নিজস্ব প্রতিবেদক
১৭ ডিসেম্বর ২০১৭,রবিবার, ২০:৩৫ | আপডেট: ১৭ ডিসেম্বর ২০১৭,রবিবার, ২০:৪৫
বেসিক ব্যাংকের ঋণ কেলেঙ্কারির ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদে থাকা ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল হাই বাচ্চু অসুস্থতার কারণে আজ রোববার দুদকে হাজির হতে পারেননি। তিনি এক মাসের সময় চেয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কাছে চিঠি দিয়েছেন।
দুদকের উপপরিচালক জনসংযোগ প্রণব কুমার ভট্টাচার্য জানান, আজ রোববার তাকে তৃতীয় দিনের মতো জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দিন পূর্বনির্ধারিত থাকলেও অসুস্থজনিত কারণ দেখিয়ে সময় চেয়ে দুদকে লিখিত আবেদন পাঠিয়েছেন।
তিনি বলেন, আবদুল হাই বাচ্চু আবেদনে শারীরিক অসুস্থতার কারণ দেখিয়েছেন। রাজধানীর একটি হাসপাতালে ভর্তি আছেন বলে চিঠিতে উল্লেখ করেছেন। তবে তার ওই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে কমিশন থেকে কোনো সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি।
এর আগে গত ৪ ডিসেম্বর বেসিক ব্যাংকের সাবেকর চেয়ারম্যান আব্দুল হাই বাচ্চুকে দুদক প্রথম জিজ্ঞাসাবাদ করে। ওইদিন সাংবাদিকদের কাছে নিজেকে তিনি দোষী মনে করেন না বলে দাবি করেন। এরপর গত ৬ ডিসেম্বর দ্বিতীয়বারের মতো তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন দুদকের তদন্ত কর্মকর্তারা।
বেসিক ব্যাংকের দুর্নীতি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের কয়েক দফা পর্যবেক্ষণ আসার পর সম্প্রতি ব্যাংকটির সাবেক চেয়ারম্যান বাচ্চুকে জিজ্ঞাসাবাদের উদ্যোগ নেয় দুদক। বাচ্চুর আগে ব্যাংকের সাবেক ১০ পরিচালককেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
বেসিক ব্যাংক কেলেঙ্কারির ঘটনায় দুদকের দায়ের করা ৫৬টি মামলার বিষয়ে আব্দুল হাই বাচ্চুকে কমিশনের পরিচালক এ কে এম জায়েদ হোসেন খান ও সৈয়দ ইকবালের নেতৃত্বে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। দুই দিনে ৫৬টি মামলার মধ্যে ১৫টি মামলার বিভিন্ন বিষয়ে তদন্ত কর্মকর্তারা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। বাকি মামলাগুলোর বিষয়ে বাচ্চুকে জিজ্ঞাসাবাদ করার কথা রয়েছে।
রাষ্ট্রায়াত্ত বেসিক ব্যাংকের প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকার ঋণ কেলেঙ্কারির ঘটনায় ২০১৫ সালের ২১, ২২ ও ২৩ সেপ্টেম্বর তিন দিনে ৫৬টি মামলা করেন দুদকের অনুসন্ধান দলের সদস্যরা। রাজধানীর মতিঝিল, পল্টন ও গুলশান থানায় এসব মামলায় মোট আসামি করা হয় ১৫৬ জনকে।
মামলায় আসামিদের মধ্যে বেসিক ব্যাংকের কর্মকর্তা রয়েছেন ২৬ জন। বাকি ১৩০ জন আসামি ঋণগ্রহীতা ৫৪ প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী ও সার্ভে প্রতিষ্ঠান। ব্যাংকার ও ঋণগ্রহীতাদের অনেকেই একাধিক মামলায় আসামি হয়েছেন। এর মধ্যে ব্যাংকের সাবেক এমডি কাজী ফখরুল ইসলামকে আসামি করা হয়েছে ৪৮টি মামলায়। সম্প্রতি গ্রেফতার হওয়া ডিএমডি ফজলুস সোবহান ৪৭টি, কনক কুমার পুরকায়স্থ ২৩টি, মো. সেলিম আটটি, বরখাস্ত হওয়া ডিএমডি এ মোনায়েম খান ৩৫টি মামলার আসামি। তবে কোনো মামলায় ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল হাই বাচ্চুসহ পরিচালনা পর্ষদের কাউকে আসামি করা হয়নি।