করেছেন।

এদিকে গত ১০ বছরে তার হাতে থাকা নগদ অর্থের পরিমাণও বেড়েছে প্রায় ৪ গুণ।

২০০৮ সালে যেখানে জাকের পার্টির চেয়ারম্যান ও আটরশির পীর মোস্তফা আমির ফয়সালের হাতে নগদ অর্থের পরিমাণ ছিল ৪ কোটি ৫ লাখ টাকা ও তার স্ত্রীর হাতে নগদ ছিল ৬০ লাখ টাকা সেখানে ২০১৮ সালে মোস্তফা আমির ফয়সালের হাতে থাকা নগদ অর্থের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১১ কোটি ৫১ লাখ ৬৫ হাজার ৭৫৯ টাকা ও তার স্ত্রীর হাতে নগদ অর্থ রয়েছে ৩ কোটি ৯২ লাখ ৫৮ হাজার ৩৫৬ টাকা।

জানা গেছে, জাকের পার্টির চেয়ারম্যান আটরশির পীর মোস্তফা আমির ফয়সাল ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফরিদপুর-৪ আসন থেকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন। তবে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারী অনুষ্ঠিত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি অংশ নেননি।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে এবার দলটি মহাজোটের শরীক। ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিতব্য একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি ফরিদপুর-৪ আসনের পাশাপাশি নারায়ণগঞ্জ-৩ (সোনারগাঁ) আসনেও মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন।

২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মোস্তফা আমির ফয়সাল তার হলফনামায় তিনি বিএ পাশ বলে উল্লেখ করেছিলেন। পেশায় ব্যবসায়ী ফয়সাল ফরিদপুর গ্রুপ অব কোম্পানীজের এমডি পদে রয়েছেন।

২০০৮ সালে হলফনামায় উল্লেখিত তার সম্পদের বিবরণঃ
তার বিরুদ্ধে ২০০৬-০৭ সালে ঢাকার শ্রম আদালতে মজুরী পরিশোধ আইনের ২০ ধারা মোতাবেক ১৭টি মামলা দায়ের হয়েছিল যেগুলো থেকে তিনি অব্যাহতি পেয়েছিলেন। কৃষিখাতে তার আয় ৭০ হাজার টাকা। তার উপর নির্ভরশীল বাড়ি ও অন্যান্য বাবদ পায় সাড়ে ৪ লাখ টাকা। ব্যবসা থেকে তিনি বছরে আয় করতেন ৬ লাখ ৩০ হাজার টাকা। তার উপর নির্ভরশীল বছরে আয় করতেন ১ লাখ ৪৯ হাজার ৫০০ টাকা। মাছ বিক্রি ও গবাদি পশু বিক্রি বাবদ বছরে তিনি আয় করতেন ৬ লাখ ৮০ হাজার টাকা এবং তার উপর নির্ভরশীল ওই খাতে আয় করতেন ২৫ হাজার ৫০০ টাকা। তৎকালে তার হাতে নগদ অর্থের পরিমাণ ছিল ৪ কোটি ৫ লাখ, স্ত্রীর হাতে নগদ ছিল ৬০ লাখ টাকা ও ছেলে ফারাহ ফয়সালের হাতে নগদ ছিল ৬০ লাখ টাকা।

এছাড়া বৈদেশিক মুদ্রা ছিল ৫ হাজার মার্কিন ডলার। ব্যাংকে জমা ছিল ২ লাখ ৬৫ হাজার ৪০৯ টাকা। যৌথ একাউন্টে ছিল ১৫ লাখ টাকা। বন্ড ও অন্যান্য খাতে ছিল তাঁর নামে ১৩ কোটি ১৯ লাখ ৯০ হাজার টাকা ও স্ত্রীর নামে ছিল ৩৯ লাখ ৪০ হাজার টাকা। দু’টি গাড়ি বাবদ ৪৩ লাখ ৬৮ হাজার ৪৬৪ টাকা।

তার নামে স্বর্ণ বাবদ ১০ হাজার টাকা ও স্ত্রীর নামে স্বর্ণালংকার ১০০ ভরি দেখানো হয়েছিল। এছাড়া তিনি ২ লাখ টাকা মূল্যের ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী ও ৫০ হাজার টাকা মূল্যের আসবাবপত্র ব্যবহার করে থাকেন।

মোস্তফা আমির ফয়সালের নামে কৃষি জমি ৪২.৫ বিঘা ও ১৪২ শতাংশ, স্ত্রীর নামে বসুন্ধরায় ৩ কাঠার একটি প্লট, যৌথ মালিকানায় নারায়ণগঞ্জে সাড়ে ৪ শতাংশ প্লট, স্ত্রীর নামে বারিধারায় ১টি ফ্ল্যাট যার মূল্য ২৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা। ফয়সালের নামে বনানীতে ২টি বাড়ি রয়েছে।

