২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

দুর্গাপূজা উপলক্ষে ব্যস্ত মানিকগঞ্জের ঢাক-ঢোল কারিগররা

দুর্গাপূজা উপলক্ষে ব্যস্ত মানিকগঞ্জের ঢাক-ঢোল কারিগররা -

হিন্দুধর্মালম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজার আর মাত্র মাসখানেক সময় বাকি। ঢাক-ঢোলের আওয়াজে জমে উঠবে পূজামন্ডপগুলো। এ পূজাকে সামনে রেখেই এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার বাদ্যযন্ত্র কারিগররা।

স্থানীয় সমাজসেবা অধিদফতর সূত্র জানায়, মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার বালিাখোড়া গ্রামে ও বানিয়াজুরী ইউনিয়নের ঋষিপাড়ার প্রায় শতাধিক পরিবার ঢাক, ঢোল, তবলা, ডুগি, খঞ্জনি ও একতারাসহ আরো অনেক প্রকার বাদ্যযন্ত্র তৈরির কাজে নিয়োজিত আছেন। এখানকার বাদ্যযন্ত্র বিশেষ করে ঢোল দেশের চাহিদা মিটিয়ে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত, নেপালসহ আরো কয়েকটি রাষ্ট্রে পাঠানো হয়।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কারিগররা ঢোল তৈরিতে দেশীয় আম, জাম, রেইনট্রি, কোড়ই, মেহগুনি কাঠসহ ছাউনির জন্য ছাগলের চামড়া এবং বেড়ী দেয়ার জন্য মহিষের চামড়া ব্যবহার করছেন। প্রতিটি বাড়ির উঠানেই কারিগরা বাদ্যযন্ত্র তৈরি করছেন। কাঠের খুটখাট শব্দে যেন মুখর গ্রামটি। ঢাক-ঢোলের জন্য কাঠ কাটা, খোল তৈরি করা, রং দেয়া এবং চামড়া লাগাতে ব্যস্ত দেখা গেল বেশির ভাগ কারিগরদের। কারিগরদের বউ-ছেলে-মেয়েরাও সহযোগিতা করছেন এ কাজে।

চামড়ার দাম স্বাভাবিক থাকলেও মজুর সংকট, চামড়া পত্রিয়াজাতকরণ সমস্যা ও পরিবহন ভাড়া বৃদ্ধির কারণে অর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। এছাড়াও এ পেশায় নিয়োজিতরা সামাজিকভাবে নানা বৈষম্যেও শিকার হওয়ায় অনেকেই এ কাজ ছেড়ে দিচ্ছে। এমনকি এ পেশায় নিয়োজ ব্যক্তিরা তাদেও ভবিষৎ প্রজন্মকে এ কাজের সাথে সম্পৃক্ত করতে অনেকটাই অনিহা প্রকাশ করেছেন।

ঘিওরের বানিয়াজুরীর এলাকার চিত্যরঞ্জন দাস বলেন, ‘আমি ২০ বছর ধরে এ কাজ করছি। আগে একটি ঢোল আকারভেদে বিক্রয় হতো ৫ থেকে ১৫ হাজার টাকা। আর বর্তমানে এ ঢোল বিক্রয় হচ্ছে অর্ধেক দামে। গান বাজনা, যাত্রানুষ্ঠানসহ বিভিন্ন আচার অনুষ্ঠান কম হওয়ায় ঢোলের চাহিদাও কমে যাচ্ছে দিনদিন। তাই সংসারের খরচ মেটানো কঠিন হয়ে পড়েছে। এ কাজের আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছি।’

পূজাকে সামনে রেখে চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় তারা ঢাক-ঢোল তৈরি করছেন বেশি।

বালিয়াখোড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আ: আওয়াল খান বলেন, ‘অর্থের অভাবে দেশীয় বাদ্যযন্ত্র এখন বিলুপ্তির পথে। এ সম্প্রদায়কে বাঁচিয়ে রাখতে সরকারের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।’


আরো সংবাদ



premium cement