২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

টুং টাং শব্দে মুখর কামার পল্লী

টুং টাং শব্দে মুখর কামার পল্লী। ছবি - নয়া দিগন্ত।

মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদ-উল-আযহা। সামর্থবান মুসলমানগণ তাদের সামর্থ অনুসারে মহান আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্ঠি অর্জনের জন্য পশু কুরবানী দিয়ে থাকেন। আসন্ন পবিত্র ঈদ-উল-আযহাকে সামনে রেখে পশু কুরবানী এবং কুরবানীকৃত পশুর গোশত কাটার সারঞ্জামাদি তৈরী নিয়ে ব্যাস্ত সময় ব্যয় করছেন নরসিংদীর মনোহরদী উপজেলার প্রায় দুই শতাধিক কামার।

কামার পাড়ায় হাতুড়ি লোহার টুং টাং শব্দ বলে দেয় কামারদের ব্যাস্ততার সংবাদ। দিন রাত সমান তালে পরিশ্রম করে হাসুয়া, ছুরি, চাপাচি, দা, বটি, ভূজলী, কুড়াল তৈরী করা ছাড়াও পুরাতন সারঞ্জামাদী শান দিচ্ছে। ঈদ যত ঘনিয়ে আসছে ততই বৃদ্ধি পাচ্ছে তাদের ব্যস্ততা। কামারদের সাথে কথা বলে জানা যায়, সাড়া বছর কাজের ব্যাস্ততা তেমন না থাকলেও কুরবানীর ঈদ এলেই দোকানে কাজের ব্যাস্ততার পাশাপাশি ক্রেতাদের ভীড়ও বেড়ে যায় বহু গুণ।

মনোহরদী বাসস্ট্যান্ডের কর্মকার রবিন্দ্র মন্ডল জানান, তার দোকানে ছোট বড় ছুরি থেকে শুরু করে চাপাতি শান দেওয়ার জন্য পঞ্চাশ টাকা থেকে শুরু করে কাজের গুণগত মান অনুসারে এক’শ টাকা পর্যন্ত নেওয়া হয়। দা বানানো হয় ছয়’শ টাকা থেকে শুরু করে সাত’শ টাকা পর্যন্ত। ভালো লোহা বা ইস্পাতের মান অনুসারে ছুরি বানোর জন্য নেওয়া হয় ছয়’শ থেকে শুরু করে হাজার টাকা পর্যন্ত। ছোট চাকু বানানো হয় এক’শ থেকে দেড়’শ টাকার মধ্যে। চাপাতি এবং বটি তৈরীর জন্য নেওয়া হয় পাঁচ’শ টাকা থেকে এক হাজার টাকা।

মনোহরদী বাজারের সবচেয়ে প্রবীণ কর্মকার বিপুল চন্দ্র রায় জানান, অন্য সময় দিনে তিন চার’শ টাকার কাজ করতে পারলেও ঈদ এলেই দিনে হাজার টাকার উপরের কাজ করা যায়। তবে পরিশ্রম অনুযায়ী আগের মতো পারিশ্রমিক এখন পাওয়া যায়না বলেও তিনি জানান। তিনি আরো জানান বর্তমান সময়ে বিভিন্ন কম্পানির তৈরী স্টিল জাতীয় জিনিসের ভীড়ে আমাদের লোহার তৈরী জিনিসের দাম কমে যাচ্ছে। পূর্ব পুরুষদের কাছ থেকে এ কাজ শিখে কাজ করে জীবন পার করে দিয়েছি। অন্য পেশায় নিজেকে আর জড়ানো সম্ভব না বলে এখনো এ কাজ করে যাচ্ছি।

সজিব চন্দ্র রায় বলেন, এমনিতে সাড়া বছর আমি রাজ মিস্ত্রির কাজ করে থাকি। ঈদে কাজ বেশি থাকায় চাচার সাথে কাজে সহযোগীতা করছি।

এ সময় দোকানে দা, বটি শান দিতে আসা আব্দুল হেকিম বলেন, কামারদের কাজের নির্দিষ্ট কোন মূল্য তালিকা না থাকার কারণে তারা নিজেদের ইচ্ছে মতো দাম নিচ্ছে।

হাতিরদিয়া বাজারের নিতাই কর্মকার জানান, অন্যান্য পেশার মতো আমাদের কোন সংগঠন না থাকায় আমরাও বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা হতে বঞ্ছিত হচ্ছি।


আরো সংবাদ



premium cement