২০১৮ সালে হলফনামায় উল্লেখিত তার সম্পদের বিবরণঃ
২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিতব্য একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দাখিলকৃত মোস্তফা আমির ফয়সালের হলফনামায় কোনো মামলার কথা উল্লেখ ছিল না। যদিও ২০০৮ সালের হলফনামায় তার বিরুদ্ধে শ্রম আদালতে ১৭টি মামলা দায়েরের কথা উল্লেখ ছিল। ২০১৮ সালে তিনি ফরিদপুর গ্রুপ অব কোম্পানীজের এমডির পাশাপাশি সিএইচপিডি জেনারেল হাসপাতালের চেয়ারম্যান পদে রয়েছেন বলে উল্লেখ করেছেন।

কৃষিখাতে তার বর্তমান আয় ৩২ হাজার ২৭০ টাকা ও নির্ভরশীলদের আয় ১১ হাজার ৮০০ টাকা। ব্যবসা খাতে তার আয় ৫৮ লাখ ৭০ হাজার ৮৫০ টাকা ও স্ত্রীর আয় ১২ লাখ ৫ হাজার ৩২৪ টাকা। বাড়ি ও অন্যান্য ভাড়া বাবদ তাঁর উপর নির্ভরশীলদের আয় ৫ লাখ ৩০ হাজার টাকা।

মোস্তফা আমির ফয়সালের হাতে নগদ অর্থ ১১ কোটি ৫১ লাখ ৬৫ হাজার ৭৫৯ টাকা ও তাঁর স্ত্রীর হাতে নগদ অর্থ ৩ কোটি ৯২ লাখ ৫৮ হাজার ৩৫৬ টাকা। ব্যাংকে তার নামে ৫ লাখ ৪৫ হাজার ৭৮০ টাকা, স্ত্রীর নামে ৮২ লাখ ৩১ হাজার ১৪৪ টাকা, নির্ভরশীলদের নামে ৩ লাখ ৩৪ হাজার ৭২২ টাকা রয়েছে।

বন্ড ও অন্যান্য শেয়ার বাবদ তাঁর নামে ৯ কোটি ৪৮ লাখ ৮০ হাজার টাকা, স্ত্রীর নামে ৬০ লাখ ২০ হাজার টাকা, নির্ভরশীলদের নামে ৫৭ লাখ ৯০ হাজার টাকা রয়েছে।

পোস্টাল, অন্যান্য ও স্থায়ী আমানত বাবদ তাঁর নামে ২৮ লাখ ৯০ হাজার টাকা, স্ত্রীর নামে ১ কোটি ৩১ লাখ ১৫ হাজার ৬২৫ টাকা, নির্ভরশীলদের নামে ৩০ লাখ টাকা রয়েছে। তাঁর নামে ৪টি গাড়ি রয়েছে যার মূল্য ২ কোটি ৪৮ লাখ ৬৮ হাজার ৪৬৪ টাকা। তার নামে স্বর্ণ বাবদ ১০ হাজার টাকা ও স্ত্রীর নামে ১৪০ তোলা ও নির্ভরশীলদের নামে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা মূল্যের স্বর্ণ রয়েছে।

তিনি ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী ব্যবহার করেন ২ লাখ টাকা মূল্যের এবং তার স্ত্রী ব্যবহার করেন ১ লাখ টাকা মূল্যের। আসবাবপত্র তিনি ব্যবহার করেন ৫০ হাজার টাকা মূল্যের এবং তার স্ত্রী ব্যবহার করেন ১ লাখ টাকা মূল্যের।

তাঁর নামে কৃষি জমি রয়েছে ১ হাজার ২৯১ শতাংশ ও স্ত্রীর নামে ১২৬ শতাংশ। অকৃষি জমি রয়েছে ১২.৫ কাঠা ও স্ত্রীর নামে ২২.৫০ কাঠা। বনানীতে তার ২টি বহুতল ভবন রয়েছে যার একটি ৩ তলা ও অন্যটি ৫ তলা। তার স্ত্রীর নামে ১টি ফ্ল্যাট রয়েছে যার মূল্য ৬৯ লাখ টাকা এবং নির্ভরশীলদের নামে ২টি ফ্ল্যাট রয়েছে যার মূল্য ৮০ লাখ ৫০ হাজার টাকা।

যৌথভাবে ঋন রয়েছেন মধুমতি ব্যাংকে ৩ কোটি ৩০ লাখ ৬১ হাজার ৩৭৫ টাকা এবং জনতা ব্যাংকে ৩ কোটি ৪১ লাখ ৬৪ হাজার ৬৮৯ টাকা।


আরো সংবাদ



premium cement