২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

সাটুরিয়ায় বিধবা ফেরিওয়ালাদের মাছ বিক্রি

ফেরি করে মাছ বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করছেন বিধবারা। -

‘এ মাছ লাগবে, মা-আ-ছ।’ সাটুরিয়া উপজেলার পাড়া-মহল্লায় এই হাঁক শোনেননি এমন মানুষ পাওয়া দুষ্কর। আবার এই হাঁকাহাঁকি শুনে অনেকের ঘুম ভাঙে। কারণ, সাতসকালেই বাড়িতে-বাড়িতে মাছ নিয়ে ঘুরে বেড়ান মাছের ফেরিওয়ালারা। তাঁদেরই একজন ৪৫ বছর বয়সী সাগরী রাজবংশী। উপজেলার ছনকা গ্রামে কথা হলো তাঁর সঙ্গে।

তিনি জানান, কিশোরী বয়সে বিয়ে হয় রমেস রাজবংশী নামে এক যুবকের সাথে। বিয়ের দুই বছরের মাথায় স্বামী অন্যত্র বিয়ে করলে আর সংসার করা হয়নি তার। এর মধ্যে ভগবান পেটে লক্ষী নামে একটি কন্যা সন্তান দেয়। অভাবের সংসারে ঋণের টাকা পরিশোধ করতে বাড়ি-ভিটা বিক্রি করেছেন। অবশেষে গন্তব্য হিসেবে বেছে নিয়েছেন মাছ বিক্রি। প্রতিদিন ৪০০-৫০০ টাকা লাভ হয় সাগরী রাজবংশীর। তিনি দেশী মাছসহ রুই, কাতলা, কই ও বোয়াল মাছ বিক্রি করেন।

আরেক মাছ বিক্রেতা বিধবা মিলন রাজবংশী (৬৫) ব্যবসা শুরু করেছেন প্রায় ৩৫ বছর যাবত। প্রতিদিন কত লাভ হয়? এমন প্রশ্নে মিলন রাজবংশী বলেন, ‘শুধু কি লাভই হয়? মাঝে মইধ্যে লসও হয়।’ অনেকে মাছ কাটার জন্য মাছের পাশাপাশি বঁটিও রাখেন। ক্রেতা চাইলে ঝটপট মাছ কেটে দেন তাঁরা। বর্তমানে ছোট আকৃতির দেশী মাছ বিল থেকে ৩৬০-৩৮০ টাকা কেজি দরে কেনেন। বিক্রি করেন ৪৫০-৫০০ টাকায়।

সাভার এলাকায় চিংড়ি মাছ বিক্রি করছিলেন বুচি রাজবংশী (৫০) নামের আরেকজন বিধবা। একজন তাঁত শ্রমিকের স্ত্রী বারান্দা থেকে দরদাম ঠিক করছিলেন। তিনি জানান, ‘বাজারের তুলনায় কিছুটা কম মূল্যে পাওয়া যায়। তা ছাড়া বাজারে যাওয়ার ঝামেলাও বাঁচল।’ পছন্দ হয় না বলে অনেকেই মাছ কেনেন না। মাথায় মাছের ঝুড়ি নিয়ে পায়ে হেটে যাওয়ার কষ্টটা গায়ে লাগে তখন বুচি রাজবংশীদের মতো মাছের ফেরিওয়ালাদের।

উপজেলার বরাইদ ইউনিয়নের প্রতিটি গ্রামেই দেখা মেলে মাছের ফেরিওয়ালাদের। তাঁরা নগদ টাকায় মাছ কিনে নিয়ে আসেন প্রত্যন্ত বিভিন্ন বিলের পাড় থেকে। এসব মাছ সব সময় তাজা থাকে বলে বরফও দেয়া হয়না।

‘ফেরি করে মাছ বিক্রির জন্য দেশীয় নদীর মাছের চাহিদা অন্য মাছের তুলনায় একটু বেশি।’ বললেন পাতিলাপাড়া গ্রামের শ্রী দিবীজ রাজবংশী নামের এক মাছ ব্যবসায়ী। কোনো কোনো বিক্রেতার নির্দিষ্ট কিছু ক্রেতা আছে। বড় মাছ কিংবা ভালো মাছ পেলে বিক্রির জন্য সরাসরি হাজির হন তাঁদের বাসায়।

এভাবে ফেরি করে মাছ বিক্রি করতে দোকান ভাড়া কিংবা চাঁদা দিতে হয় না তাঁদের। কিন্তু বাড়ির মোড়ে কিংবা কারও বাসার সামনে একটু বসলেই বাড়িওয়ালারা তুলে দেন সেখান থেকে। তাই মাথায় মাছের ঝুড়ি তুলে নিয়ে আবার তাঁরা হাঁক ছাড়েন ‘এ মাছ লাগবে, মা-আ-ছ।’

এ বিষয়ে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ফাতেমা-তুজ-জোহুরা জানান, ফেরিওয়ালারা বয়স্ক এবং বিধবা হওয়ায় তাদেরকে বিকল্প কর্মসংস্থানের জন্য সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরে লিখিত ভাবে অবহিত করা হবে।


আরো সংবাদ



premium cement
জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তিভাব থাকবে বান্দরবানে বৃষ্টির চেয়ে চোখের পানি ফেলে বিশেষ নামাজ চকরিয়ায় যুবককে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা, গ্রেফতার ৭ উপজেলা নির্বাচনে ব্যর্থ হলে গণতন্ত্র ক্ষুণ্ন হবে: সিইসি বাগাতিপাড়ায় ইসতিসকার নামাজ পরিবর্তনশীল জলবায়ুর জন্য কাসাভা উপযুক্ত, হেক্টরপ্রতি ফলন ৩৫-৫০ টন : বাকৃবি অধ্যাপক বৃষ্টির জন্য হাকাকার, সাভারে ইসতিসকার নামাজ আদায় বরিশালে সালাতুল ইসতিসকার আদায় অর্ধ শতাব্দীতে ভ্যাকসিন সাড়ে ১৫ কোটি লোকের জীবন বাঁচিয়েছে : বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা আল্লাহর রহমত কামনায় সকলকে সিজদাহ অবনত হতে হবে-মাওলানা দেলোয়ার হোসাইন কাউখালীতে বৃষ্টির জন্য কাঁদলেন মুসল্লিরা

সকল