২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

ফরিদপুরে সমাজপতির বেড়ায় গৃহবন্দী একটি পরিবার

-

ফরিদপুর সদর উপজেলার অম্বিকাপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কোলপাড় দিরাজউল্লা মাতুব্বরের ডাঙ্গি গ্রামে সমাজপতিদের বেড়ায় গৃহবন্দী হয়ে রয়েছে একটি পরিবার। একইসাথে সীমানা মাপঝোক করে দীর্ঘদিনের পুরনো প্রতিষ্ঠিত মসজিদকে ঠেলে দেয়া হয়েছে গভীর খাদে। আর উপজেলা পরিষদের টাকায় নির্মিত ওজুখানা ও বাথরুম দখলে নেয়া হয়েছে।

জানা গেছে, স্বাধীনতারও আগে নির্মিত কোলপাড় থেকে খলিল মন্ডলের হাট সড়কের উপড়ে গত ২ সেপ্টেম্বর এ বেড়া এবং মসজিদের সীমানা সরিয়ে ওজুখানা ও বাথরুম দখল করা হয়। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ গ্রামবাসী গত ২১ সেপ্টেম্বর বড় কোলপাড় জামে মসজিদের সামনে একটি মানববন্ধন করে।

ওই গ্রামের রুস্তম মল্লিকের স্ত্রী জোসনা বেগম জানান, হাসমত মাষ্টার ও তার ভাতিজা ওয়াহেদ মল্লিক আমাদের বাড়ি থেকে বের হওয়ার একমাত্র রাস্তা বাশের বেড়া দিয়ে আটকে রেখেছে। আমরা এখন হাটবাজার ও মসজিদে যাতায়াত করতে পারছি না। গ্রামবাসী ওই বেড়া অপসারণ করতে গেলে ব্যর্থ হয়।

জোসনা বেগম বলেন, এ অবস্থায় ইউপি চেয়ারম্যান মো: আবু সাঈদ চৌধুরীর নিকট একটি অভিযোগ দিই। তিনি ওয়ার্ড মেম্বার রফিক বিশ্বাসকে বিষয়টি সুরাহার দায়িত্ব দিয়েছিলেন। পরে চেয়ারম্যান নিজে এসেও বেড়া অপসারন করতে পারেননি। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা সামচুল আলম চৌধুরীর নাম ভাঙিয়ে তারা একাজ করছে বলে জোসনা বেগম অভিযোগ করেন।

এ ব্যাপারে বড় কোলপাড় জামে মসজিদের প্রতিষ্ঠাতা ও সাধারণ সম্পাদক মো: আজিজুল ইসলাম বলেন, ২০০৬ সালে এলাকার মোজাম মল্লিকের কাছ থেকে সাড়ে ৩ শতক জমি ক্রয় করে মসজিদের নামে রেজিস্ট্রি দলিলের মাধ্যমে ওয়াক্ফ করা হয়। সে সময়ে হাসমত মাষ্টারও ছিলেন জমি মাপের সময়। এরপর গত ২০১৫ সালে সদর উপজেলা পরিষদের অনুদানে মসজিদের বাথরুম ও নলকূপ স্থাপন করার সময়েও তিনি ঠিকাদারকে সেগুলো স্থাপনের জায়গা দেখিয়ে দেন। এখন তিনি সীমানা পরিমাপ করে মসজিদের মেহরাব ও উপজেলা পরিষদ নির্মিত বাথরুম তার ভাতিজা দুলাল মল্লিকের দখলে দিয়েছেন। আর দীর্ঘদিনের পুরনো সড়কে বেড়া দিয়ে আটকে দিয়েছেন।

এ ব্যাপারে হাসমত মাস্টারের সাথে কথা হলে তিনি জানান, আমি পথে বেড়া দিয়েছি ঠিকই তবে সেটি আমার জমিতেই। মসজিদের জায়গাও বুঝিয়ে দিয়েছি। তবে সেখানে কোনো বাথরুম ছিলো না বলে তিনি দাবি করেন।

এ ব্যাপারে কোতয়ালী থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সামচুল আলম চৌধুরী বলেন, ‘হাসমত মাষ্টার কেন আমার নাম ভাঙাবে? সে তো আমার আত্মীয় নন। তবে বেড়া দেয়ার বিষয়টি আমার জানা নেই।’

অম্বিকাপুর ইউপি চেয়ারম্যান আবু সাইদ চৌধুরী বারী সড়কের উপর বেড়া দেয়ার এবং বাথরুম ও ওজুখানা দখলে নেয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, বিষয়টি জানতে পেরে সরেজমিনে গিয়ে হাসমত মাস্টারকে অনুরোধ করেছি বিষয়টি সমাধানের জন্য। তবে তিনি সে অনুরোধ রাখেননি।

এদিকে, এ ব্যাপারে এলজিআরডি মন্ত্রী ও স্থানীয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন এলাকাবাসী।


আরো সংবাদ



premium cement