১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

পুলিশের বিরুদ্ধে পরকীয়ার অভিযোগ, জেল খাটছেন নিরীহ চার যু্বক

পরকীয়ার অভিযোগ করায় নিরীহ যুবকদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। - প্রতীকি ছবি

মাদারীপুরের ডাসারের এএসআই ইয়ার মাহমুদের বিরুদ্ধে পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ দেয়ায় চার যুবকের নামে ছাত্রী হয়রানির মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছে। এই মামলায় তাদেরকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। স্থানীয়দের দাবি এই চার যুবক নির্দোষ। দারোগায় বিরুদ্ধে অভিযোগ দেয়ার কারণেই ক্ষিপ্ত হয়ে মিথ্যা মামলা দিয়েছে।

স্থানীয় ও পুলিশ সুত্রে জানা গেছে, মাদারীপুরের ডাসার থানার এএসআই ইয়ার মাহমুদের সাথে ডাসার এলাকার এক প্রবাসীর স্ত্রীর পরকিয়া সম্পর্ক রয়েছে এমন অভিযোগ এনে এলাকার কয়েক যুবক মাদারীপুর পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ দেয়। এই অভিযোগের সত্যতা পেয়ে পুলিশ সুপার সেই এএসআই ইয়ার মাহমুদকে ডাসার থানা থেকে প্রত্যাহার করার নির্দেশ দেয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ইয়ার মাহমুদের প্ররোচনায় দক্ষিণ ডাসারের প্রবাসী দেলোয়ার হোসেনের মেয়ে জুথী আক্তারকে দিয়ে থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে শুক্রবার গ্রেফতার করা হয় চার যুবককে। স্থানীয়রা জানান এই চার যুবক নির্দোষ।

স্থানীয় বাসিন্দা তানভীর মাহমুদ বলেন, এলাকায় ওই দিন ছাত্রী হয়রানীর কোন ঘটনা ঘটেনি। যুথীর মায়ের সাথে এএসআই ইয়ার মাহমুদের পরকিয়া সম্পর্ক রয়েছে। এটা এলাকার অনেকেই জানে। পরকিয়ার বিষয় নিয়ে পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিলে ক্ষিপ্ত হয় ইয়ার মাহমুদ এবং যুথীর মা। একারনেই যুথীকে দিয়ে থানায় অভিযোগ দেয়ায়। এই অভিযোগের ভিত্তিতেই এলাকার চার নিরীহ যুবককে গ্রেফতার করে পুলিশ। বিনা অপরাধে এখন তারা জেল খাটছে।

স্থানীয় বাসিন্দা মফেজ মেম্বার বলেন, দারাগোর পরকিয়া সম্পর্ক নিয়ে এলাকায় অনেক কানা ঘুষা হয়েছে। আমার স্থানীয়রা অনেক নিষেধ করেছি। পরে কয়েক যুবক এসপির কাছে অভিযোগ দিয়েছে এতে ক্ষিপ্ত হয়ে দারোগা আর ওই প্রবাসীর বউ দুজনে মিলে মিথ্যা মামলা দিয়েছে।

স্থানীয় আরেক বাসিন্দা সৈয়দ রফিকুল ইসলাম বলেন, মামলায় ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করনের যে ঘটনা বলেছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। মামলায় যেই স্থানে ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করছে বলে উল্লেখ করেছে সেখানে সিসি ক্যামেরা রয়েছে। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পরীক্ষা করা হলে প্রকৃত সত্য জানা যাবে।

এছাড়াও মামলায় গত ২৩ সেপ্টেম্বর উত্ত্যক্ত করেছে বলে উল্লেখ করেছে। অথচ থানায় মামলা দিয়েছে চলতি মাসের ২৬ তারিখে। ঘটনার প্রায় এক মাস পরে মামলা দিয়েছে। এটাও রহস্যজনক। এভাবে নিরীহ মানুষকে হয়রানি করায় আমরা আতঙ্কের মাঝে আছি। আমরা চাই এর সুস্থ তদন্ত হোক। আর কেউ যেন হয়রানীর শিকার না হয়।

ডাসার থানার এএসআই ইয়ার মাহমুদ বলেন, যুথীর বাবা বিদেশ থাকে এই কারণে তাদের কোন অভিভাবক নেই। সে কারনে শুধু আমার সাথে নয় আরো অনেক পুলিশের সাথেই যুথীর মায়ের ভালো সম্পর্ক ভালো আছে। সম্পর্ক মানেই তো আর পরকিয়া সম্পর্ক নয়। তার সাথে কোন অবৈধ সম্পর্ক নেই আমার। এমনিতেই তাদের বাড়িতে যাওয়া আসা করতাম। মামলার ব্যপারে তিনি বলেন, যুথীকে উত্ত্যক্ত করেছে তাই সে মামলা করেছে। মামলার কারণে গ্রেফতার করা হয়েছে।

ডাসার থানার ওসি নাসির উদ্দিন বলেন, সেই এএসআই ইয়ার মাহমুদকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। উপরের চাপের কারণে মামলা নেয়া হয়েছে দাবী করে বিস্তারিত কথা বলতে রাজি হয়নি ওসি।

মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বদরুল আলম মোল্লা বলেন, হয়রানিমূলক মামলার বিষয়টি আমার জানা নেই। জেনে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 


আরো সংবাদ



premium cement