টাঙ্গাইলে নেশার টাকার জন্য খুন করা হয় নিকাহ রেজিস্ট্রার শামসুল হককে
- মালেক আদনান, টাঙ্গাইল
- ১১ জুন ২০১৮, ২০:৩১
টাঙ্গাইলের নিকাহ রেজিস্ট্রার (কাজী) শামসুল হককে হত্যার এক সপ্তাহের মধ্যে এর রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। দুই মাদকাসক্ত যুবক নেশার টাকার জন্যই কাজী শামসুল হককে নির্মমভাবে হত্যা করে। এই ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া দুই যুবক শহরের কাগমারা এলাকার জয়নাল আবেদীনের ছেলে অমিত ওরফে সাব্বির হোসেন (১৯) এবং পশ্চিম আকুর টাকুর পাড়ার জয়নাল আকন্দের ছেলে আলহাজ আকন্দ (১৯) টাঙ্গাইল জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। গতকাল সোমবার দুপুরে টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায় এই হত্যাকা-ের রহস্য উদঘাটনের বিষয় নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন। গত ১ জুন সকালে শহরের দক্ষিণ কাগমারা এলাকার একটি ধানক্ষেত থেকে শামসুল হকের লাশ উদ্ধার করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার জানান, ঘটনার দিন ইয়াবা সেবনের জন্য সাব্বির হোসেন ও আলহাজ আকন্দ যোগসাজসে কাজী শামছুল আলমকে কাগমারা এলাকায় একটি নিকাহ রেজিস্ট্রি করার প্রলোভন দেখিয়ে অন্ধকার রাস্তায় নিয়ে যায়। প্রথমে তারা শামছুল আলমকে ধাক্কা মেরে মাটিতে ফেলে দেয় এবং অমিত গলায় পেচানো হাজী রুমাল দিয়ে শ্বাসরোধের চেষ্টা করে। অপর আসামী আলহাজ গলায় ডান পাশে কেচি দিয়ে এবং মাথায় রড দিয়ে আঘাত করে রক্তাক্ত জখম করে ঘটনাস্থলে ফেলে রেখে যায়। তার মোবাইল ফোনও ছিনতাই করে নেয়। পরে তারা শহরের কলেজ পাড়ার এক ব্যক্তির কাছে ছিনতাইকৃত মোবাইল ফোনটি বন্ধক রেখে সাত পিস ইয়াবা ক্রয় করে এবং সেখানে তিন পিস ইয়াবা সেবন করে। আর চার পিস ইয়াবা সেবনের জন্য বাসায় নিয়ে যায়। পরবর্তীতে তারা সেহেরী শেষে ভোরে ঘটনাস্থল যেয়ে লাশ দেখে মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে তাদের নিজেদের ব্যবহৃত ফোনগুলো বন্ধ করে আত্মগোপনে চলে যায়।
পুলিশ সুপার বলেন, এ হত্যাকা-ের পর পুলিশ সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে মামলার তদন্ত সহায়ক কমিটি গঠন করে। পরে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে গত ৫ জুন ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে শহরের আকুর টাকুর পাড়া থেকে সাব্বির হোসেন ও আলহাজ আকন্দকে গ্রেফতার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে আলহাজ আকন্দ জানায়Ñ কাজী শামছুল আলম তার পূর্বপরিচিত। কাজীর নিকট থেকে মাদক সেবনের জন্য ৫০০ টাকা চেয়ে না পাওয়ার জের ধরে আক্রোশমূলকভাবে তাকে হত্যার পরিকল্পনা করে এবং তারা পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজী শামছুল আলমকে হত্যা করে। গ্রেফতারকৃত দুই যুবক গত ৬ জুন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।
উল্লেখ্য, শহরের পূর্ব আদালতপাড়ার অধিবাসী কাজী শামসুল হকের লাশ গত ১ জুন সকালে শহরের দক্ষিণ কাগমারা এলাকার একটি ধানক্ষেত থেকে উদ্ধার করা হয়। আগের রাতে তিনি একটি ফোন পেয়ে বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর থেকেই নিখোঁজ ছিলেন। লাশ উদ্ধারের পর শামসুল হকের মেয়ে বাদি হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামী করে টাঙ্গাইল মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা