২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

ঢাকা থেকে অপহৃত শিশু মাদারীপুর থেকে উদ্ধার

-

অপহরণকারী নারীর স্বীকারোক্তিমতে ঢাকা থেকে অপহরণের তিন দিন পর মাদারীপুরের শিবচর থেকে এক শিশু উদ্ধার করেছে পুলিশ। আটককৃতের স্বীকারোক্তিতে জানা যায়, অপহরণের পর শিশুটিকে ৩০ হাজার টাকায় এক নিঃসন্তান দম্পতির কাছে বিক্রি করা হয়েছিল।

পুুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ঢাকার মোহাম্মদপুর এলাকায় ভাঙ্গারী দোকানের কর্মচারী বিল্লাল হোসেন ও তার স্ত্রী গার্মেন্টস শ্রমিক মাহিনুর তিন বছরের শিশু সন্তান নিহানকে নিয়ে একটি বাসায় ভাড়া থাকতেন। তাদের পাশের রুমেই খাইরুন বেগম (৪০) নামের এক মহিলা ভাড়া থাকার সুবাদে তাদের বাসায় ছিল অবাধ যাতায়াত। দুই পরিবারের মাঝে তৈরি হয় সুসম্পর্ক।

খাইরুন গত শনিবার সকালে শিশু নিহানকে বাসায় রেখে বিল্লাল ও তার স্ত্রী মাহিনুর কাজে চলে যায়। দুপুরে বাসায় ফিরে নিহানকে বাসায় না দেখে মাহিনুর ও বিল্লাল ভয় পেয়ে যায়। অনেক খোঁজাখুঁজির পর না পেয়ে রোববার পাশের বাসার খাইরুনকে আসামি করে মোহাম্মদপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।

পুলিশ মোবাইল ট্রাকিংয়ের মাধ্যমে রোববার ঢাকা থেকে খাইরুনকে আটক করে। পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে খাইরুন জানায় শিশু নিহানকে মাদরীপুরের শিবচরে তার এক ফুপাতো নিঃসন্তান বোন লাকি বেগমের কাছে ৩০ হাজার টাকার বিনিময়ে বিক্রি করেছেন।

তিনি পুলিশকে আরো জানান, শনিবার মুন্সিগঞ্জের মাওয়া থেকে লাকি ও তার বোন সাথি টাকা দিয়ে শিশু নিহানকে নিয়ে গেছে।

রোববার সকালে পুলিশ শিবচরের উমেদপুর ইউনিয়নের চান্দেরচরের একটি প্রত্যন্ত এলাকায় লাখির বাড়িতে অভিযান চালিয়ে শিশু নিহানকে উদ্ধার করে। এ সময় লাখি ও তার পরিবারের লোকজন পালিয়ে যায়। রোববার বেলা ১২টার দিকে এসআই মুকুল রঞ্জনের নেতৃত্বে মোহাম্মদপুর থানা পুলিশের একটি দল শিশুটিকে নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়।

শিশুটির মা মাহিনুর বেগম বলেন, ‘খায়রুন আমার পাশের বাসায় থাকার সুযোগে আমার সন্তানকে অনেক যতœ ও খেয়াল রাখতো। এভাবেই সে আন্তরিকতা বাড়িয়ে আমার সন্তানকে অপহরণ করে বিক্রি করে তার এক নিঃসন্তান বোনের কাছে বিক্রি করে দিয়েছিল। পুলিশ সচেষ্ট হয়ে আমার বাচ্চাকে শিবচর থেকে উদ্ধার করে দিয়েছে। আমার ধারণা খাইরুনসহ একটি চক্র এ ঘটনা ঘটিয়েছে।’

অভিযানে সম্পৃক্ত এক পুলিশ সদস্য বলেন, শিশুটির মা-বাবা কাজে গেলে খাইরুন আরেক ব্যক্তিকে নিয়ে শিশু মাহিনকে মাওয়া ঘাটে নিঃসন্তান লাখি ও তার বোন সাথির কাছে ৩০ হাজার টাকায় বিক্রি করে। আমরা রোববার রাতে ঢাকা থেকে খাইরুনকে নিয়ে রওনা দিয়ে শিবচরে এসে অভিযান চালাই। অভিযানকালে খাইরুন নানাভাবে বিভ্রান্ত করলেও স্থানীয়দের সহায়তায় আমরা শিশুটিকে উদ্ধার করে তার মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিতে সক্ষম হয়েছি।

মোহাম্মদপুর থানার এসআই মুকুল রঞ্জন বলেন, শিশুটিকে টাকার বিনিময়ে বিক্রি করেছিল খাইরুন। শিশুটিকে শিবচর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। এ ব্যাপারে মামলা হয়েছে। বিস্তারিত ঢাকায় গিয়ে জানানো হবে।


আরো সংবাদ



premium cement